শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
পড়তে ভালো লাগে
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ। এই সুযোগে অবশ্য আমি স্কুলের পড়ার বইয়ের পাশাপাশি ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় বেশ কয়েকটি মজাদার বই পড়ে ফেলেছি। আমার পড়া বইগুলি হল —টেনিদা সমগ্র, কাকাবাবু সমগ্র-১, মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি, গোঁসাইবাগানের ভূত, ফেলুদা সমগ্র-১ ও ২, সভ্যতার ইতিহাস, অভিযানের কথা, দেশে দেশে সভ্যতা, My first book of Earth and Space, Famous fairy tales, রামায়ণ, মহাভারত, Diary of a wimpy kid -Hard luck আর আমাদের পাখি। এই বইগুলির মধ্যে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে My first book of Earth and Space বইটি। বইটিতে আছে উপগ্রহ, মহাকাশ, আকাশ, পৃথিবী, জলাভূমি আর স্থলভূমির সম্পর্কে অনেক জানা-অজানা তথ্য। সেজন্য এই বইটি আমার খুব ভালো লেগেছে। তবে ‘আমাদের পাখি’ বইটিও অসাধারণ। বইটিতে অনেক জানা-অজানা পাখি সম্বন্ধে লেখা আছে। তাদের অনেক ছবি আছে। সব মিলিয়ে বইটি আমার প্রিয় হয়ে উঠেছে।
অদ্রিজা মণ্ডল, চতুর্থ শ্রেণী
সেন্ট মেরিজ কনভেন্ট স্কুল, সাঁতরাগাছি
ক্ষীরের পুতুল বইটি
এককথায় অসাধারণ
করোনার দাপটে স্কুল নেই, সহপাঠী নেই, খেলা নেই, বেড়ানো নেই। এই সময়ে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ক্ষীরের পুতুল’ বইটি পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে। এক রাজার দুই রানি। বড় রানি দুও আর ছোট রানি সুও। দুটো রানির পোষা বাঁদর ফন্দি করে একটা ক্ষীরের পুতুলকে ষষ্ঠী ঠাকরুন ও বেড়ালদের খাওয়ায়। এর পরিবর্তে একটা পুত্র-সন্তান আদায় করে। সেই পুত্রের সঙ্গে এক রাজকন্যার বিয়ে দেয়। এতে রাজা খুশি হয়। দুও রানির দুঃখ ঘোচে। ক্ষীরের পুতুল গল্পটি সহজ সরল ভাষায় লেখা। তাই আমার খুব ভালো লেগেছে। এটি একটি রূপকথার গল্প। বাংলাদেশের অন্যান্য রূপকথার বয়ানে গল্পটি লেখা হলেও এই গল্পের একটা নিজস্বতা আছে। তাই তাঁর লেখার মধ্যে আমরা শিল্পের ছোঁয়া পাই। আমার মতে, এই গল্পটি রূপকথার জগতের বড় সম্পদ।
প্রত্যুষা সেন, তৃতীয় শ্রেণী
মাহেশ্বরী গার্লস স্কুল
মজার গল্পবই পড়েছি
লকডাউন কথাটা আমি আগে কোনওদিন শুনিনি। সব কিছু বন্ধ, শুনশান। বাড়ির বাইরে বের হওয়ার উপায় নেই। পড়াশোনা চলছে অনলাইনে। দমবন্ধকর অবস্থা আমার। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা নেই অনেক দিন। এই অবস্থায় আমার একমাত্র সঙ্গী গল্পের বই। সত্যজিৎ রায়ের কিছু বই যেমন গুপি গাইন বাঘা বাইন গল্পটা পড়েছি। গল্পটা খুব মজার। গুপি ও বাঘা নামে দুইজন ভারী মজার লোক ছিল। দু’ জনকেই তাদের রাজা বেসুরে গান ও বেসুরে ঢাক বাজানোর জন্য বের করে দিয়েছিল গ্ৰাম থেকে। এরপর বাঁশবনে তাদের দেখা, ভূতের
রাজার বর দেওয়া, মণিমুক্তো আরও কত কি যে গল্প তার না পড়লে বোঝাই যেত না।
