বিতর্ক-বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম-পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থোপার্জনের সুযোগ।প্রতিকার: অন্ধ ব্যক্তিকে সাদা ... বিশদ
এমনিতে তিনি ঘরকুনো। তবে, ছবির কাজে আউটডোরে গেলে দেড়-দু’মাস কেটে যায়। তারপর ফিরে বাড়ির লোকের সঙ্গেই গল্প করে সময় কাটে। রান্নাবান্না করতে পছন্দ করেন। বন্ধুরা তাঁকে মজা করে বলেন, ‘ফুলটাইম শেফ, পার্টটাইম অ্যাক্টর’। তবে, এই দীর্ঘ লকডাউনের সময়টা অভিনেতা দিব্যেন্দু ভট্টাচার্যের বেশ ব্যস্ততার মধ্যেই কেটেছে। ‘পরপর কয়েকটা কাজ মুক্তি পেল। ঘরে বসেই সাংবাদিক সম্মেলন, প্রোমো শ্যুট, সাক্ষাৎকার দিচ্ছি’, বলছিলেন তিনি। তবে, মুম্বইয়ের কোভিড পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। তাই সারাক্ষণ একটা অস্বস্তি এবং আতঙ্ক নিয়ে থাকতে হচ্ছে।
দিব্যেন্দুর বাবা-মা-বোন থাকেন কলকাতাতেই। ‘মার্চ মাসে কলকাতায় যাওয়ার কথা ছিল। টিকিটও কাটা ছিল। সেই সময়ই তো লকডাউন হয়ে গেল। এখানে আমার স্ত্রী এবং সন্তান আছেন। আমার স্ত্রীও ধারাবাহিকে কাজ করেন। বোনের ভরসাতেই বাবা-মাকে রেখে এসেছি’, বলছিলেন দিব্যেন্দু।
সম্প্রতি সোনি লিভ ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ‘আনদেখি’ নামে একটি ওয়েব সিরিজ মুক্তি পেয়েছে। সুন্দরবন অঞ্চলে এক পুলিস আধিকারিকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে নিখোঁজ দুই মহিলা। সেই রহস্যের কিনারা করতেই ময়দানে পশ্চিমবঙ্গ পুলিসের ডিএসপি বরুণ ঘোষের উদয়। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিব্যেন্দু। ‘আমি প্রতিটা চরিত্রকে পছন্দ করি। প্রতিটা চরিত্রের গভীরে গিয়ে সেই মানুষটাকে বোঝার চেষ্টা করি। নতুন, মানুষকে জানার একটা ইচ্ছা থাকে। সেটা ছোট-বড় যেমন চরিত্রই হোক না কেন। আর বরুণ ঘোষ চরিত্রটা যেন একেবারে বাস্তবের মাটি থেকে উঠে আসা। ধীরে ধীরে চরিত্রটিকে সামনে নিয়ে আমার অভিনয়সত্তাটিকে পিছনে নিয়ে যাওয়া, এটা করে থাকি’, বোঝাচ্ছিলেন দিব্যেন্দু।
কলকাতাতে থাকার সময় থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। তারপর ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামাতে পড়াশোনা করতে যান। যে কোনও চরিত্রকে গভীরতার মাপকাঠিতে মেপে নিয়ে অভিনয় করার অভ্যাস তাঁকে এনএসডি শিখিয়েছে। বলছিলেন, ‘এনএসডিতে প্রচুর গুণী মানুষের সান্নিধ্য পেয়েছি। তাছাড়াও কলকাতায় থিয়েটার করার সময় অনেক মানুষকে দেখেছি। উৎপলেন্দু চক্রবর্তীকে দেখে আমার থিয়েটার করার ইচ্ছে হয়। এনএসডি রেপার্টরিতেও কাজ করেছি।’
শুধু তাই নয়, মুম্বইয়ে প্রথম সারির অধিকাংশ পরিচালকদের সঙ্গেই কাজ করা হয়ে গিয়েছে তাঁর। প্রথম ছবি ছিল মীরা নায়ারের সঙ্গে। তারপর বিশাল ভরদ্বাজ, অনুরাগ কাশ্যপ, বিক্রম ভাট প্রমুখের পরিচালনায় কাজ করেছেন দিব্যেন্দু। সুমন মুখোপাধ্যায়ের ছবিতেও কাজ করেছেন। বলিউড এখন নেপোটিজম বিতর্কে উত্তাল। তবে দিব্যেন্দুকে বলিউডে স্বজনপোষণের আঘাত এখনও সহ্য করতে হয়নি। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি আমার নিজের কাজ করে যাচ্ছি। নিজের কাজ করে যাব।’
ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও কিন্তু দিব্যেন্দু যথেষ্ট সপ্রতিভ। ‘সেক্রেড গেমস’, ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস’, ‘দিল্লি ক্রাইম’-এর মতো জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন। ওয়েব সিরিজ মানেই কি দর্শক ক্রাইম ঘরানা পছন্দ করেন? দিব্যেন্দুর কথায়, ‘এখানে কনটেন্ট শেষ কথা বলে। শুধু থ্রিলার নয়। এখানে কমেডি, সোশ্যাল ড্রামা সবই থাকে। আসলে থ্রিলার আমাদের চিরকালই ভালো লাগে। আমাদের বড় হয়ে ওঠা তো ফেলুদা, ব্যোমকেশের গল্প পড়েই।’ আগামী কাজ কবে শুরু হচ্ছে? এই কথা জিজ্ঞেস করতেই দিব্যেন্দুর কণ্ঠে কবীর সুমনের গান, ‘আশা নিয়ে ঘর করি, আশায় পকেট ভরি। পড়ে গেছে কোন ফাঁকে চেনা আধুলি...’