পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা।প্রতিকার: একটি ... বিশদ
পুলিস ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রের খবর, ১৬টির মধ্যে ১০টি কুকুরছানার মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন ময়নাতদন্তকারীরা। পাঁজরেও ব্যাপক মারধর করার চিহ্ন রয়েছে। বাকি ছ’টি কুকুরছানার যকৃৎ, পাকস্থলী সহ একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গে মারাত্মক আঘাত রয়েছে। আঘাতের প্রকৃতি থেকে মনে হয়েছে, কোনও কিছু দিয়ে সম্ভবত পিটিয়ে মারা হয়েছে তাদের। পুতুল রায় নামে এনআরএস-এর কর্মী আবাসনের এক পশুপ্রেমীর অভিযোগের ভিত্তিতে এই ঘটনায় প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলটি টু অ্যানিম্যাল অ্যাক্ট-এর ৪২৯ এবং ২০১ নং ধারায় (পশুহত্যা এবং প্রমাণ লোপাট) মামলা শুরু করেছে পুলিস। এনআরএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনার কথা পুলিসকে লিখিতভাবে জানিয়েছে। কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠি বলেন, কুকুর-কাণ্ডের ভিডিওটি যিনি আপডেট করেছেন, তাঁর খোঁজ চলছে। সাইবার ক্রাইম শাখাকে দেখতে বলা হয়েছে। নার্সিং হস্টেলের কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এদিন সকাল থেকে হাসপাতাল ও এন্টালি থানায় দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় পশুপ্রেমীদের সংগঠন।
আদালত সূত্রের খবর, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই এন্টালি থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিস অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির নামে এফআইআর করে তদন্তে নেমেছে। ওই এফআইআর-এর নথি ইতিমধ্যেই শিয়ালদহের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম) আদালতে জমা পড়েছে। বিচারকের স্বাক্ষর ও সিলমোহরও পড়েছে। সূত্রের খবর, এই মামলায় বেশ কয়েকটি জামিন অযোগ্য ধারা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, ঘটনার পর পুলিস এনআরএস হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজের নমুনা সংগ্রহ করেছে। তা আদালতের অনুমতি নিয়ে ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। অর্থাৎ পুলিস আঁটঘাট বেঁধেই অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে খবর।
সূত্রের খবর, কুকুরছানাগুলিকে যেদিন মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, সেদিন বাইরের দুই মহিলা এসে সেগুলি ফেলে দিয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হলেও এই ঘটনায় হাসপাতাল-যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। হাসপাতালের তৃতীয় বর্ষের এক নার্সিং ছাত্রী তাদের হস্টেলের পিছন দিকে লাঠি দিয়ে বেদম পিটিয়ে একটি কুকুরছানাকে মেরে ফেলছে—এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় এই আশঙ্কা দানা বেঁধেছে। কুকুরকাণ্ডের তদন্তে এদিনই এনআরএস উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন এই হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঃ দ্বৈপায়ন বিশ্বাস, সহকারী সুপার সৌম্য ভট্টাচার্য এবং সিকিউরিটি সুপারভাইজার বি কে মল্লিক। কমিটির সদস্যরা ভিডিওতে বর্ণিত জায়গা ঘুরে আসার পর নার্সিং যোগের আশঙ্কা আরও জোরালো হয়েছে। তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানান, ভিডিওতে নার্সিং হস্টেলের যে জায়গায় একটি কুকুরছানাকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে, বাস্তবে হাসপাতালে এমন ঘটনাস্থল আছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মারধর করার সেই জায়গায় বালিচাপা দেওয়ার চিহ্ন পেয়েছি। এদিন কমিটির সদস্যরা ওই নার্সিং ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। যদিও তিনি সমস্ত কিছু অস্বীকার করেছেন বলে খবর।
এদিকে, এই ঘটনায় এনআরএস-এর নার্সিং শাখার যোগ মেলার খবর আসতে না আসতেই তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করে এসইউসিপন্থী নার্সিং সংগঠন নার্সেস ইউনিটি। সংগঠনের শীর্ষ কর্ত্রী পার্বতী পাল বলেন, গত ক’মাস ধরে ওই হস্টেলের বেশ কয়েকজন নার্সিং কর্মীকে কুকুর কামড়েছে। কুকুরের তাড়ায় পড়ে গিয়ে এক নার্স জখম হয়েছেন। তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। বরং তদন্তের নামে নার্সিং ছাত্রীদের ঘরে বিনা অনুমতিতে ঢুকে পড়ছে পুলিস। জিজ্ঞাসাবাদও করছে তাদের।