আবার কোথাও পড়ছি যে, রাজা নাকি নিজের মূর্তি নিজেই ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন। মুখে বলছেন দড়ি ধরে মার টান রাজা হবে খান খান। হ্যাঁ ঠিক ধরেছ হীরক রাজার দেশে। সেখানে যন্তর মন্তর ঘর আছে। বশ করার আলাদা আলাদা মন্ত্র। রাজার বিরুদ্ধে কথা বললেই বিপদ। কী বাজে রাজা। কী দারুণ কল্পনা লেখকের! এখানেই শেষ নয় বরং শুরু গোয়েন্দাগিরি। রাজস্থানের উটের গল্প। সোনার কেল্লা! মুকুল, ফেলুদা, তোপসে, জটায়ু দারুণ সব লেখা। না পড়লে মিস করতাম অনেক কিছু। অনেক কিছু বাকি আছে পড়তে। বাকি ছুটিতে অনেক কিছু শেষ করার আশা রাখি।
আদৃতা মুখোপাধ্যায়, তৃতীয় শ্রেণী
রামকৃষ্ণ সারদা মিশন সিস্টার নিবেদিতা গার্লস স্কুল
চাঁদের পাহাড় ও
পথের পাঁচালী
করোনা ভাইরাসের জন্য আমরা খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু, সব খারাপের মধ্যে কিছু ভালো দিক আমি খুঁজে পেয়েছি। দীর্ঘ অবসর সময়ে পাঠ্যবইয়ের বাইরে নানা ধরনের
বই পড়েছি। গল্প, উপন্যাস পড়ে ফেলার সুযোগ আমার হয়েছে।
আমার পড়া প্রিয় বই হল —সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা অ্যাভভেঞ্চারমূলক উপন্যাস ‘চাঁদের পাহাড়’। এটি আমি পাঁচবারের বেশি পড়েছি। প্রত্যেকবার বইটি আমার কাছে ধরা দিয়েছে নতুনভাবে। বইটি পড়ার সময় যেন আমি ঘরে বসেই পৌঁছে যাচ্ছিলাম আফ্রিকায়। আমার প্রিয় চরিত্র আলভারেজ। আলভারেজের অদম্য সাহস আর প্রখর বুদ্ধি আমায় সব সময় প্রেরণা আর সাহস জোগাতে সাহায্য করবে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘পথের পাঁচালী’ও আমি ছুটির অবসরে তিনবার পড়ে ফেলেছি। ছোট ছোট দুই শিশু অপু ও দুর্গার একটু খাবারের প্রত্যাশায় বনের মধ্যে অবাধ বিচরণ, হরিহর-সর্বজয়ার অভাবের সংসার। সর্বজয়া অসহনীয় দারিদ্র্য, অনাহার অর্ধাহারে থাকতে থাকতে হয়ে উঠেছে মুখরা, স্বার্থপর, বিধবা ইন্দির ঠাকরুনকে মনে হয় গলগ্রহ। তবু সে স্বামীর জন্য অপেক্ষা করে, সন্তানদের মুখে দুটো অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে। দুর্গার বিনা চিকিৎসায় আকস্মিক মৃত্যু আমার চোখে বারবার জল এনে দেয়। রেলগাড়ি দেখার অদম্য কৌতূহল বুকে নিয়ে দুর্গা আর অপুর মাঠের পর মাঠ, খেত পার হয়ে ছুটে চলা, ঝড়-বাদলের ভয়ঙ্কর রাতে দুর্গার চলে যাওয়া... কাঁদতে কাঁদতে আমার
মনে যে ভালো লাগার অনুভূতি তা এখনও আমার সমস্ত মনে ছড়িয়ে রয়েছে। গল্পের বই পড়তে আমি
খুব ভালোবাসি। অবসর সময় ছাড়া
লুকিয়ে লুকিয়ে বই পড়ার জন্য মা-বাবার কাছে বকা খেয়েছি।
সায়ক বসু মল্লিক, দশম শ্রেণী
গভর্নমেন্ট স্পন্সর্ড মাল্টিপারপাস স্কুল ফর (বয়েজ) টাকি হাউজ
বিজ্ঞান নিয়ে দুটি
মূল্যবান বই পড়লাম
