Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

ঝড়ের  ঠিকানা

স্বয়ংদীপ্ত বাগ: কখনও আইলার মতো সরাসরি, কখনও বা রেমালের ‘লেজের ঝাপ্টা’—প্রায় প্রতি বছরই বর্ষার আগে বাংলায় আঘাত হানছে একের পর এক শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। একটার ক্ষত শুকোতে না শুকোতে আবার একটার তাণ্ডব। ব্যস, যাবতীয় বিপর্যয় মোকাবিলার ব্যবস্থাপনা, পুনর্বাসন ও উন্নয়ন ধুয়েমুছে সাফ! শুধু জেগে থাকছে আতঙ্ক জাগানো একটা শব্দ, ‘সাইক্লোন’। সেই ঝড়ের ঠিকানা না আমাদের জানা থাকলেও ‘সাইক্লোন’ নামটির সঙ্গে কিন্তু কলকাতার নাড়ির যোগ! সেটা অবশ্য খানিকটা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৌজন্যেই। কলকাতায় কোম্পানির গোড়াপত্তনের সময়টাতেই এসে হাজির হয়েছিলেন এক সাহেব। পেশায় দুনিয়াঘোরা নাবিক, নেশায় গবেষক হেনরি পিডিংটন। পোর্ট ক্যানিং নিয়ে কোম্পানিকে সতর্ক করা এই আবহাওয়াবিদেরই অবদান ‘সাইক্লোন’ শব্দটি। ১৮৪৮ সালে তাঁর সামুদ্রিক দুর্যোগ বিষয়ক বিখ্যাত বইটিতে সর্বপ্রথম এই নামের ব্যবহার। কে জানত, তারও ৬৮ বছর পর কলকাতায় বসে বাঙালির প্রাণের কবি লিখবেন, ‘ঝড়ের পুঞ্জিত মেঘে কালোয় ঢেকেছে আলো...’।
সাইক্লোন কিন্তু প্রকৃতির একটি স্বাভাবিক ঘটনা। অতীতে ঘূর্ণিঝড়গুলি কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই অত্যন্ত বিধংসী ছিল। কিন্তু আজ বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের পথ ধরে সেই পরিস্থিতিতে আমূল বদল। অধিকাংশ ঘূর্ণিঝড়ই ভয়াল ভয়ঙ্কর রূপে দেখা দিচ্ছে। আগামী দিনে এরকমই কী চলতে থাকবে? নাকি আরও খারাপ হবে পরিস্থিতি, আরও বাড়বে অনিশ্চয়তা? শুধু ভারত বা প্রতিবেশী বাংলাদেশ নয়, আশঙ্কার মেঘ কিন্তু ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে চীন, ফিলিপিন্স, জাপান, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম থেকে সুদূর মেক্সিকো কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও।
‘সাইক্লোন’ শব্দটির আবির্ভাব আদতে গ্রিক শব্দ ‘কাইক্লোস’ থেকে। এর অর্থ ‘কুণ্ডলী পাকানো সাপ’। ঘূর্ণিঝড়ের চেহারার সঙ্গে তা ভারী মিল। পিডিংটন সাহেব অবশ্য তাকে কল্পনা করেছিলেন গ্রিক উপকথার একচক্ষু দৈত্য ‘সাইক্লোপস’-এর সঙ্গে। কিন্তু কেন? আসলে নিরক্ষরেখার কাছাকাছি উষ্ণ মহাসাগরের জলই ঘূর্ণিঝড়ের আঁতুড়ঘর। কারণ, এখানে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণ, আর্দ্র বাতাস হাল্কা হয়ে ক্রমাগত উপরে উঠে যায়। সেই শূন্যস্থান পূরণের জন্য ছুটে আসে আশপাশের তুলনামূলক ঠান্ডা বাতাস। অঞ্চলটিকে যেন শুষে নিতে থাকে। সেই বাতাসও আবার উষ্ণ ও আর্দ্র হয়ে উপরে উঠে যায়।  ক্রমাগত এভাবে চলতে চলতে সৃষ্টি হয় একটি চক্র। উপরে উঠে বাতাস ঠান্ডা ও ঘনীভূত হয়ে মেঘে পরিণত হয়। আর তা পৃথিবীর আবর্তনের সঙ্গে ঘুরতে থাকে। গোটা সিস্টেমটিকে চালু রাখার জন্য পর্যাপ্ত গরম জল থাকলে একসময় এই চক্রটি পরিণত হয় ঘূর্ণিঝড়ে। ‘আই’ বা ‘চোখ’ নামে একটি বৃত্তাকার কেন্দ্রের চারপাশে সেটি ঘুরতে থাকে। কেন্দ্রটি সাধারণত নির্মেঘ, শান্ত অবস্থায় থাকে। তার চারপাশে থাকে ‘চোখের প্রাচীর’। এটিই শক্তিশালী বাতাস, ঘন মেঘ এবং প্রবল বৃষ্টি সহ ঘূর্ণিঝড়ের সবথেকে বিপজ্জনক অংশ। মজার কথা হল, ঘূর্ণিঝড়গুলি সবসময় উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘোরে।
ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের গবেষণা বলছে, সাইক্লোনের ব্যাস সাধারণত ২০০-৫০০ কিলোমিটারে সীমাবদ্ধ। কখনও কখনও অবশ্য তা ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। বেশিরভাগ ঘূর্ণিঝড়ই চুপচাপ আবার সাগরে মিলিয়ে যায়। কিন্তু যে কয়েকটি চাকতির মতো ঘুরতে ঘুরতে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে চলে, তাতেই লুকিয়ে থাকে ধ্বংসের বীজ। প্রবল শক্তিশালী একটি ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটারেও পৌঁছে যেতে পারে, এককথায় যা অবিশ্বাস্য!
আমাদের এই বাংলায় কিংবা ভারতে যে সমস্ত ‘সাইক্লোন’ আঘাত হানে, সেগুলি মূলত ক্রান্তীয় বা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়। সাধারণত ৩০ ডিগ্রি উত্তর এবং ৩০ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যবর্তী গ্রীষ্মমণ্ডলেই তাদের উৎপত্তি। এই অঞ্চলের বাইরের ঘূর্ণিঝড়ের নাম কিংবা উৎপত্তির প্রক্রিয়া, দুই-ই আলাদা।  প্রতি বছর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সাগরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৮৫টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। তার মধ্যে মাত্র ৪৫টি ঘনীভূত হয়ে, আরও শক্তি বাড়িয়ে পরিণত হয় ‘ট্রপিক্যাল সাইক্লোন’ বা ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ে। এগুলির ৭২ শতাংশের উৎপত্তি উত্তর গোলার্ধে। বাকি দক্ষিণ গোলার্ধের।
হাওয়ার গতিবেগ অনুযায়ী ‘ট্রপিক্যাল সাইক্লোন’ও আবার পাঁচ রকমের। প্রথমটি সর্বনিম্ন, ‘ক্যাটিগরি ওয়ান’। এই ধরণের ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি থাকে ঘণ্টায় ১২০-১৫০ কিমি। ‘ক্যাটিগরি টু’-র ক্ষেত্রে যা ঘণ্টায় ১৮০ কিমি পর্যন্ত। ‘ক্যাটিগরি থ্রি’তে আবার হাওয়ার গতি পৌঁছয় সর্বোচ্চ ২১০ কিমি প্রতি ঘণ্টা। ‘ক্যাটিগরি ফোর’-এ ঘণ্টায় ২৫০ কিমি। আর ‘ক্যাটিগরি ফাইভ’? ঘণ্টায় ২৫০ কিমি বা তারও বেশি বেগে ঝোড়ো হাওয়া উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে গ্রামের পর গ্রাম। সাধারণত বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ৬১-৮৮ কিমিতে উঠলেই তাকে ‘সাইক্লোনিক স্টর্ম’ বা সাধারণ ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। তা ঘণ্টায় ৮৮-১১৭ কিমিতে পৌঁছলেই আসে ‘সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ বা তীব্র ঘূর্ণিঝড়। আর বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ২২১ কিমি ছাড়ালেই ‘সুপার সাইক্লোন’।    
একটি শক্তিশালী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের ধ্বংস ক্ষমতা ব্যাপক। কারণ, তার দোসর তীব্র ঘূর্ণি বাতাস, ভারী বৃষ্টিপাত এবং কখনও বন্যা, আকস্মিক বন্যা, বজ্রপাত বা টর্নেডো। দ্রুতগতিতে ধেয়ে আসা ফানেল আকৃতির বিধ্বংসী ‘টর্নেডো’য় বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৪০০ কিমিরও বেশি হতে পারে। আর তার ঘূর্ণিতে গবাদি পশু বা বন্য উদ্ভিদ ও প্রাণীদের যে কী অবস্থা হয়, তার খোঁজ কে রাখে! পৃথিবীতে গত ৫০ বছরে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মোট ১৯৪৫টি বিপর্যয় ঘটেছে। তাতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৭ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষ। ক্ষয়ক্ষতির অঙ্ক প্রায় দেড় লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার। 
