কলকাতা

একা কুম্ভ হয়ে রক্ষা করে চলেছেন শ্রীরামপুরের ৩ নম্বর বাস রুট
মালিক থেকে কন্ডাক্টর,
সব ভূমিকায় সাবলীল সুদীপ

নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: ‘একা কুম্ভ রক্ষা করে নকল বুঁদি গড়’। বাস্তবে সেটাই করে চলেছেন প্রৌঢ় এক ব্যক্তি। শতবর্ষ ছুঁতে চলা প্রায় মৃত একটি বাস রুটকে একার জোরে বাঁচিয়ে রাখার অসম লড়াই রোজ লড়ে যাচ্ছেন ওই প্রৌঢ়। এ কাজ করতে গিয়ে বাসমালিক থেকে কন্ডাক্টর হতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু দমে যাননি। কাঁধে চামড়ার টিকিট ব্যাগ ঝুলিয়ে খেয়ে না খেয়ে একা কুম্ভ হয়ে রক্ষা করে যাচ্ছেন সাধের বুঁদি। 
তাঁর একমুখ কাঁচাপাকা দাড়ি। সেটি  চুলকে সুদীপ গোস্বামী নামে ওই প্রৌঢ় অবলীলায় বলে দিতে পারেন, ‘খুব ভালোবাসি যে’। একে একে শ্রীরামপুরের ৩ নম্বর রুট থেকে হারিয়ে গিয়েছে সবক’টি বাস। হারাধনের একটি মাত্র ছেলে হয়ে টিঁকে আছে মাত্র সুদীপবাবুরটি। আর প্রতিদিন চাকার ঘূর্ণিতে বার্তা দিয়ে যাচ্ছে, বেঁচে আছে ৩ নম্বর। 
এই রুটের ইতিহাস কম গৌরবের নয়। দেশ তখনও স্বাধীন হয়নি। ১৯২৫ সাল। কয়েকটি বেসরকারি বাসের সারি ভিড় করেছিল শ্রীরামপুর স্টেশনের পাশে বাস টার্মিনাসে। তারপর ১৯২৭-২৮ সাল নাগাদ একের পর এক বাস নিয়মিত শ্রীরামপুর থেকে কলকাতার শ্যামবাজার পর্যন্ত চলাচল করত। তদানীন্তন সময়ের জেলা তালিকা অনুসারে, তিন জেলাকে ছুঁয়ে চলত সেই বাস। শ্রীরামপুর স্টেশনে এসে যাত্রীরা কলকাতায় যেতেন ৩ নম্বর রুট ধরেই। আর ১০০ বছরের পথ অতিক্রম করার পর্বে খসে গিয়েছে রুটের যাবতীয় গরিমা আর বৈভবের ঝলক। একসময় সংখ্যায় বাড়তে বাড়তে প্রায় ৮০টি বাস চলাচল করত এই রুটে। সেটি অচিরেই পয়মন্ত হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে মালিকদের কাছে। এই রুটে বাস চালাতে মালিকপক্ষের হুড়োহুড়ি লেগে থাকত। তবে দিন গিয়েছে সেই রুটের। বাসস্ট্যান্ড সরে চলে এসেছে শিবতলাতে। তার আগেই অবশ্য পাততাড়ি গুটিয়ে ফেলছিলেন মালিকরা। প্রতিদিন কমছিল বাসের সংখ্যা। তারপর অটো-টোটো পথে নামায় ধীরে ধীরে বিদায় নেয় ৩ নম্বরের ভাগ্যলক্ষ্মী। এখন শিবরাত্রির সলতের মতো জ্বলছে একটি মাত্র বাস। তবে এখন আর শ্যামবাজার যায় না সেটি। দক্ষিণেশ্বর থেকে ফিরে আসে সুদীপবাবুর ‘জগদ্দল’ ৩ নম্বর। ‘দিনে  চারবার যাতায়াত করেও বাসের খরচ জোটে না। পয়সা নেই বলে কন্ডাক্টর, চালকও মেলে না’ বললেন সুদীপবাবু। একদিন নিজেই স্টিয়ারিং ধরেছিলেন প্রৌঢ়। এখন প্রতিদিন নিয়ম করে রুটে নামে তাঁর বাস।
সুদীপবাবু বলেন, ‘প্রতিদিন গাড়ি পথে নামাতে তিন হাজার টাকার দরকার। সে পয়সা প্রতিদিন ওঠে না। কিন্তু মায়া পড়ে গিয়েছে। সবাই চলে গেলেও তাই ৩ নম্বরটা ছাড়তে পারিনি। রুট নেই হতে বসেছে দেখে খারাপ লাগে।’ আক্ষেপের পাশাপাশি অভাব অভিযোগও কিছু আছে সুদীপবাবুর। কিন্তু সেসব আর বলতে চান না নিঃসঙ্গ এই প্রৌঢ়। শুধু জীবনের শেষদিন পর্যন্ত বাসের চাকা গড়িয়ে নিয়ে যেতে চান। একা কুম্ভ হয়ে তাই লড়াই জারি রেখেছেন সাধের বুঁদি গড় রক্ষা করতে। 
20Months ago
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কর্মে উন্নতি ও কর্মসূত্রে বিদেশ গমন হতে পারে। বিলাস দ্রব্যের ব্যবসায় বেশি লাভের সম্ভাবনা।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৫ টাকা৮৪.৯৯ টাকা
পাউন্ড১০৭.১৯ টাকা১১০.৯৬ টাকা
ইউরো৮৯.৩৫ টাকা৯২.৭৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা