Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

পিশাচ সাধু
পর্ব  ১০

জয়ন্ত দে: তেত্রিশ দিন হয়ে গেল অথচ সহজের জীবনে ক্যাপ্টেনের করা ভবিষ্যদ্বাণী মিলল না। পরমেশ্বরের কথা শুনে ক্যাপ্টেনকে ফোন করে সহজ বলে দিল, ‘আপনি ফ্লপ! আপনার ভবিষ্যদ্বাণী ফ্লপ!’ সেদিন রাতেই বাড়ি ফিরে বাবার কাছ থেকে সহজ জানতে পারল, তার নামে একটি অফিসিয়াল চিঠি এসেছে। তারপর...
  এই ঘরের অনেকটা জায়গা মাটির। খুব সুন্দর করে জায়গাটা নিকিয়ে রাখে বঁড়শি। যাবতীয় পুজোআচ্চার আয়োজন এখানেই হয়।  দু’হাত জায়গা জুড়ে বালির বিছানা করা। তারই এক ধারে হয় যজ্ঞের আয়োজন। বঁড়শি দেখল তার স্বামী সেই মাটির জায়গায় লম্বা হয়ে শুয়ে আছে। একটু আগে পাশের গোলা থেকে খবর দিল ফোন আছে—। ফোন ধরে এসেই মানুষটা চুপচাপ শুয়ে পড়লেন। বঁড়শি এসে বসল ওঁর মাথার কাছে। বলল, ‘কী হয়েছে?’
মানুষটা চুপ করে থাকলেন। বঁড়শি আবার বলল, ‘ও ক্যাপ্টেন কী হয়েছে?’
বঁড়শির মুখে ‘ক্যাপ্টেন’ শুনে মানুষটা চোখ চেয়ে তাকালেন। ‘তুই আবার আমাকে ক্যাপ্টেন বলছিস কেন?’ 
এক-একজন মানুষ থাকে যাদের অভিধানে বিরক্ত শব্দটা থাকে না। সেই জায়গায় থাকে রাগ। বঁড়শি জানে এই মানুষটাও সেই গোত্রের। পছন্দ না হলেই রেগে যান। নাহলে সব কিছু ঠিক আছে। আজ মানুষটা যেন বিরক্ত হলেন। চোখে আগুন নেই। কেমন যেন একটা ভাব! বললেন, ‘ক্যাপ্টেন বলে ওই লুচ্চা লাফেঙ্গারা, তুই কেন ক্যাপ্টেন বলবি?’
বঁড়শি ফিক করে হাসল। 
খুব ছোট ছোট দাঁত বঁড়শির। হাসলে নীচের পাটির দাঁত দেখা যায় না। পাতলা ঠোঁট। কিন্তু ঠোঁট আর নাকের গঠন একটু ভালো করে দেখলেই বোঝা যায়, এ মেয়ের দাপট আছে। কথা বলার আগে-পরে ঠোঁট নাক সবসময় পরস্পরকে ঠেলা মারছে। 
‘কেন আমি ভালো নাকি? আমিও তো লুচ্চা!’ বঁড়শি শুধু কথা বলল না, এটুকু কথায় এমন ঠোঁট মোচড়াল!
মানুষটা অদ্ভুত চোখে তার দিকে তাকালেন। বললেন, ‘না, তুই ক্যাপ্টেন বলবি না। আমি তোর ক্যাপ্টেন নই, আমি তোর বর।’
বঁড়শি বরের মাথায় হাত বোলাল, বলল, ‘আমার সাধু!’
‘পিশাচ সাধু!’
‘ওই আপনার এককথা। পিশাচ শুনলেই আমার গায়ের মধ্যে কেমন রি রি করে ওঠে—।’
সাধু একটা হাত বাড়িয়ে মাথার পাশে বসে থাকা বঁড়শির কোমর জড়িয়ে ধরেন আলতো করে। এত সরু কোমর সাধুর একহাতের পাকেই পুরোটা চলে আসে। তিনি বলেন, ‘কোন গা— আমাকে দেখা, দেখাস না তো কখনও!’
‘উহু! খুব শখ। বিষ নেই কুলোপনা চক্কর!’ সাধুর হাতটা নিয়ে ছুঁড়ে দেয় বঁড়শি। ‘হঠাৎ ফোন ধরে এসে আছাড় খেয়ে শুয়ে পড়লেন কেন? কে ফোন করেছিল বলুন আমাকে, দেখি সে কে?’
‘পিশাচ সাধুকে কে ফোন করতে পারে বল?’ ম্লান মুখে হাসলেন তিনি, ‘পিশাচকে ফোন করবে ভূত প্রেত পেতনি শাকচুন্নি!’
‘শুনুন ভূত প্রেত ফোন করুক দুঃখ নেই, কিন্তু কোনও পেতনি শাকচুন্নি এদিকে তাকালে তার চোখ গেলে দেব। এবার বলুন কে ফোন করেছিল, শঙ্করবাবু নাকি?’
‘না।’
‘তবে?’ বঁড়শি ছাড়ার পাত্রী নয়। তার দু’চোখ এখন স্থির হয়ে— ভাবছে। ঠোঁট আর নাকে চিন্তার রেশ। ফুলে উঠছে, কাঁপছে।
পিশাচ সাধু চুপ করে থাকেন। তারপর আক্ষেপের সুরে বলেন ‘পিশাচ! পিশাচ! ভালো কথা মেলে না। মিলবেও না। অথচ খারাপ কথাগুলো টপাটপ মিলে যায়। একটাও ভালো কথা কি আমি বলতে পারব না কোনওদিন। শালা বলে আমার পাওয়ার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাওয়ার ছিলই না কোনওদিন, নষ্ট কী হবে? ঢপ! ঢপ! ঢপ দিলেই মিলে যায়, আমি সাধু! আমি পিশাচ সাধু!’
বঁড়শি ঠোঁট টেপে, ‘অত পিশাচ পিশাচ করবেন না। খারাপ কথা বলেন কেন? আপনার আগের বউগুলো বড্ড ফালতু ছিল। তারা আপনাকে একদম গাইড করেনি। আপনার জীবনে আমি যদি আগে আসতাম— আপনাকে দিয়ে ভালো ভালো কথা বলাতাম। খারাপ কথা বলতেই দিতাম না। খারাপ কথা বলেন বলেই আপনার নিজেকে পিশাচ পিশাচ লাগে। পচা দুর্গন্ধ টের পান! কই আমার তো আপনাকে পিশাচ লাগে না, সাধুই লাগে। কারণ আপনার সাহস নেই আমাকে খারাপ কথা বলার। জানেন, বঁড়শিকে একটা খারাপ কথা বললে সে ধুরধুরি নেড়ে দেবে। বঁড়শি যে সে মেয়ে নয়! সে ফোঁস করতে জানে।’
‘তার ছোবলও আছে।’ পিশাচ সাধু বিড়বিড় করেন। ‘হ্যাঁ, সে ছোবলে বিষও আছে! এবার ঝেড়ে কাসুন কে ফোন করল?’
‘বললাম তো ভূত প্রেত!’
‘ওই ছেলেটা নচে? নচে কি অপঘাতে মরল?’
‘নচে কেন অপঘাতে মরবে?’
‘কেন মরবে না? সেদিন তো গলাবাজি করে বলে এলেন— তুই অপঘাতে মরবি। বেচারা আমাদের যত্ন করে মাছ, মাংস খাওয়াল। আর আপনি তাকেই কি না কালো বিল্লি দিয়ে কেটে এলেন! তবে কি ওই ছেলেটা— যার হাতে তেত্রিশদিনের মাদুল কবজ বেঁধে দিয়ে এলেন? বলে এলেন— তোর ভাগ্য খুলে যাবে? তার তেত্রিশ দিন কি হয়ে গেল? ফক্কা! মেলেনি বুঝি!’
পিশাচ সাধু চকিতে বঁড়শির দিকে তাকাল। এ মেয়ে সাধারণ নয়! ঠোঁট কেন আলটাগরাতেও নয়, এ মেয়ে তো বুকের ভেতর বঁড়শি বিঁধিয়ে ফুসফুস থেকে হাওয়ামাখা কথা টেনে আনে। ঠিক ধরে ফেলল কথাটা। পিশাচ সাধু একটু নড়ে উঠলেন।
বঁড়শি বলল, ‘ফোন করে ডেকে সেই সংবাদটাই দিল— ক্যাপ্টেন তেত্রিশ দিন হয়ে গিয়েছে, তোমার কথা মেলেনি। তুমি একটা ঢপ। ব্যস, তাতেই আপনি মুঝড়ে ঩গিয়ে যজ্ঞের মাটিতে এসে পড়েছেন। তাই তো! ভালো কথা বলেছেন— মেলেনি। এই দুঃখ! আপনার খারাপ কথা মিলে যায়, ভালো কথা মেলে না।’
পিশাচ সাধু চুপ করে বঁড়শিকে দেখছিলেন। তার উনিশ মাসের বিয়ে করা বউ। তার ছিয়াত্তর, বঁড়শির ছাব্বিশ! সে তো চায়নি এই মেয়েকে বিয়ে করতে। জুটিয়েছিলেন যেমন, ভাগানোর জন্যও অনেক কসরত করেছেন। এ মেয়ে এমন গলা জড়িয়ে ধরে যে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। তবু ছাড়ানো গেল না। কম ঝটকা তো দিলেন না।
দেখা হয়েছিল কালীকঙ্কালী তলায় যোগীনবাবার আশ্রমে। রাতে ঘুমের মধ্যে যোগীনবাবা মরল। সে এক হইহই ব্যাপার। সাতসকালে ‘বাবা’ ‘বাবা’ করে এক ভক্তরা ডাকতে এসে দেখল, যোগীনবাবা মরে কাঠ। মুখের কাছে এক কলসি বমি। নিজের ঘরে বমি করে মরেছে। বড্ড কষ্ট পেয়েছ গো! সারারাত ধরে কাতরেছে হয়তো, অথচ কেউ জানতে পারেনি। সন্ধেবেলা গাঁজা টেনেছিল একসঙ্গে,  কত কথা বলল। অথচ ভোর না হতে হতেই মরে কাঠ! রাতে প্রসাদ নিল, তারপরেই নিশ্চয়ই অঘটনটি ঘটেছে। 
সাধু সন্ন্যাসীরা মরলে ডেথ সার্টিফিকেট লাগে না। কিন্তু এক্ষেত্রে কয়েকজন ভক্ত বললে, উহুঁ বাবাকে কেউ বিষ দিয়েছে। বিষ দিয়ে মেরেছে। ডাকো ডাক্তার। ডাক্তার এসে বলুক যোগীনবাবার মৃত্যু স্বাভাবিক। 
কিন্তু ডাক্তার এসে ঘোরতর সন্দেহ প্রকাশ করল। বলল, স্বাভাবিক তো ঠেকছে না, বরং বড্ড অস্বাভাবিক। পোস্টমর্টেম করাতে হবে। পুলিস কেস!
কয়েকজন ভক্ত আপত্তি তুলল, না, না, এটা পাপ হবে। বাবাকে কেন কাটা ছেঁড়া করবে ডোমেরা? কয়েকজন বলল, সন্দেহ যখন আছে, তখন দেখে নেওয়া দরকার, কে এই কাজটা করল? 
সারা আশ্রম জুড়ে হইচই। আকচাআকচি। তবে বেশিরভাগ ভক্তই মনে করল, এটা ঠিক নয়, সন্দেহের বশে বাবার দেহ তুলে নিয়ে গিয়ে কুকুর ছাগলের মতো কাটাকাটি করলে মারাত্মক কাণ্ড হবে। প্রলয় ঘটে যাবে। আর যোগীনবাবাকে কে বিষ দেবে? কার এত সাহস যে, বাবাকে বিষ দেবে, আর বাবা টেরটি পাবেন না, খেয়ে নেবেন! না এ হতেই পারে না। 
কেউ কেউ আবার প্রমাদ গুনলেন বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটলে পুলিস কাউকে ছাড়বে না। সবাইকে আটকে রেখে দেবে এই আশ্রমে, টানাটানি করবে। আর বিষ প্রয়োগের কথা বাইরে ছড়ালে কেউ কোনও দিন বাবার আশ্রমে আসবে না। এই আশ্রমে ঘুঘু চরবে। বেশিরভাগ ভক্তই বেঁকে বসল, বাবার দেহ তারা ছাড়বে না, পুলিস এলে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে যাবে। রটে গেল, বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁর দেহলীলা সঙ্গ হওয়ার লগ্ন আসন্ন। বাবা জানতেন— তিনি চলে যাবেন। তাই অনেক কাছের মানুষকে ডেকেছিলেন, ওই তো বিরাজীবাবাকে ডেকেছেন। ওই তো কাছের মানুষ পিশাচসিদ্ধ মিলিটারি ক্যাপ্টেন সাধু এসেছেন। এঁরা কেন আসবেন?
পিশাচ সাধু অল্প বয়সে মিলিটারিতে চাকরি করতেন। সাধু মহলে তাঁকে অনেকেই ক্যাপ্টেন সাধু বলেন। তিনি নিজেকে যতই পিশাচ সাধু বলুন, সাধু মহলে তিনি ক্যাপ্টেন সাধু। যোগীনবাবা কেন ডেকে এনেছিলেন ক্যাপ্টেন সাধুকে। এই ডেকে আনার মানে শেষ সময়ে তাঁর সঙ্গ পাবেন বলে। 
শেষ পর্যন্ত সাধুদের ভক্তদের কথাই রাখা হয়। যোগীনবাবার দেহ আর পোস্টমর্টেম করা হল না। আশ্রম প্রাঙ্গণেই তাঁকে সমাধি দেওয়া হয়। পুলিস প্রশাসনও শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে। সেখানে আগেই ক্যাপ্টেনের সঙ্গে আলাপ হয় বঁড়শির। বঁড়শির বাবাও একজন সাধু ছিলেন। দেহ রেখেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। মায়ের কাছে থাকত বঁড়শি। মা মরল। তারপর সে চলে এসেছিল যোগীনবাবার কাছে। কিন্তু যোগীনবাবার আকস্মাৎ মৃত্যুতে বঁড়শি যখন ভাবছিল, সে কোথায় যাবে, তখনই ক্যাপ্টেন তাকে বলে— আমার সঙ্গে চ।
‘চ মানে? আপনার কি আশ্রম আছে?’
‘আশ্রম টাশ্রম নেই। আমি গৃহী। ঘরে থাকি।’
‘তাহলে আমি গিয়ে কী করব?’
‘আমার পুজোযজ্ঞের আয়োজন করে দিবি।’
‘আপনি তো গৃহী বললেন— আপনার বউ জোগাড় দেয় না?’
‘বউ থাকে ছেলেদের সঙ্গে। আমি একাই থাকি। যাবি তো চ। এখানে কী করবি? এখানে এখন খুব গোলমেলে কাণ্ড ঘটবে!’