বিশ্বের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত মোট ৩৬টি অত্যন্ত মারাত্মক ও প্রাণঘাতী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় হানা দিয়েছে। প্রতিটিই অন্তত ১২ হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ। ১২টি ক্ষেত্রে প্রাণ হারিয়েছেন লক্ষেরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে এক নম্বর বাংলাদেশের গ্রেট ভোলা সাইক্লোন। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর আসা এই মারণ-ঝড় প্রাণ কেড়েছিল প্রায় তিন লক্ষ মানুষের। বেসরকারি মতে সংখ্যা পাঁচ লক্ষের কম নয়। ১৭৩৭-এর ভারত ও বাংলাদেশে হুগলি রিভার সাইক্লোন, ১৮৩৯-এর ভারতের করিঙ্গা সাইক্লোন এবং ১৮৮১-এর ভিয়েতনামের হাইফঙ টাইফুনেও প্রায় সমসংখ্যক মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ওই ৩৬টি অত্যন্ত মারাত্মক ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে ১০টিই ছোবল দিয়েছে ভারতে। একটি আরব সাগরের উপকূলে। বাকি ন’টিই বঙ্গোপসাগরে! আইলা (২০০৯), লাইলা (২০১০), নীলম (২০১২), হেলেন (২০১৩), বুলবুল (২০১৯), ফণী (২০১৯), উম পুন (২০২০), যশ (২০২১), রেমাল (২০২৪)— সাম্প্রতিককালেও সেই প্রবণতা অব্যাহত।
তবে কি পৃথিবীর জলভাগের মাত্র ০.৬ শতাংশ অধিকার করে থাকা বঙ্গোপসাগরই ঘূর্ণিঝড়ের প্রিয় ঠিকানা? কেন সেখানে এত বড় বড় ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়? সেগুলি এমন আগ্রাসীই বা হয়ে ওঠে কেন? কিন্তু আবহাওয়ার পূর্বাভাস সংক্রান্ত বিখ্যাত সংস্থা, দ্য ওয়েদার কোম্পানি এলএলসি জানাচ্ছে, বিশ্বের প্রতি পাঁচটি ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত মৃত্যুর মধ্যে চারটির জন্য দায়ী এই বঙ্গোপসাগর! ইতিহাসের ৩৬টি সবথেকে মারাত্মক ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের ২৬টিই তার উপর দিয়ে ধেয়ে এসেছে। আসলে এর নেপথ্যে রয়েছে বঙ্গোপসাগরের বেশ কিছু ভৌগোলিক আনুকুল্য। যেমন, তুলনামূলকভাবে অগভীর হওয়ায় এখানে জল দ্রুত উত্তপ্ত ও বাষ্পীভূত হয়। এই অবস্থাটি ঘূর্ণিঝড় তৈরির অন্যতম শর্ত। বঙ্গোপসাগর তিনদিকে স্থলভাগ বেষ্টিত হওয়ায় অতিরিক্ত আর্দ্রতা ও অস্থিরতার উৎসও পেয়ে থাকে। এবং এই উপসাগরের আকার এবং সুদীর্ঘ, বাঁকা তটরেখা বাতাসের গতি বাড়িয়ে দেয়। আর এটাই ঘূর্ণিঝড়কে ঘনীভূত করতে এবং তার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতাকে বাড়াতে সাহায্য করে। গোটা বিষয়টিতে আরো ভয়ঙ্কর মাত্ৰা যোগ করে সমুদ্রপৃষ্ঠের তুলনামূলক বেশি তাপমাত্রা। ঘূর্ণিঝড় তৈরির জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা অন্তত ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়া প্রয়োজন। বঙ্গোপসাগরে হামেশাই তা থাকে ৩০-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।   
কিন্তু আগামী দিন কী হবে? আরও কী বাড়বে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি? ‘জার্নাল অব ক্লাইমেট চেঞ্জ’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গত দু দশকে পৃথিবীর বৃহত্তম উপসাগর এই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বাড়ছে। গত ৪৫ বছরে, সার্বিকভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ০.২-০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। এবং এই শতাব্দীর শেষে এটি আরও ২-৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। ফলে ক্যাটিগরি ৩ থেকে ক্যাটিগরি ৫ অর্থাৎ শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় থেকে সুপার সাইক্লোনও বাড়বে সুন্দরবন অঞ্চলে। সুন্দরবন অবশ্য সত্যিই ভারতের ঘূর্ণিঝড়ের রাজধানী! ১৯৬১- ২০২০ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলে আছড়ে পড়া প্রায় ৭০ শতাংশ ঘূর্ণিঝড়ই সিভিয়ার সাইক্লোন।
