শনিবার, 14 জুন 2025
Logo
  • শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

সাফাই কাজ বন্ধ হওয়ায় উত্তরপাড়া কার্যত নরক, দুর্গন্ধে জেরবার মানুষ

চারদিন হয়ে গেল সাফাই কাজ বন্ধ হুগলির উত্তরপাড়া পুর এলাকায়। জঞ্জাল জমে গোটা শহর প্রায় নরক হয়ে উঠেছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনার পাহাড়। দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। 

সাফাই কাজ বন্ধ হওয়ায় উত্তরপাড়া কার্যত নরক, দুর্গন্ধে জেরবার মানুষ

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: চারদিন হয়ে গেল সাফাই কাজ বন্ধ হুগলির উত্তরপাড়া পুর এলাকায়। জঞ্জাল জমে গোটা শহর প্রায় নরক হয়ে উঠেছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনার পাহাড়। দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। বেড়েছে কুকুর, বিড়াল এবং অন্যান্য পশু-পাখির উপদ্রব। ভ্যাট থেকে আবর্জনা ছড়িয়ে রাস্তার জমছে। আবর্জনায় পা ফেলে চলাচল করতে হচ্ছে সবাইকে। আবাসন থেকে ব্যক্তিগত বাড়ি, সব জায়গায় অবস্থা ভয়ঙ্কর। চারদিন ধরে আবর্জনা জমে থাকায় মানুষ বাড়িতে থাকতে পারছেন না। কেউ বাড়তি টাকা খরচ করে আবর্জনা সরিয়ে দেওয়ার বিকল্প ব্যবস্থা করছেন। কিন্তু সিংহভাগ বাসিন্দার পক্ষে তা সম্ভব না হওয়ায় পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে অসহনীয়। এই অবস্থা চলতে থাকায় পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে নাগরিকরা। 
জানা গিয়েছে, ঠিকাকর্মীরা ভাতা সহ আনুসঙ্গিক সুবিধা না পাওয়ায় নিয়োগকারী ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছেন। এই ঘটনায় সরাসরি পুরসভার ভূমিকা না থাকলেও পুরকর্তাদের কাছে বিকল্প ব্যবস্থা কেন নেই? সেই প্রশ্ন জোরালো হয়ে উঠেছে। শহরের অলিগলিতে কান পাতলে পুরসভার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভের আঁচ সহজেই টের পাওয়া যায়। পাশাপাশি নাগরিকরা সরাসরি পুরকর্তাদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন সমাজমাধ্যমে। পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব বলেন, আমরা বহু বছর ধরে ঠিকাদার সংস্থা মারফত কাজ করি। সেই সংস্থাকে আমরা সময়মতো সমস্ত পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে দিই। তাদেরই কর্মীরা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। আমাদের কোনও ত্রুটি হয়নি। কিন্তু নাগরিকদের যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তার দায় পুরসভার। আমরা ইতিমধ্যেই ঠিকাদার সংস্থাকে শো কজ করেছি। আরও বৃহত্তর আইনি ব্যবস্থা নিতে কাউন্সিলারদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। প্রয়োজনে অন্য সংস্থা নিয়োগ হবে। দ্রুত বাসিন্দাদের সঙ্কটের সমাধান হবে। উত্তরপাড়ায় শিক্ষকতা করতে যান চিত্রশিল্পী সজল মিত্র। তিনি বলেন, পথঘাটের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। আধুনিক সময়ে উত্তরপাড়ার মতো একটি পুরসভার কাছে সাফাইয়ের বিকল্প ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন ছিল।
প্রসঙ্গত গত শুক্রবার থেকে ঠিকা সাফাইকর্মীরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। সোমবার পর্যন্ত সমস্যা সমাধানের সূত্র পুরসভা বা ঠিকাদার সংস্থা কেউই দিতে পারেনি। তার জেরে শহর আবর্জনার স্তূপে ভরে গিয়েছে। ঘরে-বাইরে দুর্গন্ধ ও আবর্জনা জমে থাকার জেরে বাসিন্দাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। সোমবার পুরসভা কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমান ঠিকাদার সংস্থাকে বরখাস্ত করে নতুন কাউকে নিয়োগ করতে অন্তত ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে। অর্থাৎ মঙ্গলবার শহর যে পরিষ্কার করার কাজ হবে এমন নিশ্চয়তা পুরসভা দিতে পারেনি। ফলে দুর্ভোগ কবে মিটবে সেই প্রশ্নের উত্তর আপতত অধরা।  নিজস্ব চিত্র