কাজকর্মে প্রতিকূলতা কেটে ক্রমোন্নতি। সন্তানের আচরণে ও মতিগতি নিয়ে চিন্তা। অর্থাগম হবে। ... বিশদ
জানা যায়, কাকলি কর্মকার তাঁর ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে করে সিউড়ি ফিরছিলেন। তাঁরা শিলং গিয়েছিলেন বেড়াতে। কাকলিদেবীর স্বামী কেন্দ্রীয় জওয়ান। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের পর অবশ্য তিনি কর্মক্ষেত্রে ফিরে যান। কিন্তু কে জানত, তার কিছুক্ষণ পর ওই ট্রেনেই এতবড় দুর্ঘটনা অপেক্ষা করছে। কাকলিদেবীরা দুর্যোগ কাটিয়ে রাত্রি সাড়ে ১২টা নাগাদ সাঁইথিয়া স্টেশনে নামেন। তারপর সিউড়ির বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু তাঁদের কারও চোখের পাতা এক হচ্ছে না। গল্প বলতে গিয়ে রেল পরিষেবা নিয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন তাঁরা। তিনি বলেন, মেয়ে তখন ওয়াশরুমে গিয়েছে। আর হঠাৎই ঝাঁকুনি শুরু হল। মেয়ের মাথা গিয়ে ঠুকে গেল সামনের আয়নাতে। সব ছিটকে পড়লাম। গোটা কামরা লণ্ডভণ্ড হয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। তাড়াহুড়ো করে ট্রেন থেকে নেমেই দেখি ভয়াবহ সব দৃশ্য। ততক্ষণে বুঝে গেলাম আসলে কী হয়েছে। ট্রেনের ভেতর সবাই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। আশপাশে লোকালয়ও ছিল না। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর রেল পুলিস আসে। তার পিছু পিছু উদ্ধারকারী দল। তারপর সব উদ্ধারকাজ শুরু হয়। আমরা খাবার পেয়েছি ট্রেন ছেড়ে চলে আসার পর আলুয়াবাড়ি স্টেশনে। জঘন্য রেল পরিষেবা নিয়ে সত্যিই আর কিছু বলার নেই! গাফিলতি না থাকলে কী আর এতবড় দুর্ঘটনা ঘটে। যদি আগে মেডিক্যাল টিম আসত, তাহলে হয়তো আরও কেউ কেউ বেঁচে যেতেন। রেল কর্তৃপক্ষ এর দায় নিক। এতটাই আতঙ্কে আছি যে আর কোনওদিন ট্রেনে চাপব কি না, ভাবতে হবে! একইরকম অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছিলেন তাঁর মেয়ে নিশা কর্মকার। তিনি বলেন, উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে আসার পর সকলের আতঙ্ক একটু কমে। তাঁরা নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন। বেড়াতে গিয়ে যে শেষমেশ এমন অভিজ্ঞতা হবে, তা কল্পনাও করিনি। আমাদের পরিবারের তিনজনেরই কমবেশি চোট লেগেছে। এখন শারীরিক ভাবে ভালো আছি। কিন্তু মানসিক উদ্বেগ রয়েছে। একইভাবে মহম্মদবাজারের দেউচার বাসিন্দা তারকেশ্বর সালুই তাঁর স্ত্রী ও কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে ওই ট্রেনেই ফিরছিলেন। বাড়ি ফেরার পরও আতঙ্কে চোখের পাতা এক করতে পারছেন না তাঁরা।