যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
প্রতি বছর ৩ হাজার ৩৮৭ ডলার সাহায্য করা হয়। যা ইংল্যান্ডের মতো দেশে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যথার্থ নয়। গোটা ব্রিটেনের ২৫ শতাংশ পড়ুয়া এই পূর্ণ বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য। বাকিরা নানাভাবে কম-বেশি অর্থসাহায্য পেয়ে থাকেন। তবে পরিস্থিতিটা এমনই যে, দরিদ্র পরিবারের কোনও পড়ুয়া যদি তাঁদের পড়াশোনা ঠিকঠাকভাবে চালিয়ে যাওয়ার জন্য ঋণের উপর নির্ভর করেন, তাহলে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত তাঁকে ঘাড়ে সুদের বোঝাই চাপবে ৬০ হাজার পাউন্ড। আর তা মেটানো খুব সহজ কাজ নয়। হিসেব বলছে, যদি স্নাতক হওয়ার পর কোনও পড়ুয়া সেই টাকা মেটাতে যায়ও তাহলে তাঁদের ভবিষ্যত ভালোমতোই ডুববে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ ২১ হাজার পাউন্ড আয় করেন, তাহলে সে প্রতি বছর তাঁর মোট ঋণের ৯ শতাংশ করে মাত্র শোধ করতে পারবেন।
ব্রিটেনে আগে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে আয়ও বেড়েছে। তবে এখন সব আয়ই নির্দিষ্ট মাত্রায় এসে থেমে গিয়েছে। তার জেরে ভবিষ্যতের সঞ্চয়ে ভালোমতো আঘাত পড়ছে। সেই প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরও গিয়ে পড়ছে। সেখানে গবেষণার জন্য যে টাকা সঞ্চয় করে রাখার কথা তা একেবারেই করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে সেই কারণেও পড়ুয়াদের শিক্ষাখরচ বাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি গবেষণার টাকা জোগাড় করছে বলে অনেকেই মনে করছে। তবে পড়ুয়ারা শিক্ষাখরচের জন্য যদি ঋণ নেন, তাহলে তা কর থেকে অনেকাংশেই মুক্ত। যেমন, আয়ের প্রথম ১০ হাজার ৮০০ পাউন্ডে করের ছাড় রয়েছে। ২০১৬-১৭ আর্থিক বছর থেকে এই কর পদ্ধতির আওতায় নানা স্তরে করের হার নির্ধারণ করা হয়। এরফলে হয়তো কিছুক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাখরচ সামলাতে সাহায্য মেলে। অনেকাংশে ভবিষ্যতে সেই খরচ সামলে সঞ্চয় করাও সম্ভব হয়। তবে সেটাকেই সঞ্চয়ের মাধ্যম ধরা যায় না। এটা স্বীকার্য যে করের নানা ছাড়ের ফলে সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে হয়তো সুবিধা হচ্ছে, তবে সেভাবে দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় করা সম্ভব নয়। কারণ চাকরি পেয়ে টাকা জমানো, তারপর তা দিয়ে প্রথম বাড়ি কেনা, পরবর্তীকালে আরও ভালোভাবে সংসার চালিয়ে এক সুন্দর পরিবার নিয়ে জীবনযাপন করা— পড়ুয়া মহলের এই স্বপ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাখরচই রাশ টেনে দিয়েছে। কমপক্ষে ৫০ হাজার পাউন্ড আয় না করলে পড়াশোনার খরচ আর ঋণের খরচ মিটিয়ে ভালোভাবে জীবন কাটানো সম্ভবই নয়। এমনকী তারপরও অন্ততপক্ষে ২০ বছর লাগবে স্টুডেন্ট ঋণ শোধ করতে। আদতে সমাজে প্রতিষ্ঠা পেতে প্রথামাফিক শিক্ষা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু সেই শিক্ষা অর্জন করতে গিয়েই ব্রিটেনের পড়ুয়া মহলের ভবিষ্যতের আশা-আকাঙ্ক্ষা সবই শেষ হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থার পরিকাঠামোয় ইতিবাচক কোনও বদল ছাড়া আদতে পড়ুয়া মহলকে স্বস্তি দেওয়া কোনওভাবেই সম্ভব হবে না বলেই শিক্ষামহলের একাংশ মনে করছে।