রবিবার, 20 জুলাই 2025
Logo
  • রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল: ঝাঁ চকচকে সুপার স্পেশালিটি ব্লকেও মেলে না পরিষেবা, নাজেহাল রোগীরা

অভিভাবকহীন অবস্থায় চলছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি ব্লক। পরিকল্পনা মতো এখনও পূর্ণাঙ্গ সুপার স্পেশালিটি চিকিৎসা পরিষেবা চালুই হয়নি।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল: ঝাঁ চকচকে সুপার স্পেশালিটি ব্লকেও মেলে না পরিষেবা, নাজেহাল রোগীরা

সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: অভিভাবকহীন অবস্থায় চলছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি ব্লক। পরিকল্পনা মতো এখনও পূর্ণাঙ্গ সুপার স্পেশালিটি চিকিৎসা পরিষেবা চালুই হয়নি। সাধারণ কিছু বিভাগকে যুক্ত করে সুপার স্পেশালিটি ব্লক চালু করা হয়েছে। এখানে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে এসে নাজেহাল হচ্ছেন রোগীরা। পড়ছেন দালালদের খপ্পরে।  
সুপার স্পেশালিটি ব্লকে ঢুকতেই চূড়ান্ত অব্যবস্থার ছবি ধরা পড়ে। ভাঙা স্ট্রেচার পড়ে রয়েছে। সিলিং খোলা। পরিকাঠামো ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কোনও নজরদারিও নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। চূড়ান্ত অব্যবস্থার মধ্যেও এখানে চলছে আউটডোর পরিষেবা। ফালাকাটার আজিজুল মিয়াঁকে আগস্ট মাসে ইকো কার্ডিওগ্রাফির ডেট দেওয়া হয়েছে। কাকে বললে তাড়াতাড়ি পরীক্ষা করানো যাবে, তার জন্য গোটা চত্বরে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ান তিনি। কিন্তু হাসপাতালের কোনও আধিকারিকের দেখা পাননি। তাঁর অভিযোগ, এক ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গে ইকো কার্ডিওগ্রাফি করিয়ে দেওয়ার জন্য টাকা চায়। কিন্তু টাকা দেননি আজিজুল। 
তাঁর মতো অন্যান্য রোগীরাও বিভিন্ন সুযোগ, সুবিধা বা সমস্যার সমাধানের জন্য জনে জনে জিজ্ঞেস করেন এখানে।  এই পরিস্থিতিতে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ঠিকাদার সংস্থার ফেসিলিটি ম্যানেজার রোগীদের টিকিটের উপর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা তাড়াতাড়ি করার সুপারিশ লিখে দিয়ে বলছেন, ডাক্তারকে গিয়ে বলুন মিঠু স্যার পাঠিয়েছে। এই ‘মিঠু স্যার’ হাসপাতালের কোনও কর্মী বা আধিকারিক নন। তাহলে হাসপাতালের টিকিটের উপর ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে কীভাবে তিনি সুপারিশ লিখছেন? স্বভাবতই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও মিঠু সাহা বলেন, আমি অস্থায়ী কর্মী। যাঁদের খুব প্রয়োজন, তাঁদের কিছুটা সুবিধার জন্য লিখে দিই। 
ঝাঁ চকচকে আধুনিক পরিকাঠামোর এই বহুতল ভবনে হাসপাতাল হস্তান্তরের বছর না ঘুরতেই ফলস সিলিং খসে পড়তে শুরু করেছে। সেই ক্ষত ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। প্রথমে কেন্দ্রের এজেন্সিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় নিম্নমানের কাজের অভিযোগে। কিন্তু ভবন হস্তান্তর হয়ে যাওয়ায় রাজ্য সরকারের উপরই চলে আসে সংস্কারের কাজের দায়িত্ব। হাসপাতালের অ্যাডিশনাল সুপার ডাঃ নন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পূর্তদপ্তর সিলিং মেরামতের কাজে হাত দিয়েছিল। সার্জিক্যাল ব্লক সহ কিছু জায়গার সিলিং সংস্কার করার পর কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। পূর্তদপ্তর জানিয়েছে, ফান্ড নেই। কবে আসবে তাও জানা নেই। রোগীদের টিকিটে সুপারিশ লেখার ব্যাপারে বলেন, এভাবে কেউ লিখতে পারেন না। বিষয়টি দেখব। 
নিউরো, নেফ্রো, কার্ডিও, ইউরো, বার্ন ইউনিট সহ ছ’টি বিভাগে সুপার স্পেশালিটি চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্যই কেন্দ্রের সহায়তায় তৈরি হয়েছে এই ব্লক। দীর্ঘ টালবাহানার পর কার্ডিওলজি ও ইউরোলজির ইন্ডোর পরিষেবাও সম্প্রতি চালু হয়েছে। সুপার স্পেশালিটি ব্লক চালু রাখার জন্য  বিভিন্ন সাধারণ বিভাগ ও সেন্ট্রাল ল্যাবও সরিয়ে আনা হয়েছে এখানে।

রাশিফল