একা মানুষ, বলছে যখন চলেই যাবে, বঁড়শি দ্বিধায় ভুগছিল। সে সাধু ছাড়া এ-জীবনে কারও সঙ্গে থাকবে না। আর এই লোকটাকে যোগীনবাবা বেশ খাতির করছিলেন। ভক্তদের বলছিলেন, এ লোক মিলিটারি ক্যাপ্টেন ছিল। মাথার ভূত নড়তে সাধু হয়েছেন গো। এ-জীবন বেছে নিয়েছেন। গৃহী সাধু। গৃহে থাকে সংসারধর্ম করেন। কিন্তু এ মস্ত মানুষ। বেশ কিছু চমৎকারী আছে ওঁর। পিশাচ সিদ্ধ! যোগযাগে এ ভয়ঙ্কর। তোরা এই বাবাকে বেঁধে রেখে দে এখানে, যেতে দিবি নে। এ আমার অনেক দিনের বন্ধুলোক! একে ডেকেছি কয়েদ করব বলে। তোরা সবাই বল— বাবা এখানে থাকো সাধন পূজন করো। ধ্যান জপ করো। এ আশ্রম তোমার। তোমার শ্রীচরণে আমাদের ঠাঁই দাও।
যোগীনবাবার কথা শুনে বঁড়শিও খুব খাতির করছিল পিশাচসাধুকে। আশ্রমে থাকা দিনগুলোয় সেবা করছিল। মানুষটা সারাদিন গুম মেরে বসে থাকেন। বড় একটা কথাটথা বলেন না। উচ্চস্বরে সাধনভজনও করেন না। বই পড়েন। হাঁ করে মানুষ দেখেন। তাকেও দেখে হাঁ করে। যেন গিলে খাবে।
বঁড়শি বলেছিল, ‘আগে এয়েছেন এখানে?’
‘আগে তোকে তো দেখিনি।’
‘আমি এই ছ’মাস এসেছি?’
‘কেন এসেছিস?’
‘বাড়িতে ভালো লাগে না। আমি বাবার পথে যাব, সংসার জীবনযাপন করব না। সারাজীবন সাধু সেবা করে কাটাব। তাই এয়েছি।’
‘বেশ করেছিস। এসেছিস যখন থেকে যা।’
কিন্তু বঁড়শি থেকে যেতে পারল কই। বঁড়শি বুঝতে পারছিল, বাবা ছাড়া এই আশ্রমে এখন খেয়োখেয়ি শুরু হবে। কে দখল নেবে এই আশ্রম তা নিয়ে যুদ্ধ চলবে। মা মরতে এই আশ্রমে এসে উঠেছিল, এখন সে আশ্রয়টুকুও গেল। 
পথে আসতে আসতে শুনল, এই লোক গৃহী। কিন্তু গৃহী বলে গৃহী। চরম গৃহী। আগে তিন তিনখানা বিয়ে করেছেন। এক গণ্ডা বাচ্চার বাপ। বঁড়শির যোগীনবাবার কথা মনে পড়ছিল, তবে এ লোক সাধন করল কবে, আর সংসারই বা করল কবে?
এ লোককে শক্ত হাতে ধরতে হবে।
শক্ত হাতে ধরেছিল বঁড়শি। মাঝে মাঝে মনে হতো, এ সাধু কোথায়? এ তো মাতাল। মদ খেয়ে নেশা করে, গাঁজা টেনে নেশা করে, শরীরেও নেশা করে। কিন্তু লোকটার চমৎকারী আছে। ওর ঠোঁটে প্রথম যেদিন হাত দিল। হাত দিয়ে বলল— কী লাল টুকটুকে!
বঁড়শি আয়না দেখল— তার ঠোঁট তো এত লাল ছিল না কোনওদিন। লোকটার আঙুলে কি রং ছিল! সে রংই ধরল বঁড়শির মনে। নইলে যখন বলল, ‘পালা এখান থেকে।’ 
বঁড়শি বলল, ‘পালাব বলে এয়েছি নাকি?’
‘তবে বিয়ে কর আমাকে।’
বঁড়শি ঘাড় নাড়ল, রাজি!
‘দু-বউ এসে কিন্তু তোকে ঠ্যাঙাবে।’
‘আমি তোমার পেতনি আর শাকচুন্নির চোখ গেলে দেব। আসুক না এখানে।’
বঁড়শি বলল, ‘উঠুন মাটি ছেড়ে। না মিলুক, তবু ভালো ভালো কথাই বলুন।’
(চলবে) 
25th  April, 2021
ছোট গল্প
সম্ভবামি যুগে যুগে