মৌসম ভবনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ১৯৫১-২০২০ সাল পর্যন্ত সবথেকে বেশি ল্যান্ডফলের ঘটনা (ঘূর্ণিঝড়ের সাগর থেকে স্থলভাগে প্রবেশ করা) ঘটেছে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলিতে (২৫.৩৪ শতাংশ)। পশ্চিমবঙ্গ সেখানে মাত্র ৮.৬ শতাংশ। ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অবশ্য মনে করে যে ভবিষ্যতে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। তবে পৃথিবী আরও উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার তীব্রতা বাড়বে। ইতিমধ্যেই গত চার দশকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বেড়েছে সেগুলির নানা অস্বাভাবিকতাও। কখনও খুব দ্রুত তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে ঘূর্ণিঝড়গুলি। কখনও অস্বাভাবিকভাবে দিক পরিবর্তন করছে। যেমনটা দেখে গিয়েছে ২০১৭ সালে ঘূর্ণিঝড় অক্ষির ক্ষেত্রে। আবার ফণীর ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, স্থলভাগে পৌঁছেও দীর্ঘ সময় ধরে সক্রিয় ঘূর্ণিঝড়। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় রেমালও, উপকূলে আঘাত হানার পর অস্বাভাবিক দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের উপর স্থায়ী হয়। বিজ্ঞানীদের অনুমান করছেন, মূলত বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই ঘূর্ণিঝড়গুলির গতিপ্রকৃতির এমন বদল। যদিও সমস্ত কার্যকারণ এখনও খুব স্পষ্ট হয়নি।
আবার আইলা, ফণী, আমফান, ইয়াস এবং সর্বশেষে রেমাল—সাম্প্রতিক অতীতে বারবার মে মাসেই কেন ঘূর্ণিঝড়ের ছোবল পড়ছে? এই প্রশ্ন বেশ ভাবাচ্ছে সবাইকে। সাধারণত বর্ষার আগে পরেই আসে ঝড়ের মরশুম। তবে মে সহ গ্রীষ্মের মাসগুলিতে সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় ৫০ মিটার গভীর পর্যন্ত তাপমাত্রা অনেকটাই বেশি থাকে। সেটাই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূল অবস্থা তৈরি করছে বলে আবহাওয়া-বিজ্ঞানীদের অনুমান।  
সবমিলিয়ে আগামী দিনের চিত্রটা এই মুহূর্তে খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। তবুও আশঙ্কা ছেড়ে, আরও সতর্ক থাকা ও উপযুক্ত প্রস্তুতির দিকে জোর দিতে হবে। একদিকে যেমন পরিকল্পনা ও বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার বিষয়টিকে সময়োপযোগী ও নিশ্ছিদ্র করে তোলা জরুরি। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের এই ‘নিউ নরম্যাল’ -এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার কৌশলগুলি আয়ত্ত করার চেষ্টা চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। অনিশ্চিত ও জটিল প্রকৃতির জন্য ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের উপর নজরদারি ও পূর্বাভাসের কাজটি যথেষ্ট কঠিন। তবু পৃথিবী জুড়ে আবহবিদেরা অত্যাধুনিক উপগ্রহ, ওয়েদার রেডার এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে সর্বদা নজর রাখছেন। যথাসম্ভব সঠিক পূর্বাভাস দেবার চেষ্টা করছেন। সুতরাং আগামী দিন যতই চ্যালেঞ্জিং হোক না কেন, উপযুক্ত পরিকল্পনা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনায় সুপার সাইক্লোনের সামনেও বুক চিতিয়ে দাঁড়াবে মানুষ।
 ছবি : পিটিআই ও নিজস্ব চিত্র 
  গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
  সহযোগিতায় : সত্যেন্দ্র পাত্র
02nd  June, 2024
বিস্মৃত বিপ্লবীর সন্ধানে

