বৃহস্পতিবার, 19 জুন 2025
Logo
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

মধুচক্রে ধৃতদের মধ্যে দু’জনই বিজেপি নেতা, মন্দারমণি কাণ্ডে অস্বস্তি পদ্মশিবিরে

মন্দারমণির হোটেলে মধুচক্রের আসর থেকে হাতেনাতে ধরা পড়লেন তুতো ভাই দুই বিজেপি নেতা। ধৃত সঞ্জীব জানা বিজেপির ল-সেলের জেলা কো-কনভেনার।

মধুচক্রে ধৃতদের মধ্যে দু’জনই বিজেপি নেতা, মন্দারমণি কাণ্ডে অস্বস্তি পদ্মশিবিরে

নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: মন্দারমণির হোটেলে মধুচক্রের আসর থেকে হাতেনাতে ধরা পড়লেন তুতো ভাই দুই বিজেপি নেতা। ধৃত সঞ্জীব জানা বিজেপির ল-সেলের জেলা কো-কনভেনার। আর ধৃত অমিত জানা বিজেপির বুথ সভাপতি। দু’জনেরই বাড়ি মহিষাদল থানার বাসুলিয়া গ্রামে। তাঁরা জেঠতুতো ভাই। শনিবার রাতে মন্দারমণির একটি হোটেলে দেহ ব্যবসা চালানোর অভিযোগে পুলিস অভিযান চালায়। সেখান থেকে মোট সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার তাদের কাঁথি এসিজেএম কোর্টে তোলা হয়। দুই বিজেপি নেতার ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে। হোটেল থেকে পাঁচজন যুবতীকে উদ্ধার করে হোমে পাঠানো হয়েছে।
মধুচক্রের আসর থেকে দলীয় দুই নেতা গ্রেপ্তারের পর তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতারা লজ্জায় মুখ লুকোচ্ছেন। ধৃত সঞ্জীব জানা আগে মহিষাদল-১ নম্বর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সহ বহু নেতার সঙ্গে তিনি ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করতেন। ডাকাবুকো চেহারায় ওই বিজেপি নেতার জীবনযাপন নিয়ে পার্টির মধ্যে অনেকেই বিরক্ত ছিলেন। কিন্তু, তাঁর দাপটের জেরে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতেন না। বাসুলিয়া ২৪ নম্বর বুথের বিজেপির সভাপতি হচ্ছেন অমিত জানা। নিজের বুথেরই অধিকাংশ কর্মী তাঁর পক্ষে নেই। তারপরও হম্বিতম্বি করে তিনি বুথ সভাপতি পদ আঁকড়ে থাকতেন বলে গ্রেপ্তারের পর অনেকেই মুখ খুলছেন।
ধৃত সঞ্জীব জানা দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। সেইসঙ্গে নিজের জেঠতুতো দাদা অমিত জানাকেও বিজেপিতে যোগ দেওয়ান। তমলুক সাংগঠনিক জেলায় ঘন ঘন বিজেপির জেলা সভাপতি বদলের জেরে কোথাও কোথাও নিচুস্তরে একটা ডামাডোল পরিস্থিতি তৈরি হয়। একসময় মহিষাদলেরই নেতা তপন চট্টোপাধ্যায় জেলা সভাপতি ছিলেন। তারপর তাঁকে সরিয়ে জেলা সভানেত্রী হন হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। তিনি দল দেওয়ার পর নতুন করে সভাপতি হন মলয় সিনহা। সভাপতি পদে ঘন ঘন বদলের জেরে মণ্ডল ও বুথস্তরে একটা ডামাডোল পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই সুযোগ নিয়ে ধৃত দুই ভাই এলাকায় দাদাগিরি করে পদ আঁকড়ে রাখতেন বলে অভিযোগ।
ধৃতদের প্রতিবেশী বিজেপির কিষাণ মোর্চার জেলা সহ সভাপতি মাখন মাজি বলেন, হোটেলে মধুচক্রের আসর থেকে দু’জনে ধরা পড়ার খবর শোনার পর লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। এরা আমাদের পার্টির কার্যকর্তা। হোটেলে স্ফূর্তি করতে গিয়ে এখন শ্রীঘরে।
বিজেপির মহিষাদল ব্লক কনভেনার রামকৃষ্ণ দাস বলেন, অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। এদের সম্পর্কে মন্তব্য করতে রুচিতে বাধছে। এদের মতো লোকজনের জন্যই মহিষাদলে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। সঞ্জীবের জীবনযাত্রা মোটেও ভদ্র, সভ্য নয়। এদের জন্য পার্টির ক্ষতি হচ্ছে। বিজেপির মহিষাদল-১ মণ্ডল সভাপতি অনুপ সামন্তকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।