 

মহাপ্রস্থানের পথে অর্জুনের পতনের পর ভীম ও যুধিষ্ঠির আরও উত্তরদিকে এগিয়ে গেলেন। সেই বরফে ঢাকা শ্বেত প্রান্তরে মৃত্যুর অপেক্ষা করতে করতে অর্জুনের মন আসন্ন স্বর্গ না নরক এই দুর্ভাবনার  থেকেও শেষজীবনের পরাজয় ও হতাশায় আচ্ছন্ন হয়ে রইল। তিনি চিরকালের শৌর্যাভিমানী। বিশদ

25th  April, 2021
পিশাচ সাধু

 

হঠাৎ বর্ণিনীর সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়ে যায় সহজের। বনির গন্তব্য বিচিত্রদার বাড়ি। সহজকে সঙ্গী করে বনি। জনগণের স্বার্থে লড়াই করতে গিয়ে বহুবার পেটানি খাওয়া বিচিত্র ঘোষাল বিশ্বাস করে, এ দেশে একদিন বিপ্লব হবেই। কথায় কথায় বিচিত্রদাও সহজকে সাবধান করে দেয়, সে যেন পিশাচ সাধুর পাল্লায় না পড়ে। বিশদ

18th  April, 2021
মিষ্টু
উৎপল দাস

রিমা ভিতরে ভিতরে জ্বলে পুড়ে মরে। এ পৃথিবীতে কেউ নেই যে তার অবস্থা বোঝে। মিষ্টুকে বিদায় না করতে পারলে যেন ওর শান্তি নেই।  বিশদ

11th  April, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৮

সহজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় পরমেশ্বর শান্ত গলায় বলেছিল— বিচিত্রদা সেই বিরল মানুষ যারা এখনও মনে করে বিপ্লব হবে। কখন হবে, কীভাবে হবে কেউ জানে না, শুধুমাত্র একটা স্ফুলিঙ্গ। সেই স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল হয়ে যাবে। বিশদ

11th  April, 2021
বিদিশা কি ভানুমতী?
আশিস ঘোষ

বেশি কথা বা শব্দ, আলো এখন ভালো লাগছে না। বিদিশাকে বলতেই, ও টিউব লাইট নিভিয়ে জিরো পাওয়ারের নীল আলো জ্বালিয়ে দিল। জানলার পর্দা হাওয়ায় উড়ছে। বাইরের রাস্তায় গাড়ির শব্দ। বিদিশা আমার দিকে চেয়ে আছে। কিছুই বলছে না। বিশদ

04th  April, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৭
জয়ন্ত দে

দারোগা বাড়ির নিমন্ত্রণে ক্যাপ্টেন হঠাৎ উদয় হল কেন? এ প্রশ্ন সহজের মনে অবিরাম ঘুরপাক খাচ্ছে। নচের সঙ্গে কথা বলে মনে হল, ক্যাপ্টেনকে সেদিন দারোগা বাড়িতে পাঠিয়েছিল পরমেশ্বরের পার্টনার শঙ্কর। সহজের কাছে আস্তে আস্তে পরিষ্কার হতে থাকে পুরো স্কিমটা। এদিকে, ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণীর আতঙ্ক থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না নচে। তারপর... বিশদ

04th  April, 2021
দহ
হামিরউদ্দিন মিদ্যা

ঘুম-জড়ানো চোখেই ধড়ফড় করে উঠে দাঁড়াল নুরু। মাটি থেকে গামছাটা তুলে, ধুলো ঝেড়ে কোমরে বাঁধল। বাঁ-হাতে নিল পাচন লাঠিটা। গোরু-মোষের দলটা সামনেই চড়ছে। মোষগুলোর দিকে চেয়ে দেখল, নিবারণ ঘোষের লেজকাটা মোষটা নেই। বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল নুরুর। পাগলের মতো ছুটতে লাগল দহের দিকে। বিশদ

28th  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস  পর্ব   ৬
জয়ন্ত দে

সহজের একটিমাত্র টিউশন টিকে আছে। মনোতোষ স্যারের কোচিং ক্লাস সে ছেড়ে দিয়েছে। সৃজনীকে পড়ানোর সময় মুখ ফস্কে সহজ বলে ফেলে, তার ভাগ্য খুলতে আর ঊনত্রিশ দিন বাকি। অথচ, প্রেমিকা বর্ণিনীকেও সে ক্যাপ্টেনের ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে কিছু বলেনি। এদিকে, সহজকে পরমেশ্বর সাবধান করে, ‘পিশাচের ফাঁদের পড়িসনি।’ তারপর... বিশদ

