কাজকর্মের ক্ষেত্রে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। ক্রীড়াবিদদের সাফল্য লাভের সম্ভাবনা। পারিবারিক ক্ষেত্রটি মোটামুটি থাকবে। ... বিশদ
একটু লম্বা, সোজা চুল এখনকার চলতি ট্রেন্ড। পুজোতেও তার খুব একটা হেরফের হবে না। এখন অল্পবয়সি থেকে মাঝবয়সি মহিলারা চুল স্ট্রেট করাতে ভালোবাসেন। সেক্ষেত্রে চুলের লেন্থ একটু লম্বা না হলে ভালো লাগে না। ফলে পুজোতেও লম্বা চুল রাখবেন মহিলারা। তাছাড়া পুজোয় শাড়ি পরতেই বাঙালি পছন্দ করে। সেক্ষেত্রে লম্বা চুলই বেশি মানানসই। লম্বা চুলের আরও একটা সুবিধে আছে, তা যে কোনও পোশাকের সঙ্গেই মানিয়ে যায়। শাড়ি হোক, অন্য ভারতীয় পোশাক হোক বা ওয়েস্টার্ন— সবকিছুতেই লম্বা চুল ভালো লাগে। আর চুলে স্টাইলিংও অনেক রকম করা যায়।
সিম্পল স্টাইল »
এবছর পুজোয় চুলের কাট খুব একটা জবরজং হবে না। অল্পবয়সি থেকে মাঝবয়সি সকলেই লম্বা চুলে ডিপ ইউ, রাউন্ড ইত্যাদি কাট করতে চাইছেন। তার সঙ্গে অল্পবয়সিদের মধ্যে একটা ট্রেন্ড লক্ষ করা যাচ্ছে, সামনে একটু বড় লেয়ার। এতে ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে চুলে স্টাইল করতে সুবিধে হয়। আর মাঝবয়সি মহিলারা পিঠ পর্যন্ত চুলের দৈর্ঘ্য রাখতে চাইছেন। তাতে ডিপ ইউ কাট করাচ্ছেন যাতে একদম সামনের লেয়ারটা কাঁধ পর্যন্ত নামে। এই স্টাইল পুজোর সময় শাড়ির সঙ্গে খুবই ভালো মানাবে। তবে এক্ষেত্রে একটা কথা জানালেন কেয়া শেঠ। বললেন, চুলের গোছ যদি বেশি না থাকে তাহলে ইউ বা ডিপ ইউ কাট একদমই উপযুক্ত নয়। সেক্ষেত্রে কিন্তু চুলে পিঠ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য রাখলেও তাতে স্ট্রেট কাট করতে হবে।
লেয়ার কাট »
টিনএজারদের জন্য পুজোয় সবচেয়ে উপযুক্ত কাট হল লং লেয়ার। অল্প বয়সে চুল বেশি ঘন থাকে বলেই এই কাট মানানসই। লেয়ার কাটের ক্ষেত্রে ভিতর থেকে অনেকটা চুল কেটে বাদ দিতে হয়। ফলে চুলে যদি ভলিউম না থাকে তাহলে চুল ভেতর থেকে কেটে ফেললে স্টাইলটা বোঝা যায় না। এছাড়া চুল যখনই স্ট্রেট করা হয় তখনই একটু বড় এবং বেশি ঘন হলে তবেই তার শো বেশি হয়। আর একটা ব্যাপার এখানে খেয়াল রাখা দরকার, কারও চুল সাধারণভাবেই ঝলমলে হয়, তাতে চুলটা দেখতে ভালো লাগে। এমন চুল যখন স্ট্রেট করে খোলা রাখা হবে তখন দেখতে যতটা ভালো লাগবে, প্রাণহীন চুল যদি লম্বা এবং সোজা করে রাখা হয় তাহলেও কিন্তু তেমন লাগবে না। এটা খেয়াল রাখা জরুরি। যদি চুলে শো না থাকে তাহলে উপযুক্ত ট্রিটমেন্ট করিয়ে চুলে শো আনতে হবে, তারপরই তা খোলা রাখবেন।
রং বাছুন বুঝে শুনে »
