বিদ্যার্থীদের পঠনপাঠনে আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের কর্মপ্রাপ্তির যোগ। বিশেষত সরকারি বা আধা সরকারি ক্ষেত্রে যোগ প্রবল। ... বিশদ
একথা ঠিক, দেশের অখণ্ডতা রক্ষা, সার্বভৌমত্ব ও সংহতির প্রশ্নে কোনও আপস করা চলে না। সেক্ষেত্রে নরম মনোভাব দেখালে শত্রুপক্ষ তাকে দুর্বলতা বলেই ভাবে। দেশের মানুষেরও জানা উচিত লাদাখ সীমান্তে সঙ্কটটা কতটা গভীরে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বর্ষশেষের রিভিউ রিপোর্টই বলেছে, শীতে ফের লাদাখে স্থিতাবস্থা বদলের চেষ্টা করেছে চীন। প্রশ্ন হল, ভারতীয় সেনার উপর এবারও কি লালফৌজ অপ্রথাগত অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে? কারণ গত জুনে গলওয়ান উপত্যকায় লাল সেনা অপ্রত্যাশিত আস্ফালন দেখিয়ে ভারতীয় সেনার উপর পাথর, লোহার রড, বড় পেরেক লাগানো লাঠি ইত্যাদি ব্যবহার করে হামলা করেছিল। এমনকী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা না মেনে ভারত ভূখণ্ডে ঢুকে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল বলেও অভিযোগ। সে সময়েও প্রধানমন্ত্রী মোদি খোলসা করে ভারতবাসীকে কিছু জানাননি। তিনি ধোঁয়াশা রাখতেই ভালোবাসেন। কিন্তু সীমান্ত সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনওরকম ধোঁয়াশা রাখা অনুচিত। এটা ঠিক, লাদাখ সীমান্তে ভারত নজরদারি বাড়িয়েছে। ট্যাঙ্ক বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ইত্যাদি নিয়ে প্রস্তুত আছে ভারতীয় সেনা। কিন্তু যে দেশ কোনওরকম প্রোটোকল, চুক্তি মানতে চায় না তাদের সবক শেখানোর কাজটি খুব একটা সহজ নয়। করোনার শুরুতে বিশ্বের নানা দেশের সমালোচনায় বিদ্ধ হয়ে চীন একটু কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। তা সামলে উঠে এখন ফের স্বমহিমায়! চীনের সমরসজ্জা থেকে স্পষ্ট হচ্ছে তাদের আগ্রাসন নীতিকে সফল করতে এই শীতের মরশুমটিকেই বেছে নিচ্ছে তারা। সে কারণে ভারতকেও এর মোকাবিলায় প্রবল ঠান্ডাতেও লাদাখে অতন্দ্র প্রহরায় সেনা মোতায়েন রাখতে হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, দ্বিপাক্ষিক নানা বৈঠক, আন্তর্জাতিক মহলের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও লাদাখে দখলদারি চালাতে লালসেনা সক্রিয়। সঙ্গত কারণেই ভারতও নিজের অধিকারটি বুঝিয়ে দিতে প্রস্তুত। ফলে পরিস্থিতি ক্রমশও উত্তপ্ত হচ্ছে। চীনের ট্যাঙ্ক মোতায়েনের পাল্টা জবাব দিতে রণসরঞ্জাম পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। সীমান্তে এমন পরিস্থিতি সত্ত্বেও দেশবাসীকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। প্রকৃত পরিস্থিতিটি সামনে আনেনি মোদি সরকার। তাই বিষয়টিকে গোপন করার অভিযোগ উঠেছে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। ভ্যাকসিন নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত প্রচার এসবকে আড়াল করার কৌশল কি না তা নিয়ে এবার শুধু বিরোধীদের তরফেই নয়, অভিযোগ উঠল বিজেপির অন্দর থেকেই। ঘরের মধ্যে থেকে ওঠা এই প্রশ্নের কী জবাব দেবেন প্রধানমন্ত্রী? এখন দেখার, ভ্যাকসিন-রাজনীতি, চীনা আগ্রাসনসহ নানা প্রশ্নে ঘরে-বাইরের চাপ কীভাবে সামাল দেয় সরকার।
এবার অন্তত ভ্যাকসিন নিয়ে সাফল্যের গুণগান ছেড়ে লাদাখ সীমান্তের কোনও অংশ চীনের দখলে রয়েছে কি না সেটা স্পষ্ট করুন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি ভারতবাসীই বিশ্বাস করে, চীনের যাবতীয় চক্রান্ত প্রতিহত করার ক্ষমতা আছে ভারতীয় সেনার। কিন্তু দেশের শাসক যদি সরকারি তরফের ব্যর্থতা ঢাকতে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করে তাহলে তার ফল কখনও ভালো হতে পারে না। দীর্ঘ সংগ্রাম আর অনেক আত্মবলিদানের পর এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। ভারতবাসীর কাছে তাই ভারতভূমির অখণ্ডতা রক্ষার গুরুত্ব সবার আগে।