28th  March, 2021
ভুল ফোন
কৌশানী মিত্র

ছেলেটি নরম। মেয়েটি কঠিন। ছেলেটির চোখে সারাক্ষণ জল টলটল করছে। আসলে জন্মানোর পর শুধু লড়াই করতে করতে দু-দণ্ড বসে কাঁদতে পারেনি কোনওদিন। এখন যেটুকু যা আছে তাইই ইমনের সামনে উপুড় করে দিতে পারলে যেন বেঁচে যায়। বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব   ৫
জয়ন্ত দে

নচে রেগে গিয়ে ক্যাপ্টেনকে রিকশসুদ্ধু খালে ফেলে দেওয়ার সুপারি দিল নেত্রকে। স্ত্রীকে নিয়ে নেত্রর রিকশয় উঠলেন ক্যাপ্টেন। রিকশ এগতে থাকে আর স্বামীকে একের পর এক অনুযোগ করতে থাকে বঁড়শি। তারপর... বিশদ

21st  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে

পিশাচ সাধু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন সহজের। নচেও তার ভবিষ্যৎ জানতে চায়। সাধু বলেন, ‘তুই অপঘাতে মরবি।’ শুনে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত নচে। তারপর... বিশদ

14th  March, 2021
তন্ত্রমন্ত্র
সৌমিত্র চৌধুরী

ঠক ঠক ঠক। অন্ধকার ঘর। মিনিট পাঁচেক হল কারেন্ট চলে গিয়েছে। নিজের বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়ে বসে আছি। তবুও মশার কামড়। স্বস্তিতে বসতেও পারছি না। তার মধ্যে দরজায় টোকা।  বিশদ

14th  March, 2021
পিশাচ সাধু
জয়ন্ত দে 

দারোগাবাড়ির ঠেকে সহজকে দেখে হঠাৎই ক্যাপ্টেন বেমক্কা বলে বসলেন— ‘তুই ভুল করেছিস পরি! এ ছেলে সহজ নয়, এ ছেলে কেন তোর এখানে? বড্ড ভুল করছিস!’ পরমেশ্বর অবাক হয়ে জানতে চাইল, ‘কেন, কী ভুল করলাম ক্যাপ্টেন?’ তারপর... 
বিশদ

07th  March, 2021
পিশাচ সাধু 
জয়ন্ত দে

পরমেশ্বরের সঙ্গে দারোগা বাড়ির ভূতুড়ে ঠেকে এসেছিল সহজ। হুল্লোড়ের মাঝে সেখানে হঠাৎই হাজির হলেন ক্যাপ্টেন। যিনি নিজেকে পিশাচ সাধু বলেন। তিনি সহজকে দেখে বললেন, তুই এখানে কেন? তারপর... 
বিশদ

28th  February, 2021
একনজরে
কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট: পদ্ম ও জোড়াফুলে আড়াআড়ি বিভক্ত হল নদীয়া জেলা। রবিবার ভোটগণনায় জেলার উত্তরাংশে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র ছাড়া বাকি সব আসনেই জয়ী হল তৃণমূল। তবে রানাঘাটের আসনগুলিতে জয় পেল গেরুয়া শিবির। ...

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দূত’ হিসেবে ময়দান থেকে এবার রাজনীতির আঙিনায় পা রেখেছিলেন বিদেশ বসু। সেখানেও তিনি সফল। রবিবার উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রে তিনি ১৭ হাজারের বেশি ভোটে ...

লালগড়ের ঝিটকার জঙ্গলের স্মৃতি ফিরে এল নরেন্দ্রপুরে। সময়ের ব্যবধান ১৫ বছর। বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হল সিআইডি’র বম্ব ডিজপোজাল স্কোয়াডের এক এএসআইয়ের। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। শনিবার নরেন্দ্রপুর থানার খেয়াদহ ২ নম্বর অঞ্চলে এই ঘটনা ঘটেছে। ...