মাঝবয়সি দিয়েই আলোচনাটা শুরু করি, বললেন কেয়া শেঠ। ভারতীয় গায়ের রঙের সঙ্গে একটু গাঢ় রং চুলের ক্ষেত্রে উপযুক্ত। বার্গেন্ডি রং সবচেয়ে মানানসই। খুব ফর্সা গায়ের রং হলে চেরি বার্গেন্ডিও ভালো। আর যদি গায়ের রং একটু কালোর দিকে হয় তাহলে ওক, মেহগনি, ডার্ক ব্রাউন ইত্যাদি ভালো। এখন মধ্য বয়সের মহিলাদের মধ্যে স্ট্রিক্সের (অল্প চুল নিয়ে রং করা) প্রবণতা একটু কম। সবাই গ্লোবালই করাতে চান (পুরো চুল রং)। যদি কেউ স্ট্রিক্স করতে চান তাহলে মেহগিনির সঙ্গে গোল্ডেন স্ট্রিক্স ভালো মানাবে। অল্পবয়সিরা উজ্জ্বল রং বেশি পছন্দ করছেন। লেয়ারে উজ্জ্বল শকিং রং করাতে চাইছেন তাঁরা। চুলের সামনের দিকে আকাশি নীল, মাঝখানে বার্গেন্ডি আর নীচে চেরি বা গোল্ডেন। অনেকে শুধুই চুলের সামনের দিকেই রং করাচ্ছেন। এক্ষেত্রে গোলাপি, আকাশি আর গোল্ডেন সবচেয়ে হিট।
পুজোর স্টাইলিং »
অনেকেই পুজোর চারদিন চুলে আলাদা আলাদা স্টাইল চান । সেক্ষেত্রে কেয়ার পরামর্শ, ষষ্ঠী একটু হালকা সাজের দিন, চুলের স্টাইলও সাধারণ রাখুন। শাড়ি পড়লে একটু নিচু করে খোঁপা বাঁধুন। ইন্ডিয়ান পোশাকের সঙ্গে চুলে পনিটেল বাঁধতে পারেন, নাহলে খানিকটা অংশে ক্লিপ লাগিয়ে বাকিটা খুলে রাখতে পারেন। আর ওয়েস্টার্ন ওয়্যারের ক্ষেত্রে উঁচু করে পনিটেল বাঁধা যায় বা হেয়ার ক্লিপ ও হেয়ার ব্যান্ড লাগিয়ে চুল খুলে রাখা যায়।
সপ্তমী আর নবমীতে চুলের স্টাইল অনেকটাই একরকম। এই দু’দিন পোশাক নিয়ে সবচেয়ে বেশি এক্সপেরিমেন্ট করে টিনএজাররা। সেক্ষেত্রে হয় তুলে পনিটেল বাঁধা যেতে পারে। টপনটও শাড়ির সঙ্গে মানাবে ভালো। এই ক্ষেত্রে একটু গর্জিয়াস বান ক্লিপ (খোঁপায় বাঁধার চিরুনি ক্লিপ) লাগাবেন। অথবা চুলের সামনে থেকে একটা লেয়ার ছেড়ে রেখে বাকিটা তুলে হর্সটেল বেঁধে রাখুন। যে লেয়ারটা খোলা রাখলেন সেটাকে জেল দিয়ে স্টিফ করে সেট করুন।
অষ্টমীর ক্ষেত্রে অঞ্জলি, আরতি ইত্যাদির সময় সবাই প্রায় শাড়ি পরেন। সেক্ষেত্রে মেসি বান বাঁধবেন মাঝবয়সি মহিলারা। টিনএজাররা হয় চুল স্ট্রেট করে খোলা রাখবেন নাহলে সামনের দিক থেকে কিছুটা চুল নিয়ে সরু সরু দু’-চারটে বিনুনি করে সেটাকে পিছনে নিয়ে গিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকে দেবে। অষ্টমীর সন্ধেবেলা একটু জমকালো সাজের সঙ্গে বয়স্ক মহিলারা এলো খোঁপা করে তাতে ফুল লাগাতে পারেন, নাহলে ফুলের মালা দিয়ে গোটা খোঁপাটা সাজাতে পারেন। অল্পবয়সিদের ক্ষেত্রে চুল ব্লো ড্রাই করে স্ট্রেট করে খোলা রাখাই সবচেয়ে স্টাইলিশ। খোলা রাখতে না চাইলে সামনের দিকটা একটু ফুলিয়ে আটকে রাখতে পারেন। চুলের সামনে থেকে বিনুনি বেঁধে, উল্টে দিয়ে পিছনে ক্লিপ করে রাখলেও ভালো লাগবে।
দশমীতে সিঁদুর খেলার সময় চুল বেঁধে রাখতে হবে। যাঁরা সিঁদুর খেলবেন তাঁরা খোঁপা করবেন। আর যাঁরা খেলবেন না, তাঁরাও বিনুনি বেঁধে রাখবেন। তাতে চুল নষ্ট হবে না।