রবিবার, 20 জুলাই 2025
Logo
  • রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

বোমা বিস্ফোরণের নেপথ্যে কি বালির ঘাট দখলের লড়াই? ‘সিদুঁরে মেঘ’ কাটোয়ায়

রাজুয়া গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছে কাটোয়া। আবার নতুন করে ভাগীরথীর পাড়ে জমি দখলের লড়াইয়ের আঁচ পাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।

বোমা বিস্ফোরণের নেপথ্যে কি বালির ঘাট দখলের লড়াই? ‘সিদুঁরে মেঘ’ কাটোয়ায়

নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান ও সংবাদদাতা, কাটোয়া: রাজুয়া গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ফের সিঁদুরে মেঘ দেখছে কাটোয়া। আবার নতুন করে ভাগীরথীর পাড়ে জমি দখলের লড়াইয়ের আঁচ পাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। শুক্রবার রাতে রাজুয়া গ্রামে বহিরাগতদের এনে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। বিস্ফোরণে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম বরকত শেখ(৩৫)। বাড়ি বীরভূমের নানুর থানার সহেলা গ্রামে। জখম তুফান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। বিস্ফোরণে আরও দু’জন জখম হয়েছেন বলে স্থানীয়দের দাবি। তবে তাদের খোঁজ মেলেনি। কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, তুফান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার এখন চিকিৎসা চলছে।
এলাকা যার, বালির ঘাটও তার। এটাই অঘোষিত নিয়ম। যাবতীয় অশান্তির পিছনে থাকে অজয় নদের বালি। বালির ঘাটের দখল নিতেই বোমা বাঁধা হচ্ছিল বলে অভিযোগ তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, আগে ওইসব এলাকার বালির ঘাটগুলি দখল করে রাখত জঙ্গল বাহিনী। ফের ওইসব বালির ঘাট দখল করে কাটোয়া শহরে এসে জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছিল। রাজুয়া গ্রামে জঙ্গল শেখের মামার বাড়ি। ওই এলাকায় ওর অনেক অনুগামী রয়েছে। আগে জঙ্গল ওইসব এলাকার অজয়ের বালির ঘাটগুলি নিয়ন্ত্রণ করত। এখন তার বাহিনী জেল থেকে জামিন পেয়েছে। তারা বর্ধমানের খাগড়াগড় এলাকায় ভাড়া বাড়িতে ডেরা বেঁধেছিল। সেখানেই তুফানের যাওয়া আসা ছিল। ওরা আমার উপর বা আমাদের দলের কর্মীদের উপর হামলার ছক কষেছিল।
অভিযোগ, রাজুয়া গ্রামের বাসিন্দা তুফান নানুর থেকে বেশ কয়েকজনকে এনে বোমা বাঁধছিল। মিন্টু শেখ নামে এক ব্যক্তির পরিত্যক্ত বাড়িতে বসে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। সেইসময় বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকা। এদিন রাজুয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাসবেসটসের চাল দেওয়া কংক্রিটের বাড়িটি পুরো ভেঙে পড়েছে। আশপাশের বাড়িতেও অ্যাসবেসটসের টুকরো ছিটকে পড়ে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে গাছের ডালে এক দুষ্কৃতীর জামার টুকরো উঠে যায়। 
প্রতিবেশী গোলাপি বিবি, ফিরোজ শেখ বলেন, রাতে বাড়িতে বসেছিলাম। আচমকা দু’বার বিকট আওয়াজে খুব ভয় পেয়ে যাই। বেরিয়ে পাশের বাড়িতে আগুনের ঝলকানি দেখতে পাই। কয়েকজন ছুটে পালায়। প্রতিবেশীদের কেউ কেউ নিরাপত্তার জন্য মিস্ত্রি ডেকে বাড়ির পাঁচিল তুলে দিচ্ছেন। যাতে এরকম ঘটনা ঘটলে তার আঁচ যেন বাড়িতে এসে না পড়ে। 
ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি এসডিপিও অফিসে ডেপুটেশন দেয়। বিজেপি নেতা গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, এখানে জঙ্গল শেখের কিছু নেই। তৃণমূল ভোটের আগে অশান্তি পাকানোর জন্য বোমা বাঁধছিল। বিস্ফোরণ ঘটে যাওয়ায় এখন তৃণমূল অন্য গল্প ফাঁদছে।

রাশিফল