বিদ্যার্থীদের পঠনপাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন্তাধারায় অভিনবত্ব কোনও নতুন কথা নয়। আরও এক অভিনব ভাবনাচিন্তার প্রকাশ ঘটল গঙ্গাসাগরের ই-স্নান ব্যবস্থাপনায়। আমরা অনেকেই বিশ্বাস করি গঙ্গাজলে সব শুদ্ধ। শাস্ত্র সম্মত প্রচলিত এই ধর্মীয় ধারণাকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসেই পুণ্যস্নানের যে ব্যবস্থা সরকারি উদ্যোগে করা হয়েছে তা প্রশংসাযোগ্য। রাজ্যের এই কর্মকাণ্ডে সিলমোহরও দিয়েছে আদালত। ই-স্নানের জন্য সংশ্লিষ্ট অপশনে গিয়ে ক্লিক করলেই বাড়ি বসে মিলবে সাগরের জলভরা পাত্র স্নানের জন্য, মিলবে পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ, এমনকী প্রসাদের প্যাঁড়াও। থাকছে মন্দির ও বিগ্রহের ই-দর্শনের ব্যবস্থা। দুর্গাপুজোর সময়েও অষ্টমীর দিন এমন ব্যবস্থাই করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল মমতা-প্রশাসন। ঘরে বসেই বহু মানুষ পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। খুশিও হয়েছেন। মকর সংক্রান্তিতে সাগরের জলে স্নানের এমন ব্যবস্থাপনা নিশ্চয়ই একটি খুশির খবর। বিশেষত ইচ্ছে থাকলেও যাঁদের গঙ্গাসাগরে যাওয়ার সুযোগ নেই তাঁদের জন্য এটা সুখবর। এতে করোনা সংক্রমণের ভয়ও থাকবে না, হবে পুণ্যার্জনও। এমন বাস্তবমুখী ভাবনার শরিক যদি বহু মানুষ হন তাহলে নিঃসন্দেহে বলা যাবে গঙ্গাসাগরে ভিড় এবার কম হবে। নয়া এই উদ্যোগটি সফল হলে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার কাজটিও সরকারের পক্ষে সহজ হবে। আসলে ভিড়েই তো যত বিপদ। তা কমাতেই এমন অভিনব প্রচেষ্টা। রইল বাকি মেলা। সেখানে শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলাটা অবশ্য কর্তব্য। তবে ই-স্নানের সুযোগই যখন রাজ্য সরকার করে দিচ্ছে তখন জলে নেমে দীর্ঘক্ষণ স্নান করে করোনা বিপদ বাড়িয়ে না তোলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে হস্তক্ষেপ করতে চায় না রাজ্য সরকার। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হল গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে সরকারের নানা উদ্যোগ। সে কারণেই সাগরগামী জনতার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষার জন্য থাকছে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট সেন্টার, আরটিপিসিআর পরীক্ষাকেন্দ্র ও শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থাও। মাস্ক পরতেই হবে তীর্থযাত্রীদের। সাগরমেলার আয়োজনে আদালত এখনও কোনও বাধা না দেওয়ায় তীর্থযাত্রীরা কিছুটা হলেও স্বস্তিতে। তবে উদ্বেগ একটু রয়েই গেছে। ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা নিয়ে সরকারের বক্তব্য রিপোর্ট আকারে পেশ করার পর ১৩ জানুয়ারি অর্থাৎ পুণ্যস্নান শুরুর ঠিক আগের দিন সব কিছু খতিয়ে দেখে অভিমত জানাবে আদালত। তাই আপাতত প্রতীক্ষা। এসব ঝঞ্ঝাট এড়াতে রাজ্য সরকার ই-স্নানের যে সুযোগ এনেছে তা কাজে লাগালে মন্দ কী! গঙ্গাসাগর মেলা হবে বছর বছর। এবার না হয় সাগর স্নানটা ঘরে বসেই সেরে নেওয়া যাক। তাতে পুণ্যার্জনও হবে, থাকবে না করোনা সংক্রমণের আশঙ্কাও।