স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে বিপ্লবগুরু যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে নিরালম্ব স্বামী ও তাঁর চান্না আশ্রম। ইতিহাসের সেই অধ্যায় ছুঁয়ে এসে স্মৃতি উজাড় করলেন সৈকত নিয়োগী। বিশদ

16th  June, 2024
কোথায় বিপ্লব? কখন বিপ্লব?

পাথরের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ সন্ন্যাসীর। খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির ঘরে বসে আনমনা হয়ে মেঝেতে একটা বুলেট ঠুকছেন। পাশে ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রিভলভারের যন্ত্রাংশ। উল্টোদিকে মোড়ায় বসে এক যুবক ক্রমাগত তাঁকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করছেন। বিশদ

16th  June, 2024
জামাইবাবু জিন্দাবাদ
কৌশিক মজুমদার

সে অনেককাল আগের কথা। এক পরিবারে দুই বউ ছিল। ছোট বউটি ছিল খুব লোভী। বাড়িতে মাছ কিংবা অন্য ভালো খাবার রান্না হলেই সে লুকিয়ে লুকিয়ে খেয়ে নিত আর শাশুড়ির কাছে গিয়ে বলত ‘সব ওই কালো বেড়ালটা খেয়ে নিয়েছে।’ বিড়াল মা-ষষ্ঠীর বাহন। বিশদ

09th  June, 2024
আদরের অত্যাচার
কলহার মুখোপাধ্যায়

মাছের মুড়ো মনে হচ্ছে হাঁ করে গিলতে আসছে। পাক্কা সাড়ে তিন কেজির কাতলা। জল থেকে তোলার পরও দু’মিনিট ছটফট করেছিল। এক-একটি পিস প্রায় ২৫০ গ্রামের। তেল গড়গড়ে কালিয়া হয়েছে। পাশে কাঁসার জামবাটিতে খাসির মাংস। সব পিসে চর্বি থকথক করছে। বিশদ

09th  June, 2024
সবহারাদের কথা

সালটা ২০০৯। ২৬ মে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় আইলা। তছনছ হয়ে গিয়েছিল পাথরপ্রতিমা ব্লকের উত্তর গোপালনগর গ্রাম। গোবোদিয়া নদীবাঁধ ভেঙে সুন্দরবনের মধ্যে প্রথম প্লাবিত হয়েছিল এই গ্রামই। কোমরসমান জলের মধ্যে দাঁড়িয়েই শুরু হয় জীবনের লড়াই। সেই কথা মনে পড়লে আঁতকে ওঠেন স্থানীয়রা।
বিশদ

02nd  June, 2024
বাস্তবের সাইবর্গরা
কল্যাণ কুমার দে

মেরিন কর্পে কাজ করতেন ক্লডিয়া মিশেল। মোটরবাইক দুর্ঘটনায় একটি হাত হারিয়ে ফেলেন। সেখানে স্থাপন করা হয় একটি বায়োনিক হাত। সেটিকে যুক্ত করা হয় শরীরের নার্ভাস সিস্টেম বা স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে। এখন এই যান্ত্রিক হাতে তিনি এতটাই সাবলীল যে ফলের খোসা ছাড়াতেও কোনও অসুবিধা হয় না। বিশদ

26th  May, 2024
টেলিপ্যাথির ১০০ দিন

টেলিপ্যাথির দাম নাকি ৮ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা! ইলন মাস্ক অবশ্য এখনও প্রাইসট্যাগ লাগাননি। কিন্তু তাঁর সংস্থার যুগান্তকারী আবিষ্কার নিউরালিঙ্ক বা এনওয়ান চিপ মস্তিষ্কে বসাতে এতটাই খরচ হতে পারে বলে সংবাদমাধ্যমের দাবি। সঙ্গে রয়েছে আনুষঙ্গিক বিমা, ৩৩ লক্ষ ২৪ হাজার টাকার। বিশদ

26th  May, 2024
এসো কালবৈশাখী

বৈশাখ শেষের তামাটে বিকেলেই ধেয়ে আসে সর্বনাশী মেঘ। সব লন্ডভন্ড করে দেওয়া সেই ঝড়ের স্মৃতি ও একটুকরো ইতিহাস লিখলেন কৌশিক মজুমদার বিশদ

