পুজোপাঠে ও সাধুসঙ্গে মানসিক শান্তিলাভ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কর্মোন্নতি ও উপার্জন বৃদ্ধি। ... বিশদ
তাই সতর্ক থাকা ভালো আগেভাগেই। সন্তানের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তনই কিন্তু বলে দিতে পারে আদৌ ওর মধ্যে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কি না। কী কী সেই পরিবর্তন? আমরা জানব। তবে তার আগে জেনে নেওয়া ভালো, কিছু কিছু অসুখের কারণেও সন্তানের মধ্যে অপরাধমূলক কাজকর্ম করার প্রবণতা বাড়তে পারে। এমন কিছু অসুখ হল অ্যান্টি সোশ্যাল পার্সোনালিটি, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া, সাবস্ট্যান্স অ্যাবিউজ (মদ, গাঁজা, ড্রাগ সেবনের অভ্যেস)।
লক্ষণ কী কী
• সন্তান কি ঘনঘন মিথ্যা বলছে? বার বার স্কুল-কলেজের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে অন্য কোথাও যাচ্ছে? বাড়ি থেকে চুরি করছে টাকা? একাধিকবার অন্যকে মারধর, গালিগালাজ করার মতো ঘটনার অভিযোগ আসছে ওর বিরুদ্ধে? অবশ্যই সাবধান হন।
• কিছু কিছু ছেলে-মেয়ের মধ্যে চরম পর্যায়ের সন্দেহবাতিকতা লক্ষ করা যায়। তারা বারংবার বলে কেউ তাকে মারতে চায়। রাস্তায় লোকজন তাকে নিয়ে কথা বলছে বা খাবারে কেউ বিষ মিশিয়ে দিতে পারে! চিকিত্সা না হলে উপসর্গ ক্রমশ বাড়তে থাকে। এই ধরনের লক্ষণ অনেক ক্ষেত্রে সিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিজঅর্ডারের দিকেও ইঙ্গিত করে। এই ধরনের রোগীর মধ্যে সন্দেহবাতিকতার ব্যাপারটা এতটাই প্রাধান্য পেয়ে যায় যে অনেকসময় শুধু সন্দেহ করে খুন করার ঘটনাও ঘটিয়ে ফেলতে পারে। এই রোগীরা ছোট বয়স থেকেই তেমন সামাজিক হয় না। অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখে, নিজের মনে বিড়বিড় করে ইত্যাদি। অতএব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।
• ডিপ্রেশন থাকলেও অনেকসময় তা হিংস্রতার প্রকাশ ঘটাতে পারে। বয়ঃসন্ধিকালের স্কুল পড়ুয়া বা কলেজ স্টুডেন্টদের মধ্যে ডিপ্রেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল প্রেম ভেঙে যাওয়া। ‘আমার সঙ্গেই কেন এমন হল, আমার এমনটা প্রাপ্য ছিল না!’ এইসমস্ত ভাবনা থেকে সে উল্টোদিকের মানুষকে শারীরিকভাবে আঘাত করতে পারে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিতে পারে মর্ফড ভিডিও!
• সাবস্ট্যান্স অ্যাবিউজ বা মদ, গাঁজা, ড্রাগ সেবন নিয়ে দু’কথা বলা দরকার। কারণ নেশাগ্রস্তদের মধ্যেও অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। জানলে অবাক হবেন, কিছু ক্ষেত্রে স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যেই এমন নেশা করার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। সুতরাং মাঝেমধ্যেই সন্তান রাতে বাড়ি ফিরছে না, গ্রুপ স্টাডির নামে বন্ধুর বাড়িতে থাকছে আর সকালে ওকে তেমন প্রকৃতিস্থ লাগছে না এমন মনে হলে সাবধান হন।
• বিভিন্ন প্রাণী বা বয়স্ক ব্যক্তি, শারীরিকভাবে দুর্বল ব্যক্তির উপর বিনা কারণে অত্যাচার করছে কি? করলে সাবধান।
আটকাবেন কীভাবে
• সন্তান স্মার্টফোনে, টিভিতে কী দেখছে তার দিকে থাকুক নজর। মাত্রাতিরিক্ত হিংসা, বলপূর্বক শরীরের দখল নেওয়ার দৃশ্যে ভরপুর ভিডিও দেখতে থাকলে ছোটরা ধীরে ধীরে ওই চরিত্রের সঙ্গে নিজেদের মেলাতে থাকে!
• ও লুকিয়ে নেশা করছে কি না তা জানার জন্য ওর ঘর, ব্যাগ অগোচরে পরীক্ষা করুন। কোনও প্রমাণ পেলে সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ে বিরাট অশান্তি করবেন না। ধীরেসুস্থে ওকে বোঝান যে কেন নেশা করা খারাপ। • কিছু স্টেরয়েড সেবনকারীদের ব্যায়ামবীরদের মধ্যে স্টেরয়েড রেজ বলে এক ধরনের জটিলতা প্রকাশ পেতে পারে। ফলে অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। • জীবনে সাফল্যের সঙ্গে একটু হতাশারাও প্রয়োজন আছে। একটু অপ্রাপ্তির বেদনা সহ্য করার ক্ষমতাও থাকা দরকার। বাচ্চা যা বায়না ধরছে সঙ্গে সঙ্গে তাকে তা দিয়ে দিলে হবে না। একটু অপেক্ষা করতে শিখুক বরং ও।
• সন্তান কোনও কিছুর দাবি করলে ওর সামনে লক্ষ্যমাত্রা রাখুন। • দরকারে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা মনোবিদের সাহায্য নিন।