নয়াদিল্লি, ৩ জানুয়ারি (পিটিআই): সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ফের বেকায়দায় নেসলে ইন্ডিয়া। ‘সুস্থ এবং স্বাস্থ্যসম্মত’ হওয়ার দাবি করে দশকের পর দশক ভারতীয় বাজারে ছেয়ে থাকা ‘ম্যাগি’ ফের একবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। বৃহস্পতিবার একটি শুনানিতে সর্বোচ্চ আদালতে নেসলের আইনজীবীরা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ম্যাগিতে সীসার অস্তিত্ব রয়েছে। তবে, তা সহনমাত্রার নীচেই রয়েছে। এরপরই বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ন্যাশনাল কনজিউমার ডিসপুট রিড্রেসাল কমিশনে (এনসিডিআরসি) নেসলের বিরুদ্ধে সরকারের দায়ের করা মামলা ফের শুরু করা যাবে। তিন বছর আগে ২০১৫ সালে দেশজুড়ে ম্যাগির নমুনা পরীক্ষা করে অত্যাধিক মাত্রায় সীসার অস্তিত্ব মেলার পর ম্যাগির উৎপাদন ও বিপণনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। শুধু তাই নয়, অনৈতিক বাণিজ্য কৌশল গ্রহণ, মিথ্যা লেবেলিং এবং ভুয়ো বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে ৬৪০ কোটি ক্ষতিপূরণ চেয়ে এনসিডিআরসিতে নেসলের মামলাও ঠুকে দেয় সরকার। এরপর নেসলে কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে ওই বছরই ১৬ ডিসেম্বর এনসিডিআরসিতে এই মামলার শুনানিতে স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে ম্যাগির নমুনা যাচাই করে মহীশূরে অবস্থিত সেন্ট্রাল ফুড টেকনোলজি রিসার্চ ইনস্টিটিউটকে (সিএফটিআরআই) রিপোর্ট জমা দিতেও নির্দেশ দেয় আদালত। সেই রিপোর্টই এদিন আদালতে জমা পড়ে।
এদিন শুনানিতে নেসলে ইন্ডিয়ার আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি আদালতকে জানান, নুমনা যাচাই করে সিএফটিআরআই সীসার অস্তিত্ব পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা পরিমাণে সহনমাত্রার কমই রয়েছে। বিচারপতি চন্দ্রচূড় পাল্টা তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘তাহলে, কেন আমরা সীসা-যুক্ত ম্যাগি খাচ্ছি?’ উত্তরে সিংভি বলেন, যে পরিমাণ সীসা ম্যাগিতে পাওয়া গিয়েছে তা খুবই নগণ্য। এই পরিমাণ সীসা আরও অনেক খাদ্যসামগ্রীতেই পাওয়া যায়। তাতে অবশ্য চিঁড়ে ভেজেনি। শীর্ষ আদালত জানায়, সিএফটিআরআই-এর রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই এনসিডিআরসিতে মামলাটির শুনানি ফের চালু করা যাবে। ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘ওই মামলায় সিএফটিআরআই-এর রিপোর্টের পর্যালোচনা করুক এনসিডিআরসি। এই পরিস্থিতিতে এনসিডিআরসি’র এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না আদালতের।’