শুক্রবার, 18 জুলাই 2025
Logo
  • শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

দীঘার ‘সাইকো কিলারে’র সর্বোচ্চ সাজার লক্ষ্যে স্পেশাল পিপি নিয়োগ

রামনগরে যুবতীকে নৃশংস খুনের ঘটনায় ধৃতের সর্বোচ্চ সাজার লক্ষ্যে স্পেশাল পিপি নিয়োগ করল ভবানী ভবন। তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য আরও একজন আইনজীবীকে নিয়োগ করেছেন ডিআইজি(লিগ্যাল

দীঘার ‘সাইকো কিলারে’র সর্বোচ্চ সাজার লক্ষ্যে স্পেশাল পিপি নিয়োগ

নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: রামনগরে যুবতীকে নৃশংস খুনের ঘটনায় ধৃতের সর্বোচ্চ সাজার লক্ষ্যে স্পেশাল পিপি নিয়োগ করল ভবানী ভবন। তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য আরও একজন আইনজীবীকে নিয়োগ করেছেন ডিআইজি(লিগ্যাল)। তাঁরা কাঁথি এসিজেএম আদালতে সরকারের পক্ষ নিয়ে ওই মামলায় আইনি সওয়াল করবেন। মামলার স্পেশাল পিপি হিসেবে বিভাস চট্টোপাধ্যায়কে নিযুক্ত করা হয়েছে। তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য দমদমের বাসিন্দা শান্তনু দেমুহুরী নামে আরও একজন আইনজীবীকে নিয়োগ করেছে ভবানী ভবন।
বৃহস্পতিবার খুনের ঘটনায় ধৃত আনসারুল শাহ ওরফে কালাকে কাঁথি এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। তার ১০দিনের পুলিসি হেফাজত মঞ্জুর করেছে আদালত। পুলিস গত ২জুন দীঘা থানার রতনপুরের বাসিন্দা আনসারুলকে চেন্নাই থেকে গ্রেপ্তার করে। গত মে মাসে আনসারুলের ঘনিষ্ঠ রাজীব দাস খুন হন। সেই খুনের ঘটনায় পুলিস আনসারুলের তিন সহযোগীকে আগেই গ্রেপ্তার করেছে। আনসারুল চেন্না‌ই঩য়ে গা ঢাকা দিয়েছিল। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তারের পর জেরা করে রামনগরে আনা হয়। তাকে জেরা করে পুলিস জানতে পারে, ২০২৪সালের অক্টোবর মাসে রামনগরে আরও একটি নৃশংস খুনের ঘটনায় সে জড়িত। এক যুবতীকে খুনের পর দেহ ও মুণ্ড আলাদা করে একটি হাত ও দু’টি পা কেটে বস্তায় ভরে জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার মাস্টারমাইন্ডও আনসারুল।
দীঘার বছর ছাব্বিশের যুবক আনসারুল শাহ আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো নয়। পুলিসের ভাষায় সে একজন ‘সাইকো কিলার’। খুনের পর দেহ টুকরো করে সে পৈশাচিক আনন্দ পায়। সেই আনন্দ পেতে একের পর এক টার্গেট ধরত। দীঘা ও রামনগরে ১৮-২৫বছর বয়সি যুবকদের নিয়ে একটি গ্যাং বানিয়েছিল। হোটেল, দোকান থেকে তোলা আদায়, মেয়েদের সঙ্গে ফুর্তি আর মদ, মাদকে আসক্ত ছিল। ২০২৪সালের ২৭অক্টোবর রামনগর থানার বসন্তপুরে শ্মশান সংলগ্ন জঙ্গলে এক যুবতীর বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। বস্তা খুল঩তেই হাড়হিম করা দৃশ্য। বস্তার ভিতরে ছিল যুবতীর মাথাহীন দেহ। শরীরে কোনও পোশাক ছিল না। দেহের সঙ্গে বাঁ হাত ছিল। তবে ডান হাত কাটা। শরীর থেকে দুটো পা কেটে আলাদা করা হয়েছিল। দেহ দেখে আঁতকে উঠেছিল পুলিসও। 
রামনগর-১ব্লকের বসন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এনিয়ে একটি এফআইআর দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিস তদন্ত চালালেও কোনও ‘ক্লু’ পাচ্ছিল না। শেষমেশ রাজীব খুনের ঘটনায় আনসারুল ধরা পড়ে। তখন সে ওই যুবতী খুনের ঘটনার কথাও স্বীকার করে। রাজীব দাস আনসারুলের টিমেরই এক সদস্য ছিল। পুলিসের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল। অপরাধ জগতের খবর নিতে পুলিস তাকে কাজে লাগাত। রাজীব মাঝেমধ্যে আনসারুলকে ওই যুবতী খুনের ঘটনায় পুলিসে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখাত। এই ব্ল্যাকমেল করাটা পছন্দ হয়নি আনসারুলের। তাই রাজীবকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে গত ৯মে রামনগর থানার গোবিন্দপুরে একটি কাজু বাগান ও বালিয়াড়ি ঘেরা নির্জন এলাকায় ডেকে নিয়ে যায় সে। সেখানে রাজীবকে মদ্যপান করিয়ে নৃশংসভাবে খুন করে আনসারুল। ধড় ও মুণ্ড আলাদা করে দেওয়া হয়। 
পুলিস জানিয়েছে, ধৃত আনসারুলের সর্বোচ্চ সাজার জন্য আইনি লড়াই হবে। জেলে থাকা অবস্থায় চার্জশিট পেশ করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এধরনের মানসিকতার লোক বাইরে ঘুরে বেড়ালে সমাজের ক্ষতি হবে।

রাশিফল