19th  May, 2024
সেকালের কলকাতার ঝড়বৃষ্টি

‘মনে হচ্ছে দুনিয়া ভাসিয়ে দেবার জন্য স্বর্গের জানলাগুলো খুলে গেছে। ভয়ানক বাজ আর তীব্র বিদ্যুৎ। ইউরোপে এমন বাজের আওয়াজ কোনওদিন শুনিনি। সেখানে বৃষ্টি মানে নেহাত আনন্দ। ঝড় আর বাজের এমন রূপ কেউ চিন্তাও করতে পারে না!’ লিখেছিলেন ফ্যানি পার্কস। বিশদ

19th  May, 2024
রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দের সংগ্রাম
পূর্বা সেনগুপ্ত

বুদ্ধের সেবা আর খ্রিস্টান মিশনারীদের সেবা—দুই সঙ্ঘবদ্ধ সন্ন্যাসীদের অভিজ্ঞতা মিশিয়ে স্থাপিত হয় রামকৃষ্ণ মিশন। বিশদ

12th  May, 2024
বরানগর মঠ: প্রতিষ্ঠা কাহিনি

শ্রীরামকৃষ্ণের দেহাবসানের ১৫ দিনের মাথায় ছেড়ে আসতে হয়েছিল কাশীপুর উদ্যানবাটী। সারদা দেবী গৃহীভক্ত বলরাম বসুর পরিবারের সঙ্গে তীর্থে চললেন। গুরুভাইদের নিয়ে পথে নেমে এসেছিলেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত। সব ছেড়ে নবীন সন্ন্যাসীদের মঠে যাওয়ার ডাক দিতেন। বিশদ

12th  May, 2024
রবীন্দ্রনাথ ও সত্যজিৎ

শান্তিনিকেতনের লাইব্রেরি তাঁকে সিনেমা সম্পর্কে কৌতূহলী করে তুলেছিল। প্রকৃতি ও জগৎকে দেখার চোখ খুলে দিয়েছিলেন বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় ও নন্দলাল বসু। শান্তিনিকেতন তথা রবীন্দ্র-সাহচর্যেই সত্যজিৎ রায় হয়ে উঠেছিলেন বিশ্বজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক। লিখেছেন সুখেন বিশ্বাস বিশদ

05th  May, 2024
জনমত
সমৃদ্ধ দত্ত

গোরুর গায়ে ‘ভোট দিন’ লিখেছিল কংগ্রেস। বিমান থেকে টারম্যাকে লাফ দেন ইন্দিরা। বাজপেয়ির প্রচারে খরচ ৭০০ কোটি। কিন্তু কী ছিল ভোটের ইস্যু? নেহরু থেকে মোদি... আজ তারই একঝলক। বিশদ

28th  April, 2024
চারুলতার অন্দরমহল

‘আশ্বিনের ‘পরিচয়’ খুলে দেখলুম রুদ্রমশাই আবার আমার পিছনে লেগেছেন।... রুদ্রমশাই সাহিত্য বোঝেন কিনা জানি না; সিনেমা তিনি একেবারেই বোঝেন না। শুধু বোঝেন না নয়; বোঝালেও বোঝেন না।’ পরিচয় পত্রিকায় সত্যজিৎ রায়-অশোক রুদ্রের এই চাপানউতোরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ‘চারুলতা’।
বিশদ

21st  April, 2024
একনজরে
কৃষিক্ষেত্রে বাংলাই মডেল। রাজ্যের নিজস্ব প্রকল্পের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজও রাজ্যে ভালোভাবে রূপায়িত হয়েছে। ...

রেলের উচ্ছেদ নোটিসে ভিটেছাড়া হওয়ার আতঙ্কে হৃদরোগে বৃদ্ধের মৃত্যু঩ হল। তা সত্ত্বেও অনড় রেল। মঙ্গলবার সকালে কাটোয়া স্টেশন লাগোয়া একের পর এক ঝুপড়ি ভেঙে দিল তারা। ...

পরিধি রায়ের বয়স ১০ বছর। এই বয়সেই টেবিল টেনিস খেলে নাম করে ফেলেছে। জলপাইগুড়িতে গিয়েছিল রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। ...

