উত্তম বিদ্যালাভের যোগ আছে। কাজকর্মে উন্নতি ও কাজে আনন্দলাভ। অর্থাগমের উত্তম যোগ। ... বিশদ
কারখানায় বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রে তৈরি শাড়ি এবং বস্ত্র সামগ্রীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জামদানি শিল্পীদের অনেকেরই উপার্জন কমে যায়। তাঁরা তাঁত বোনা ছেড়ে অন্য কাজে যোগ দিতে শুরু করেছিলেন। তাঁতিদের উপার্জন অনেকটা মরশুমি হওয়ার কারণে, হাতে বোনা জামদানি শিল্প প্রায় অবলুপ্ত হতে বসেছিল।
বিশ্ব বাংলা-র ব্যবস্থাপনায় জামদানি শিল্পের জন্য নতুন করে চাহিদা তৈরি হয়েছে। পুরনো শিল্পীরা আবার তাঁদের ভালোবাসার বংশানুক্রমিক কাজে ফিরতে শুরু করেছেন। বাবা-ঠাকুরদার কাছে বসে শেখা তাঁতের কাজের মাধ্যমে তাঁতিদের নতুন প্রজন্মেও উপার্জনের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। সূক্ষ্ম কারুকাজের শাড়ি শুধু নয়, দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তাঁতিদের হাতে বোনা জামদানির কুর্তা, কামিজ, ড্রেস এবং শার্টও। তৈরি হচ্ছে দোপাট্টা, স্টোল বা স্কার্ফের মতো ফ্যাশন সামগ্রী। নতুন ডিজাইনের নতুন ধরনের পণ্য বিশ্বের ফ্যাশন সচেতন গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সংস্থার নিরন্তর প্রচেষ্টায় এখন তাঁতিরা বানাচ্ছেন জামদানির পকেট স্কোয়্যার বা সুন্দর নকশার রুমাল।
নদীয়ার ফুলিয়া, বেথুয়াডহরি, করিমপুর, হাবিবপুর এবং বর্ধমানের কাটোয়া অঞ্চলের তাঁতিদের হাতে বোনা অকৃত্রিম জামদানি আবার দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বাঙালির মন ছুঁয়েছে। মুর্শিদাবাদের রেশমশিল্পীদের হাতে তৈরি পিওর সিল্ক শাড়ি বিশ্ব বাংলা-র প্রিন্টস-এর হাত ধরে ‘বাংলাশ্রী’ নামে নতুন পরিচিতি পেয়েছে। নতুন নতুন আঙ্গিকের ডিজাইনই চাহিদা বাড়িয়েছে বহুগুণ। বাংলার ঐতিহ্য-নির্ভর শিল্প থেকে বছরভর পর্যাপ্ত আয়ের রাস্তা হয়েছে সুগম।
নদীয়ার টাঙ্গাইল শাড়ি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে সম্প্রতি জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন ট্যাগ অর্থাৎ জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে। টাঙ্গাইল শাড়ির জনপ্রিয়তা বিশ্ব বাংলা-র হাত ধরে নতুন করে জীবিকার সুযোগ করে দিয়েছে নদীয়ায়।
এ ছাড়াও এই সংস্থার হাত ধরে নতুন করে চাহিদার মূলস্রোতে ফিরে এসেছে হাতের কাজের বালুচরী, নকশি কাঁথা, শান্তিপুরী, ধনেখালি, বেগমপুরী ইত্যাদি শাড়ি। ঘর সাজানোর নানান হস্তশিল্প সামগ্রী যেমন বাঁকুড়ার ডোকরা ও টেরাকোটা, কৃষ্ণনগরের মাটির পুতুল, মেদিনীপুরের পটচিত্র, মাদুরকাঠির তৈরি জিনিস, শোলা এবং কাঠের তৈরি বিভিন্ন ছোট-বড় মূর্তি, হ্যান্ডকার্ভড শাঁখের বিভিন্ন শৌখিন জিনিস— উপহার হিসেবে তো বটেই, নিত্যপ্রয়োজনের সামগ্রী হিসেবেও সমান সমাদৃত।