উচ্চতর বিদ্যায় আগ্রহ বাড়বে। মনোমতো বিষয় নিয়ে পঠন-পাঠন হবে। ব্যবসা স্থান শুভ। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
বছর দুয়েক আগে ভারত সফরে এসেছিল শ্রীলঙ্কা। দূষণ পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, মাঠেই বমি করেছিলেন শ্রীলঙ্কার অল রাউন্ডার ধনঞ্জয় ডি’সিলভা। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সুরঙ্গা লাকমল এবং লাহিরু গামেজ। এবার তেমনই দূষণের চাদরে ঢেকে গিয়েছে রাজধানী। এমনই অবস্থায় বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম দিল্লিতে। ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়াম অরুণ জেটলির নামাঙ্কিত হওয়ার পর প্রথম ম্যাচ। আর সেটাই এখন আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু। শুধু দেশে নয়। বিদেশেও। খোদ ভারতের রাজধানী দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। এই তকমা এবং আনুষঙ্গিক আতঙ্ক বয়ে বেড়াতে শুরু করে দিয়েছে দিল্লি। সেই আতঙ্ক নিত্য বাড়ছে। ভারতের ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বিষেণ সিং বেদি সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিলেন, দিল্লির কি কোনও আন্তর্জাতিক মানের ম্যাচ আয়োজন করার যোগ্যতা আছে? দু’বছর আগে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিষয়টি রীতিমতো আগ্রাসনের সঙ্গে এড়িয়ে গেলেও এবার কিন্তু সৌরভ গাঙ্গুলি অন্য সুর শুনিয়েছেন। সদ্য বোর্ডের মসনদে বসেছেন তিনি। এর মধ্যেই তিনি বলেছেন, আমাদের আরও একটু বেশি বাস্তববাদী হওয়া প্রয়োজন। তাঁর বক্তব্য পরিষ্কার, শীতের সময় উত্তরের রাজ্যগুলিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করার সমস্যাটা তো আর আমাদের অজানা নয়! তাহলে কেন আমরা অন্য
কিছু ভাবব না?
এ তো গেল খেলার প্রসঙ্গ। দিল্লিকে একটি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করতে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি প্রতিকূল হলে অন্য কোনও রাজ্যে তা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতেই পারে। কিন্তু তাতে দূষণের মাত্রা কমে যাবে না! সমস্যা তো গোড়ায়। আমরা যদি তাকেই সমূলে বিনাশ করতে না পারি, তাহলে কোনওমতেই এর থেকে মুক্তি মিলবে না। দিল্লি ধীরে ধীরে দূষণনগরীতে পরিণত হবে। উৎসবের মরশুম এবং শীতের শুরুতে এই দূষণের মূল কারণ দু’টি—শস্যের গোড়া পোড়ানো এবং গাড়ির ধোঁয়া। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই শস্য পোড়ানোর কাজটা বিজ্ঞানসম্মতভাবে করলে দিল্লিকে এই সঙ্কটের মধ্যে পড়তে হতো না। পাশাপাশি যে প্রচুর সংখ্যক গাড়ি দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকায় চলে, তা সারা বছর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তারপরও দূষণ নির্মূল করা কঠিন। কারণ, দিল্লিতে সবুজ কমছে। জনঘনত্ব বাড়ছে। যে সবুজ কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইডের মতো গ্রিন হাউস গ্যাস শোষণ করে বাতাসকে দূষণমুক্ত করে, ‘উন্নয়নে’র স্বার্থে তাকেই নিঃশেষ করে দিয়েছে মানুষ। তারপর দাবি করছে, দূষণে শ্বাস নেওয়া যাচ্ছে না। এটাও কি দ্বিচারিতা নয়? আসলে আমরাই যে সচেতন নই! আর এখনও সচেতন না হলে তার ফল একটাই, গোটা প্রজন্মের সমাধি।