মমতা-ঝড়ে বিধ্বস্ত উত্তর দিনাজপুর জেলার বাম-কংগ্রেস ঘাঁটি। জেলার ন’টি আসনের মধ্যে সাতটিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত লোকসভায় সেখানে বিজেপি মাথাচাড়া দিলেও এবার তারাও কুপোকাত। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি, প্রিয়জনের বিপথগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা, সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮০২ - শহর হিসেবে আত্মপ্রকাশ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির
১৮৩৯ - ভারতীয় শিল্পপতি ও টাটা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজী টাটার জন্ম
১৯১৩- ভারতের প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি ‘রাজা হরিশচন্দ্র’ মুক্তি পেল
১৯৩৯ - সুভাষচন্দ্র বসু কংগ্রেস ত্যাগ করে ফরওয়ার্ড ব্লক গঠন করেন
১৯৬৯- তৃতীয় রাষ্ট্রপতি ডক্টর জাকির হুসেনের মৃত্যু
১৯৮১- অভিনেত্রী নার্গিসের মৃত্যু
১৯৮৮ - কল্লোল যুগের অন্যতম প্রধান সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব প্রেমেন্দ্র মিত্রর মৃত্যু
২০০৬- রাজনীতিবিদ প্রমোদ মহাজনের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৩.৩৪ টাকা ৭৫.০৫ টাকা
পাউন্ড ১০১.৭২ টাকা ১০৫.২২ টাকা
ইউরো ৮৮.৩০ টাকা ৯১.৫২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
01st  May, 2021
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৭,৫০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৫,৭৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৮,৫০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৮,৬০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
01st  May, 2021

দিন পঞ্জিকা

১৯ বৈশাখ, ১৪২৮, সোমবার, ৩ মে ২০২১। সপ্তমী ২১/২২ দিবা ১/৪০। উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্র ৮/৮ দিবা ৮/২২। সূর্যোদয় ৫/৬/৪৯, সূর্যাস্ত ৬/০/১৩। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫০ মধ্যে পুনঃ ১০/১৭ গতে ১২/৫২ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪৫ গতে ৮/৫৮ মধ্যে পুনঃ ১১/১১ গতে ২/৯ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৫ গতে ৫/৯ মধ্যে। বারবেলা ৬/৪৩ গতে ৮/২০ মধ্যে পুনঃ ২/৪৭ গতে ৪/২৪ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১০ গতে ১১/৩৩ মধ্যে। 
১৯ বৈশাখ, ১৪২৮, সোমবার, ৩ মে ২০২১। সপ্তমী রাত্রি ৬/৫১। উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্র দিবা ১/৩০। সৃর্যোদয় ৫/৭, সূর্যাস্ত ৬/১। অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৫ মধ্যে ও ১০/১৪ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৫০ গতে ৯/০ মধ্যে ও ১১/১১ গতে ২/৫ মধ্যে। মাহেন্দ্রেযোগ দিবা ৩/২৮ গতে ৫/১৩ মধ্যে। কালবেলা ৬/৪৪ গতে ৮/২১ মধ্যে ও ২/৪৮ গতে ৪/২৫ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১১ গতে ১১/৩৪ মধ্যে। 
২০ রমজান। 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে ভোট অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন

12:51:12 AM

আদর্শ আচরণ বিধি প্রত্যাহার করে নিল নির্বাচন কমিশন 

08:30:02 PM

নেপালে বন্ধ অভ্যন্তরীন বিমান পরিষেবা, ৬মে থেকে বন্ধ আন্তর্জাতিক উড়ানও  

07:43:23 PM

অসমে ভূমিকম্প, মাত্রা ৩.৭ 

07:18:07 PM

ব্যাহত হবে পানীয় জলের পরিষেবা, জানুন কবে
 

দক্ষিণ কলকাতা এবং সংযুক্ত কলকাতার একটা বড় অংশ জুড়ে জল ...বিশদ

06:48:53 PM

বদল হচ্ছে মেট্রোর সময়সূচি
 

আগামী বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতা মেট্রোর পরিষেবা এবং সময়সূচী ফের বদল ...বিশদ

06:34:35 PM