করোনা ভাইরাসের দাপটে প্রায় বছরভর স্কুল বন্ধ,যা আমাদের পক্ষে খুবই ক্লান্তিকর এবং একঘেয়েমি। এই একঘেয়েমি কাটানোর জন্য সবারই বই পড়া উচিত। তাই আমি কয়েকটি বই পড়েছি। এই বইগুলির মধ্যে দুটি বই খুব ভালো লেগেছে। প্রথমটি ‘দ্যা ব্রিফ হিসট্রি অফ টাইম’ প্রখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংস-এর লেখা কসমোলজি-র ওপর। বইটিতে বিগ ব্যাং, ব্ল্যাকহোল এবং লাইটকোন্স সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। এছাড়া টাইম ট্রাভেল, ওর্য়ামহোল এবং সময়ের শুরুতে কোয়ান্টাম সিঙ্গুলারিটি ছাড়া মহাবিশ্বের অস্তিত্বের সম্ভাবনা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, বইটিতে শুধু একটি সমীকরণই রয়েছে : E= mc2। তাঁর মতে বেশি সমীকরণ দিলে পাঠকের সংখ্যা কমে যাবে। দ্বিতীয় বইটি হল ‘রিলেটিভিটি: দ্যা স্পেশাল এন্ড দ্যা জেনারেল থিওরি’। বিশ্বের অন্যতম বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন-এর মৌলিক রচনা। আইনস্টাইন খুব সহজ ভাষায় কোনওরকম গাণিতিক সমীকরণ এবং পদার্থবিদ্যার সূত্র ছাড়াই সাধারণ মানুষকে তাঁর কাজের ধারণা দিয়েছেন। বইয়ের প্রথম অংশটি স্পেশাল রিলেটিভিটি, দ্বিতীয়টি জেনারেল রিলেটিভিটি ও শেষ অংশটি সামগ্রিক বিশ্বকে বিবেচনা করে। আমার মতে মহাবিশ্বকে জানার জন্য এই বই দুটি পড়া উচিত।
অভীক রানা, দশম শ্রেণী
রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ের (উচ্চ মাধ্যমিক)
সব ধরনের গল্পবই
পড়তে ভালোবাসি
স্কুলের পড়ার ফাঁকে পাঠ্যবইয়ের বিভিন্ন গল্পের চরিত্রগুলো খাতার মলাটে আঁকার মতো বাংলা গল্পের বই পড়ার নেশা আমাকে বাংলা সাহিত্য ও ছোট গল্প সম্বন্ধে অনেক তথ্য জানতে সাহায্য করেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সত্যজিৎ রায়, সুকুমার রায় ও উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর অনেক গল্পের বই পড়ার সুবাদে যে সকল গল্প চরিত্র আমার স্মৃতিতে সব সময় আনাগোনা করে তার মধ্যে ‘উপেন্দ্রকিশোর রচনা সমগ্র’-এর টুনটুনির চরিত্র প্রধান। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা ছোট গল্পের মধ্যে ‘টুনটুনির আর বেড়ালের কথা’, ‘টুনটুনি আর নাপিতের কথা’, ‘টুনটুনি আর রাজার কথা’ এই গল্পগুলি আমার প্রিয়। এই সব গল্পে ছোট একটি পাখি টুনটুনি বুঝিয়ে দিয়েছে যে ‘বল’-এর থেকেও ‘বুদ্ধি’ বড়। তাই এই চরিত্রটি আমার সবচেয়ে প্রিয়। স্কুলের বন্ধুদেরকেও ছোটগল্প পড়তে বলি যাতে আমরা জীবনে চলার পথে এই রকম অনেক উপদেশ সংগ্রহ করতে পারি।
দেবমাল্য চট্টোপাধ্যায়, ষষ্ঠ শ্রেণী
এপিজে স্কুল, সল্টলেক
অনেক বই পড়েছি
করোনা ভাইরাসের জন্য এতদিন স্কুল বন্ধ। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে সময়টা বেশ কঠিন। যাইহোক এসময় স্কুলের পড়ার বাইরে অবসরে ভূতের বই, গোয়েন্দার গল্প, হাসির জোকস প্রভৃতি বই পড়েছি। স্কুল চলাকালীন পড়াশোনা ব্যস্ততায় গল্পবই পড়ার সময় পেতাম না। তাই টানা ছুটি পেয়ে মনের মতো গল্পবই পড়েছি। কিশোর সাহিত্যিক হিমাদ্রীকিশোর দাশগুপ্তর গল্পও আমার ভালো লাগে। সেগুলো পড়েছি। এছাড়া কাকাবাবু সমগ্র, প্রফেসর শঙ্কু এগুলোর স্বাদ আবার নতুন করে নিলাম।
রিশিতা মুখোপাধ্যায়, দশম শ্রেণী
টাকি হাউস গভঃ স্পন্সর্ড
গার্লস হাইস্কুল