বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
সারা দেশে যত স্বর্ণশিল্পী বা গয়নাশিল্পী কাজ করেন, তাঁদের সিংহভাগ বাঙালি। কিন্তু মোট শিল্পীর সংখ্যা কত, তার কোনও সঠিক হিসেব নেই। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, যেহেতু স্বর্ণশিল্পীদের বৃহত্তম অংশই অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী, তাই এই হিসেব পাওয়া দুষ্কর। তবু শিল্পমহলের বক্তব্য, এ রাজ্যে বসেই লক্ষাধিক মানুষ সোনার কাজ করেন। বাঙালি কিন্তু ভিন রাজ্যে কাজ করেন, এমন সংখ্যাও যথেষ্ট ভালো। অসংগঠিত ক্ষেত্রের শিল্পী হিসেবে দীর্ঘদিন মর্যাদা দাবি করে এসেছেন স্বর্ণকাররা। কিন্তু অভিযোগ, সেই দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এরাজ্যেও বিষয়টি নিয়ে চুপ থেকেছে প্রশাসন, দাবি করেছেন কারিগররা। তাই তাঁদের অন্যতম দাবি ছিল, শিল্পী বা কারিগর হিসেবে তাঁদের হাতে পরিচয়পত্র তুলে দিতে হবে এবং সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে।
কারিগরদের পরিচয়পত্র প্রদানের সেই উদ্যোগটি এবার কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শে নিতে চলেছে জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল। এখানকার পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান প্রকাশ পিঞ্চা জানিয়েছেন, তাঁরা দেশের সব কারিগরকে পরিচয়পত্র দেওয়ার কাজ শুরু করতে চলেছেন শীঘ্রই। এই মাসেই তাঁরা কাজে হাত দেবেন। তবে তাঁর কথায়, শুধু একটি পরিচয়পত্র নিয়ে আলাদা করে কোনও লাভ হওয়ার কথা নয়, যদি না সামাজিক সুরক্ষার দিকটি যুক্ত করা যায়। প্রকাশবাবু জানিয়েছেন, মূলত গয়না রপ্তানি করে, এমন বড় সংস্থার আওতায় যে শিল্পীরা কাজ করতেন, তাঁদের সামাজিক সুরক্ষার দিকটি তাঁরা দেখভাল করতেন। কিন্তু এবার সেই উদ্যোগটি সবার জন্য ছড়িয়ে দিতে চান। তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতিটি কারিগর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা এক লাখ টাকা পর্যন্ত মেডিক্লেমের সুবিধা পাবেন। এক্ষেত্রে সরাসরি ক্যাশলেস সুবিধা যেমন থাকবে, তেমনই আগে টাকা খরচ করে, পরে সেই টাকা বিমা সংস্থার থেকে মিটিয়ে দেওয়ার সুযোগও পাবেন কারিগর এবং তাঁদের পরিবার। এই প্রক্রিয়াটি চলার ফলে রাজ্যের তথা দেশের স্বর্ণশিল্পীদের একটি পরিসংখ্যানও পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
রাজ্যে স্বর্ণশিল্পীদের অন্যতম সংগঠন বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতি প্রথম ধাপে ১০ হাজার স্বর্ণশিল্পীর জন্য পরিচয়পত্র পাবে বলে জানা গিয়েছে। এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক টগরচন্দ্র পোদ্দার বলেন, আমাদের সঙ্গে জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের যে মউ স্বাক্ষর হচ্ছে, সেখানে পরিচয়পত্র ছাড়াও কিছু সুবিধা দেওয়ার কথা। যার মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্যবিমা। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, কারিগরকে পরিচয়পত্র দিতে হবে। এর জন্য দিল্লিতে যেমন বারবার দরবার করেছি, তেমনই রাজ্য সরকারকেও বারবার বলা হয়েছে। তবু কাজের কাজ হয়নি। অবশেষে কারিগরদের স্বীকৃতি মিলছে। টগরবাবুর অভিযোগ, সোনা বা দামি অলঙ্কার নিয়ে কারিগররা যাতায়াত করলে, নানাভাবে তাঁদের পুলিসি হেনস্তার মুখে পড়তে হয়। সেক্ষেত্রে এই পরিচয়পত্র কারিগরকে অন্তত কিছুটা নিরাপত্তা দেবে বলে আশা করছেন তাঁরা।