পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা।প্রতিকার: একটি ... বিশদ
মৃতের স্ত্রী কাজল দিওয়ার বলে, বাড়িতে স্বামী ছাড়াও ছেলেমেয়ে আর আমি ছিলাম। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ কলিং বেলের আওয়াজ শুনে ছেলে নীচে দরজা খুলতে যায়। তার কিছুক্ষণের মধ্যে আট-ন’জন মুখ ঢাকা অবস্থায় ঘরের ভিতরে ঢোকে। চিৎকার করলে খুন করে দেব হুমকি দিয়ে আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে রাখে। পাশে আমার মেয়েকে বসিয়ে রাখে। এরপর ঘরের মধ্যেই ওকে গুলি করে ওরা পালায়। রামুয়ার ছেলে সমীর দিওয়ার বলেন, ফ্ল্যাটে দু’টি গেট রয়েছে। আমিই গেট খুলে দিই। তাঁর দাবি, ১১ জন বাইকে করে এসেছিল। দু’জন আমার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে রেখে বাকিরা উপরে চলে যায়। আমি উপরে যেতেই দেখি ওরা বাবাকে শেষ করে দিয়ে নীচে নেমে আসছে। চিৎকার করলে সকলকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রামুয়ার বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশে। তার অপরাধের মূল কর্মকাণ্ড ছিল হাওড়ায়। তার বিরুদ্ধে তোলাবাজি, অপহরণ, খুন, মাদক পাচার সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। নয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় শিবপুরে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে খুন করে তার মুণ্ড কেটে ফুটবল খেলার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে রয়েছে। এককথায় সে হাওড়ার ত্রাস ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোদপুরে অরবিন্দ সরণীর আবাসনে তিনতলায় একটি ফ্ল্যাট রামুয়ার স্ত্রী কাজল দিওয়ার ভাড়া নেয়। গত ১২ জুন মালিকের সঙ্গে ১১ মাসের চুক্তিপত্র করে ঘর ভাড়া নিয়েছিল। ফ্ল্যাট মালিকের এক আত্মীয় বলেন, ওই মহিলা জানিয়েছিল, তার স্বামীর হোটেলের ব্যবসা রয়েছে। ফলে, সে বাইরে থাকে। মেয়েকে সোদপুরের একটি স্কুলে ভর্তি করেছি, তাই এখানে ঘর ভাড়া নেওয়া। কিন্তু, ওইরকম একজন কুখ্যাত দুষ্কৃতী এখানে লুকিয়ে ছিল, তা আমরা ভাবতেই পারিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন মাস থেকে চারতলা ওই ফ্ল্যাটের তিনতলায় আট বছরের মেয়েকে নিয়ে মহিলা থাকতে শুরু করে। এক আবাসিক জানালেন, বিশাখাপত্তনমে ওর স্বামী ব্যবসা করে শুনেছিলাম। ছেলে রাজ্যের বাইরে হস্টেলে থেকে পড়াশুনা করে। ওর স্বামীকে খুব বেশি দেখতাম না। তবে, কিছুদিন ধরে ওই ফ্ল্যাটে অচেনা লোকজনের যাতায়াত শুরু হয়েছিল। তার মধ্যে কিছু অবাঙালি লোকজনও ছিল। পুলিস এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে। খুনের নেপথ্যে কোনও অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে কি না সন্দেহের তালিকায় রয়েছে তাও।
পুলিস এখন কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে। ওই আবাসনের বাইরে প্রত্যেক ফ্ল্যাটের জন্য আলাদা কলিং বেল রয়েছে। মাঝরাতে দুষ্কৃতীরা এসে রামুয়ার ফ্ল্যাটের কলিং বেল কী করে জানল? অত রাতে রামুয়ার ছেলে নীচে নেমে এসে কেন গেট খুলে দিলেন? খুনের পরও পুলিসকে পরিবারের লোক কেন জানায়নি? পানিহাটি হাসপাতাল থেকে পুলিস বিষয়টি জানতে পারে। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে স্ত্রী সহ পরিবারের কেউ পুলিসের সামনে মুখ খুলতে চায়নি। পরে, চাপে পড়ে রামুয়ার নাম জানায়। তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। একবার জেল খাটার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে রয়েছে বলে পুলিসের দাবি।