পাঁচ দিনে তিনটি ম্যাচ! বৃহস্পতিবার ভারতের সামনে আফগানিস্তান। শনিবার লড়াই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। আর সোমবার প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া।  ২০ থেকে ২৪ জুনের মধ্যে সুপার এইট পর্বে তিনটি ম্যাচ ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কাজকর্মে প্রতিকূলতা কেটে ক্রমোন্নতি। সন্তানের আচরণে ও মতিগতি নিয়ে চিন্তা। অর্থাগম হবে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৪৬৪- ফ্রান্সের রাজা একাদশ লুই ডাক ব্যবস্থা চালু করেন
১৫৯৫- ষষ্ঠ শিখ গুরু গুরু হরগোবিন্দের জন্ম
১৮৭৭- ভূমি থেকে আকাশে উলম্বভাবে ওড়ার, আকাশ থেকে ভূমিতে অবতরণের এবং আকাশে স্থির থাকার যান তথা আদি যুগের হেলিকপ্টার পরীক্ষা করা হয়
১৯০৭- শিক্ষাবিদ ও নারী শিক্ষা প্রচারক উমেশচন্দ্র দত্তের মৃত্যু
১৯৪৭- লেখক সলমন রুশদির জন্ম
১৯৫৫- অভিনেত্রী মিঠু মুখোপাধ্যায়ের জন্ম
১৯৫৮- অভিনেতা মুকেশ খান্নার জন্ম
১৯৬২- অভিনেতা আশিষ বিদ্যার্থীর জন্ম
১৯৬৪- যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের জন্ম
১৯৭০- রাজনীতিক রাহুল গান্ধীর জন্ম
১৯৮১- ভারতে টেস্ট টিউব বেবির জনক সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু
১৯৮৫- অভিনেত্রী কাজল আগরওয়ালের জন্ম
২০০৮- বর্তমানের প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক বরুণ সেনগুপ্তের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮২.৭০ টাকা ৮৪.৪৪ টাকা
পাউন্ড ১০৪.৩৬ টাকা ১০৭.৮৩ টাকা
ইউরো ৮৮.০৪ টাকা ৯১.১৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭১,৯০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭২,২৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৮,৭০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৮,০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৮,১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৪ আষাঢ়, ১৪৩১, বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪। দ্বাদশী ৫/৫৮ দিবা ৭/২৯। বিশাখা নক্ষত্র ৩১/৮ অপরাহ্ন ৫/২৩। সূর্যোদয় ৪/৫৬/১৭, সূর্যাস্ত ৬/১৯/২২। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩৭ গতে ১১/১১ মধ্যে পুনঃ ১/৫১ গতে ৫/২৫ মধ্যে রাত্রি ৯/৫২ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৯ গতে ১/২৪ মধ্যে। বারবেলা ৮/১৭ গতে ৯/৫৭ মধ্যে পুনঃ ১১/৩৮ গতে ১/১৯ মধ্যে। কালরাত্রি ২/১৮ গতে ৩/৩৭ মধ্যে। 
৪ আষাঢ়, ১৪৩১, বুধবার, ১৯ জুন, ২০২৪। দ্বাদশী প্রাতঃ ৫/৫২। বিশাখা নক্ষত্র অপরাহ্ন ৪/৩৬। সূর্যোদয় ৪/৫৫, সূর্যাস্ত ৬/২২। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪২ গতে ১১/১৫ মধ্যে ও ১/৫৫ গতে ৫/২৯ মধ্যে এবং রাত্রি ৯/৫৫ মধ্যে ও ১২/৩ গতে ১/২৯ মধ্যে। কালবেলা ৮/১৭ গতে ৯/৫৮ মধ্যে ও ১১/৩৯ গতে ১/১৯ মধ্যে। কালরাত্রি ২/১৭ গতে ৩/৩৬ মধ্যে। 
১২ জেলহজ্জ।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
ইউরো কাপ: হাঙ্গেরিকে ২-০ গোলে হারাল জার্মানি

11:28:58 PM

টি২০ বিশ্বকাপ: আমেরিকাকে ১৮ রানে হারাল দঃ আফ্রিকা

11:26:30 PM

ইউরো কাপ: জার্মানি ২ : হাঙ্গেরি ০ (৭৫ মিনিট)

11:10:45 PM

 ইউরো কাপ: জার্মানি ১-হাঙ্গেরি ০ (হাফটাইম)

10:24:30 PM

ইউরো কাপ: জার্মানি ১-হাঙ্গেরি ০ (২৩ মিনিট)

09:59:45 PM

ইউরো কাপ: জার্মানি ০ : হাঙ্গেরি ০ (৫ মিনিট)

09:41:41 PM