বুধবার, 25 জুন 2025
Logo
  • বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

মাত্রাছাড়া দূষণ অজয়ের জলে প্রাথমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত রিপোর্ট

অবশেষে বাসিন্দাদের অভিযোগেই পড়ল সিলমোহর। পুরসভা অজয় নদের যে জল সরবরাহ করছে তা দূষিত, এই অভিযোগে কয়েক মাস ধরেই দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়েছে এলাকায়।

মাত্রাছাড়া দূষণ অজয়ের জলে  প্রাথমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত রিপোর্ট

নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: অবশেষে বাসিন্দাদের অভিযোগেই পড়ল সিলমোহর। পুরসভা অজয় নদের যে জল সরবরাহ করছে তা দূষিত, এই অভিযোগে কয়েক মাস ধরেই দফায় দফায় বিক্ষোভ হয়েছে এলাকায়। সেই অভিযোগের সত্যতা যাচা‌ই করতে গিয়ে চোখ ছানাবড়া প্রশাসনের। বৃহস্পতিবার অজয়ের নানা প্রান্ত থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন বিশেষজ্ঞরা। তা থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, অজয়ের এক অংশে জলের হার্ডনেস ১৯০০। পানযোগ্য জলে যা থাকার কথা ২০০ থেকে ৬০০। এদিন অজয় নদের দশ কিলোমিটারজুড়ে দশ জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মঙ্গলবার জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর চূড়ান্ত রিপোর্ট দেবে। 
জেলাশাসক পোন্নমবলম এস বলেন, বুধবার সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হয়। একটি বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করা হয়েছে। তাঁরা রিপোর্ট দেবে। রিপোর্ট অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 
দু’ মাসেরও বেশি সময় ধরে উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন জামুড়িয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। ১, ২, ৪, ৫, ৭ ওয়ার্ডের সম্পূর্ণ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আংশিক এলাকার জল সরবরাহ হয় পুরসভার দরবারডাঙা প্রকল্প থেকে। দরবারডাঙায় অজয় নদ থেকে জল তুলে তা রাইজিং মেইন পাইপ লাই঩নের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয় শিরিষডাঙা পাম্পিং স্টেশন। সেখানে জল পরিস্রুত করে ওভারহেড ট্যাঙ্কে তুলে সরবরাহ করা হয়। অভিযোগ, দরবারডাঙার অদূরে বিশাল চ্যানেলের মতো নালার মধ্যে দিয়ে দূষিত জল এসে অজয় নদে মিশছে। জানা গিয়েছে, দশ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা একটি কয়লা খাদান থেকে জল তুলে নদীতে ফেলা হচ্ছে। জামুড়িয়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই জলে চাল, ডাল সেদ্ধ হচ্ছে না। প্রচন্ড কষা জল, জল খেলে পেটের অসুখ হচ্ছে। পরিস্রুত পানীয় জলের দাবিতে দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে। একাধিক বার বাসিন্দারা শিরিষডাঙা পাম্প হাউস অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তাতেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে সবপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলাশাসক পোন্নমবলম এস। অভিযুক্ত খনি কর্তৃপক্ষও বৈঠকে হাজির ছিল। তারা জল দূষণের দায় নিতে অস্বীকার করে। তারপরই সিদ্ধান্ত হয় বিশেষজ্ঞরা এলাকা পরিদর্শন করবেন বৃহস্পতিবারই। সেই মতো সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে নদীর নানা প্রান্ত থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ। তখনই পুরনো খাদানের জলের হার্ডনেস পরীক্ষা হয়। পিএইচইর মেশিন তাৎক্ষণিক যে রিপোর্ট দেখায় সেখানে দেখা গিয়েছে জলের হার্ডনেস ২২০০। তাদের জল নদীর যে অংশে মিশছে, নদীর সেই অংশে হার্ডনেস ১৯০০। যদিও এই রিপোর্ট মানতে চায়নি খনি কর্তৃপক্ষ। নমুনা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের পরীক্ষাগার থেকে নমুনাগুলির কী রিপোর্ট আসে সেদিকেই তাকিয়ে সবপক্ষ। আসানসোলের মহকুমা শাসক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, নদীর বিভিন্ন অংশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।