বিদ্যার্থীদের পঠনপাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
সৎ বিজেপি কর্মীদের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ ছিল, বেশিরভাগ বুথে এজেন্ট দেওয়ার লোক তাঁদের নেই। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটেও এটা দেখা গিয়েছে রাজ্যের উত্তর, দক্ষিণসহ প্রায় সর্বত্র। গত লোকসভার ভোটের পর থেকেই নেতাদের চলন বলন বদলে গিয়েছে। দেশকে তাঁরা ম্যাজিক দেখাতে মরিয়া—শ্যামাপ্রসাদের (মুখোপাধ্যায়) বাংলাও দখল করা সম্ভব। মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়! কিন্তু কীভাবে? আমাদের চেনা রাস্তা বিজেপির অত্যুৎসাহী নেতৃত্বের পছন্দ নয়। বাংলার মানুষের জন্য আন্দোলন করা, তাদের সুখ-দুঃখের সাথী হয়ে ওঠার প্রমাণ দেওয়া, বাংলার উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিশেষভাবে ব্যবহার করা ইত্যাদি কাম্য ছিল। বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক নেতৃত্ব সেই পথে হাঁটলেন না। তাঁরা তাকত বাড়াতে চাইলেন পড়শিদের ঘর ভাঙিয়ে! কিছু পার্টির বিক্ষুব্ধ কিংবা অপাংক্তেয় নেতাকে আঁকড়ে ধরলেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে স্বপদে বহাল জনপ্রতিধিরাও আছেন। অথচ রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের অনুগামী দলটি এতকাল শুনিয়ে গেল ‘নীতির রাজনীতি’র কাগুজে বুলি। বিজেপি নেতৃত্ব ভেবে নিলেন, অন্য দল থেকে কিছু নেতা বা জনপ্রতিনিধি আসা মানেই তাঁদের ভোটাররাও চলে আসবেন। কিন্তু এই বাস্তবটা ভেবে নেওয়া হল না যে ভারত রাষ্ট্রের কোনও ভোটারই কারও কেনা গোলাম নন। তাঁদের প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ রয়েছে। অন্যদিকে, যাঁদের ‘ইমপোর্ট’ করা হচ্ছে তাঁদের কেন স্বাগত জানাবেন ‘স্বদেশি’ ভাবধারার একটা দলের পুরনো কর্মী-সমর্থকরা?
ক্ষমতার মোহে অন্ধ নেতৃত্বের ভাবনার গোড়ার গলদটা স্পষ্ট হতে দেরি হয়নি। সারা রাজ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে আদি আর নব্য বিজেপির লড়াই। ব্যাপারটাকে বেশিরভাগ জায়গায় দলের অভ্যন্তরে মন কষাকষির পর্যায়ে আটকে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। বোঝানো হচ্ছে, আপাতত এসব কোনওভাবেই প্রকাশ্যে আনা চলবে না। তাহলে বিজেপির বাংলা দখলের স্বপ্নটি অঙ্কুরেই বিনষ্ট হবে। কিন্তু রেজিমেন্টেড পার্টির বজ্রআঁটুনি কী দ্রুত এবং ভীষণভাবে শিথিল হয়ে আসছে বৃহস্পতিবার তা খোলসা করে দিল বর্ধমান ও আসানসোল। আদি ও নব্য বিজেপির দ্বন্দ্ব দুই জায়গাতেই যুদ্ধের চেহারা নিল। সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ প্রভৃতির প্রায় কিছুই বাদ যায়নি। পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরও ‘সৌভাগ্য’ হয়েছে এসব চর্মচক্ষে দেখে যাওয়ার। আশঙ্কা হয়, ভোটের দিন যত এগিয়ে আসবে এই অশান্তি তত বাড়বে। সচেতন মানুষের মনে এই দুশ্চিন্তা ঢুকে গিয়েছে যে, ক্ষমতার ধারেকাছে পৌঁছনোর আগেই এই কদর্য চেহারা। ক্ষমতা হাতে পেলে এরা আরও কত কীই না করতে পারে। অতএব সাধু সাবধান!