বিশেষ কোনও কর্মের আর্থিক সংস্থান নিয়ে মানসিক চিন্তা বৃদ্ধি পাবে। আর্থিক ঝুঁকি নেবার আগে দুবার ... বিশদ
৭০ আসনের দিল্লি বিধানসভায় ৪৮ জন বিধায়ক নিয়ে সাতাশ বছর পর ক্ষমতায় এল বিজেপি। নিয়ম মতো মন্ত্রিসভা হতে হবে সর্বোচ্চ সাত জনের। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া বাকি ছ’জনও একইসঙ্গে শপথ নেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে রেখা গুপ্তাকে বেছে নেওয়া যদি বিজেপি’র প্রথম ‘চমক’ হয় তবে গোটা মন্ত্রিসভা নিয়েই আরও বড় ‘চমক’ রয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) যে তথ্য সামনে এনেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, মন্ত্রিসভায় যে সাত জন শপথ নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনের (৭১ শতাংশ) বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এঁদেরই একজন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। অভিযুক্তের তালিকায় দ্বিতীয় নাম কপিল মিশ্র। ২০২০ সালে দিল্লিতে দাঙ্গার আগে সিএএ বিরোধী আন্দোলন ভাঙতে এই কপিল মিশ্রই হুঙ্কার দিয়ে বলেছিলেন, ‘দেশ কা গদ্দারো কো গোলি মারো শালে কো’। এমন একজন ‘রত্ন’ রেখার মন্ত্রিসভায় আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাবেন! আরও একজন পরবেশ ভার্মা। তাঁর বিরুদ্ধে কুকথা বলার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। মামলাও চলছে। তিনি উপ মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। আরেকজন আশিস সুদ। তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভায় তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এসব কোনও মনগড়া কথা নয়। অভিযুক্ত পাঁচজন তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলার কথা জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে পেশ করা হলফনামায়। শুধু অভিযোগই নয়, নতুন মন্ত্রীদের সম্পত্তির পরিমাণও বেশ চোখ ধাঁধানো। যেমন, নতুন শিল্পমন্ত্রী মঞ্জিন্দর সিং সিরসা-র সম্পত্তির পরিমাণ ২৪৮ কোটি টাকা! পরবেশ ভার্মার ১১৩ কোটি টাকা। তুলনায় ‘গরিব’ মুখ্যমন্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ ৫.৫ কোটি টাকা। সাতজন মন্ত্রীর মিলিত গড় সম্পদের পরিমাণ ৫৬.৩ কোটি টাকা।
সদ্য গঠিত দিল্লি মন্ত্রিসভার এই ছবি অবশ্য ব্যতিক্রম নয়। এবং বলা যায় কেন্দ্রের মোদি মন্ত্রিসভাই এর পথপ্রদর্শক। ২০২৪-এর ৯ জুন শপথ নেওয়া তৃতীয় মোদি মন্ত্রিসভার সদস্যদের পেশ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে এডিআর দেখেছে, ২৮ জন মন্ত্রী রয়েছেন যাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে। এঁদের মধ্যে ১৯ জনের বিরুদ্ধে খুন, মহিলা নির্যাতনের মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে। মোট ৭১ জন মন্ত্রীর মধ্যে ৯৯ শতাংশই ক্রোড়পতি। মন্ত্রীদের গড় সম্পত্তির পরিমাণ ১০৭.২৪ কোটি টাকা। দেশের মানুষের ভোট দেওয়ার আগে বোধহয় এসব তথ্য জেনে নেওয়ার দরকার আছে। আসলে আম জনতা অনেক সময় জানতেও পারে না রাজ্য কিংবা দেশ শাসনের দায়িত্ব যাঁদের উপর ন্যস্ত করা হচ্ছে তাঁদের কারও কারও পরিচয় আসলে কী!