ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি। শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
বিশেষজ্ঞদের দাবি, মাশরুম ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম। এতে খনিজ লবন, মিনারেল, প্রোটিন, ভিটামিন রয়েছে। একশো গ্রাম মাশরুমে ৪ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। মাশরুমের প্রোটিন খুবই সহজপাচ্য। তাছাড়া কোলেস্টরল, ফ্যাট একেবারেই কম। ফলে মাশরুমের পুষ্টিমূল্য প্রচুর। দুধ মাশরুম ও বোতাম মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, প্রোটিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। এই দুই প্রজাতির মাশরুম সুস্বাদু ও সহজপাচ্য। স্বাদে মাংসের মতো। ঝিনুক বা দুধ মাশরুম বিক্রি করে ভালো টাকা লাভ মিলছে। মাশরুম চাষের সঙ্গে যুক্তরা জানিয়েছেন, মাশরুম উৎপাদন করে ৫০ শতাংশ লাভ ঘরে তোলা যায়। চারশো গ্রাম স্পন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। ওই পরিমাণ স্পন দিয়ে মাশরুমের দুটি বেড তৈরি করা যায়। এক মাসের মধ্যে একটি বেড থেকে অন্তত দেড় কেজি মাশরুম মিলবে। খড় ও স্পন দিয়ে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের মধ্যে মাশরুমের বেড বানানো যায়।
কীভাবে মাশরুমের বেড বানাতে হবে?
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ছোট করে খড় কাটতে হবে। তার পর সেই খড় জীবাণুমুক্ত করতে হবে। খড়কে গরম জলে ফুটিয়ে চুন বা ফটকিরি জলে ডুবিয়ে নিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। ফরমালিন কিংবা ব্যাভিস্টিন দিয়েও খড় জীবাণুমুক্ত করা যায়। খড় ও স্পনের স্তর তৈরি করে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের মুখ বেঁধে দিতে হবে। ওই ব্যাগের (সিলিন্ডার) গায়ে একাধিক ছিদ্র করে দিতে হবে। দরজা-জানালা বন্ধ করে অন্ধকার ঘরের মধ্যে প্যাকেটগুলিকে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। ২০-২৫ দিন পর দেখা যাবে, প্লাস্টিক ব্যাগের ছিদ্র দিয়ে কুঁড়ি বেরিয়েছে। এই অবস্থায় প্যাকেটের গায়ে জল স্প্রে করতে হবে। চার-পাঁচদিনের মধ্যে মাশরুম উৎপাদন হবে। একবার মাশরুম কেটে নেওয়ার এক সপ্তাহ পর আবারও একই ব্যাগ থেকে মাশরুম মিলবে। এভাবে একটি ব্যাগ থেকে তিনবার মাশরুম পাওয়া যায়। মাশরুমের উৎপাদন তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার উপর নির্ভর করে। ঝিনুক মাশরুম উৎপাদনের জন্য ২৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা ও ৭০-৮০ শতাংশ আর্দ্রতা প্রয়োজন। দুধ মাশরুমের জন্য একই আর্দ্রতার প্রয়োজন হলেও তাপমাত্রা প্রয়োজন ৩৫ ডিগ্রি। বোতাম মাশরুমের জন্য অপেক্ষাকৃত অনেক কম তাপমাত্রা ১০-১২ ডিগ্রি লাগে। মাশরুম উৎপাদনের প্রশিক্ষণ নেওয়া মহিলারা জানিয়েছেন, ৫-৬ মাসের পুরনো ধানের খড় কেটে তাকে সেদ্ধ করার পর ঠাণ্ডা করে তাতে জিপসাম মেশাতে হবে। পলিথিনের প্যাকেটে একেবারে নীচে থেকে এক ইঞ্চি খড় তার পর মাশরুমের বীজ বা স্পন সাজাতে হবে। এভাবে দশটি স্তর সাজিয়ে তৈরি হবে একটি বেড। এবার বেডের মুখ বন্ধ করে দিতে হবে। দশদিন বাদে মাশরুম বের হলে বেডের মুখ খুলে দিতে হবে। ২০ দিন বাদে স্প্রে করে দুই দিন অন্তর জল দেওয়া দরকার। দুধ মাশরুমে জৈবসার হিসেবে কেঁচোসার আর বালি দেওয়া যেতে পারে। বোতাম মাশরুমে অবশ্য এসব কিছুই দরকার হয় না।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রতিটি বেড থেকে ২ কেজি করে তিনবার অর্থাৎ ৬ কেজি দুধ মাশরুম বা বোতাম মাশরুম পাওয়া যায়। বাজারে দেড়শো টাকা করে কেজি, অর্থাৎ ৬ কেজি মাশরুম বিক্রি করে ৯০০ টাকা আয় হতে পারে। বিভিন্ন স্কুলে এখন মিড ডে মিলে মাশরুম দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রাজ্য সরকারের সুফল বাংলার স্টলে মাশরুম বিক্রির সুযোগ রয়েছে।