মঙ্গলবার, 08 জুলাই 2025
Logo
  • মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫

রথের মজা

আগামী শুক্রবার রথযাত্রা। রথ মানেই জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা আর পাঁপড় ভাজা- পেঁয়াজি-জিলিপি। আষাঢ়ের এই উৎসব কেমন কাটবে জানাল কলকাতায় ব্রাহ্ম বালিকা শিক্ষালয়ের ছাত্রীরা। ছবিও আঁকল তারা।

রথের মজা

আগামী শুক্রবার রথযাত্রা। রথ মানেই জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা আর পাঁপড় ভাজা- পেঁয়াজি-জিলিপি। আষাঢ়ের এই উৎসব কেমন কাটবে জানাল কলকাতায় ব্রাহ্ম বালিকা শিক্ষালয়ের ছাত্রীরা। ছবিও আঁকল তারা।

মামার বাড়ির রথের মেলা
আমাদের রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের মেলা বসে। যেমন— রথের মেলা, ঝুলনের মেলা, চড়কের মেলা। এইসব মেলার মধ্যে রথের মেলা হল উল্লেখযোগ্য। বর্ষাকালে রথের মেলা বসে। রথযাত্রা হল জগন্নাথদেবের মাসির বাড়ি যাওয়ার উৎসব। সাতদিন ধরে এই উৎসবের রেশ থাকে। বাবা-মায়ের হাত ধরে জীবনে অনেক মেলাতে যাওয়ারই সুযোগ হয়েছে। নানা ধরনের মেলায় গিয়ে বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি। আমার মনে চিরস্থায়ী হয়ে আছে মামার বাড়ির মেলা। সেখানে মাটির জিনিস, কাঠের জিনিস, খেলনা পাওয়া যায়। এছাড়াও পাঁপড় ভাজা, ফুচকা, ঘুগনি পাওয়া যায়। তাই সবথেকে ভালোলাগার বিষয় হল জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। 
—রূপসা লাহিড়ী, অষ্টম শ্রেণি 

আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়
রথযাত্রা হিন্দুদের অন্যতম প্রধান উৎসব। আষাঢ় মাসে জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রাকে রথে বসিয়ে পূর্ণ ভক্তিতে মন্দির থেকে বের করে শহরের পথ দিয়ে মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। এই দিনটিকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মনে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। সকলে রথ টানতে ছুটে আসে। ঢাক, ঢোল ও শঙ্খধ্বনিতে চারদিক উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। এই উৎসব উপলক্ষ্যে বিশাল মেলা বসে। শিশুরা নাগরদোলা ও খেলনা নিয়ে মেতে ওঠে। আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে কেনাকাটা ও খাওয়াদাওয়া করে সকলে রথের মজায় মেতে ওঠে। 
—রিতিকা চন্দ্র, দশম শ্রেণি

পাড়ায় রথ টানা
আষাঢ় মাসের বিখ্যাত উৎসব হল রথযাত্রা। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে নিয়ে রথযাত্রার উৎসব করা হয়। ওড়িশার পুরীর মন্দিরে খুব ধুমধামের সঙ্গে এই উৎসব পালন করা হয়। রথের দড়ি টানার মজাই আলাদা। কাঠের রথে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে বসিয়ে পাড়ায় পাড়ায় রথ নিয়ে ছোটে ছোট ছেলেমেয়েরা। ফুল দিয়ে পুরো রথ সাজানো হয়। দিকে দিকে মেলা বসে। চারদিক তালপাতার ভেঁপুর শব্দে মুখরিত হয়। উল্টোরথে জগন্নাথ আবার নিজের বাড়ি ফিরে আসেন। সারা বছর রথযাত্রা ও রথের মেলার জন্য আমরা অপেক্ষা করে থাকি। 
—সৌমিলি দত্ত, দশম শ্রেণি

সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক
রথযাত্রা শুধু উৎসব নয়, বাঙালির জীবনে রথ একটা ভিন্ন মাত্রার আনন্দ নিয়ে আসে। চারদিকে উৎসবের আমেজ। ছোট থেকে বড় সকলেই মেতে ওঠে রথের রশি টানার উন্মাদনায়। জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার রথ যখন পথে নামে, তখন চারদিকে মুখরিত হয় কোলাহলে। মেলায় শিশুরা নতুন খেলনা পেয়ে আনন্দে মেতে ওঠে। বড়রা রথের দড়ি ছুঁয়ে পুণ্য অর্জন করে। রথযাত্রা একটি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক, যা মানুষকে একত্রিত করে। 
—নম্রতা সরকার, দশম শ্রেণি 

উৎসব ক্ষেত্র মাহেশ
রথযাত্রা হিন্দুদের একটি জনপ্রিয় উৎসব। ভারতের সর্বাধিক জনপ্রিয় রথযাত্রা হল ওড়িশার জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। এই রথযাত্রা দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। এছাড়া শ্রীরামপুরের মাহেশের রথ দেখতেও লক্ষাধিক মানুষ ভিড় জমান। শুধু এই বিখ্যাত রথই নয়, পাড়ায় পাড়ায়, অলিতে গলিতে বাচ্চারা অনেক পরিকল্পনা করে রথগুলিকে সাজিয়ে তোলে। বিকেল হলেই তারা রথ নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। আর রথের মেলার সঙ্গে বৃষ্টিভেজা প্রকৃতির রূপ দেখতেও ভালো লাগে। বৃষ্টিভেজা প্রকৃতি যেন এদিন নিজস্ব রঙে সেজে ওঠে। 
—শ্রেয়া দাস, দশম শ্রেণি

মিলন মেলা
রথের মেলা মানে আনন্দ, উল্লাস আর এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। রথ মানে শুধু রথের মেলা নয়, রথ বলতে শ্রীরামপুরের মাহেশের রথ, গুপ্তিপাড়ার বৃন্দাবনচন্দ্র মঠের রথ, পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের রথ আর ইস্কনের রথকে বোঝায়। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রথের উৎসবে লক্ষ লক্ষ ভক্ত যোগ দেন। রথের মেলা বাংলা সংস্কৃতির অঙ্গ। এখানে প্রচুর লোক আসেন। অনেক কেনাকাটি হয়। সকলে তার আরাধ্য দেবতাকে প্রণাম জানায়। মেলায় নানারকম খাবার আর খেলনা বিক্রি হয়। শিশু-বৃদ্ধ সকলে মেলায় আনন্দ উপভোগ করে। রথের মেলা হল 
সকলের মিলন মেলা। এই মেলা সকলের জীবনে আনন্দ বয়ে আনে। প্রতিবছর রথে আমি ভীষণ মজা করি।
—সৃজা চট্টোপাধ্যায়, দশম শ্রেণি 

রাশিফল