বিদ্যার্থীদের পঠনপাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
বস্তুত বহু ক্ষতি স্বীকার এবং ত্যাগের বিনিময়ে আজ আমরা সারা বিশ্বের কাছে একটা ঈর্ষণীয় জাগয়ায় ভারতকে টেনে এনে তুলেছি। এখান থেকে পিছনে ফেরার আর কোনও জায়গা থাকতে পারে না। এর জন্য প্রথম প্রয়োজন, গত দশ মাসের ছবির ‘রিপ্লে’ রুখে দেওয়া। অবিচল সেই লক্ষ্যটাকে সামনে রেখে শনিবার ভারতে শুরু হয়েছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ টিকাকরণ কর্মসূচি। ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসেবে (লাইভ) রবিবার বিকেল ৫টায় ভারতের জনসংখ্যা ছিল ১৩৮ কোটি ৭৫ লক্ষ ৪৮ হাজার প্রায়। অতএব সহজ অনুমান এই, এবছরেই ভারতের জনসংখ্যা ১৪০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে চলেছে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শেষ হাসিটা হাসতে হলে সব নাগরিকের টিকাকরণ সরকারকে নিশ্চিত করতেই হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, প্রথম দফায় ৩ কোটি করোনা-যোদ্ধাকে ভ্যাকসিন বা টিকা দেওয়া হবে। প্রথম দিন সারা দেশে ১ লক্ষ ৯১ হাজার জন টিকা পেয়েছেন। যথেষ্ট সুষ্ঠুভাবেই কর্মসূচিটা পরিচালিত হয়েছে। ভারতীয়রা দেশে প্রস্তুত দু’টি ভ্যাকসিন পাচ্ছেন। সুখবর যে, টিকা নেওয়ার পর কারও ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য সমস্যা হয়নি। বরং পশ্চিমী দেশগুলিতে বিদেশি দামি ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কিছু অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ভারত তা এড়াতে পেরেছে। স্বভাবতই খুশি ভারতবাসীরা। ভারতীয় ভ্যাকসিন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীও দেশবাসীকে সবরকমে আশ্বস্ত করেছেন। তাঁর আর্জি, করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে গুজবে কেউ কান দেবেন না।
কিন্তু রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতা থেকে আমরা বোধহয় এমন একটা ক্ষেত্রেও বেরিয়ে আসতে পারলম না। কেন্দ্রের তরফে ভ্যাকসিন বণ্টনেও ‘আমরা’ ‘ওরা’র সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠে গেল। যেমন চলতি দফায় পশ্চিমবঙ্গের জন্য ভ্যাকসিন প্রয়োজন ১১ লক্ষের বেশি ডোজ। কিন্তু কেন্দ্র পাঠিয়েছে ৭ লক্ষেরও কম। মহারাষ্ট্র থেকেও অনুরূপ অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, তামিলনাড়ুতে প্রথম দফায় প্রয়োজনের থেকে অনেক বেশি ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে! আমরা জানি, তামিলনাড়ুর শাসক দল নরেন্দ্র মোদি সরকারের জোট শরিক। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ ও মহারাষ্ট্রে যারা ক্ষমতাসীন তারা বিজেপির বিরোধী। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, এমন পক্ষপাতিত্ব কি কাকতালীয়? এর মধ্যে রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতা একেবারে নেই—এটা মেনে নিতে পারছে না রাজনৈতিক মহল। এই ‘বঞ্চনা’র প্রতি খোলাখুলি আঙুল তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাবতীয় বিতর্ক বাদ দিলেও এটা যে একটা গুরুতর অব্যবস্থা তাতে সন্দেহ নেই। সুবিশাল একটা কর্মসূচির গোড়াতেই এমন অব্যবস্থা অবশ্যই খারাপ লক্ষণ। তাই প্রধানমন্ত্রীর উচিত এতে হস্তক্ষেপ করা। তাঁকে এটাও নিশ্চিত করতে হবে, সব নাগরিক যেন নিখরচায় করোনা টিকা পান। অন্যথায়, এই কর্মসূচি পুরো সফল হওয়া কঠিন। সেক্ষেত্রে শেষ হাসির সামনে একটা প্রশ্নচিহ্ন কিন্তু ঝুলেই থাকবে।