উচ্চতর বিদ্যায় আগ্রহ বাড়বে। মনোমতো বিষয় নিয়ে পঠন-পাঠন হবে। ব্যবসা স্থান শুভ। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
গত কয়েকদিন ধরে শাসক শিবিরের সঙ্গে রাজ্যপালের চড়ে যাওয়া সংঘাতের পারদ যে আপাতত নিম্নমুখী হওয়ার নয়, সেটা এদিন এভাবে আরও একবার বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, আগামী কয়েকদিনে একের পর এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি যে সরকারের অস্বস্তি বাড়াতে চাইছেন, তাও স্পষ্ট। উল্লেখ্য, আগামীকাল সোমবার মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে থাকাকালীনই রাজ্যপাল শিলিগুড়ি যাচ্ছেন সীমা সুরক্ষা বলের একটি কর্মসূচিতে। তারপর তিনি সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন।
রাজ্যপাল এদিন সকালে সল্টলেকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের একটি সংগঠনের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তারপর যান ভারতীয় ডাক বিভাগের একটি কর্মসূচিতে। এছাড়াও দিনভর আরও কয়েকটি অনুষ্ঠানে হাজির থাকেন তিনি। এই সব কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এক জায়গায় তিনি বলেন, এখন আমি কিছু বললেই তার মধ্যে রাজনৈতিক অর্থ খোঁজা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে সংবিধান আমায় যে এক্তিয়ার দিয়েছে, আমি তা মেনে চলতে বাধ্য। আমার যা করার, তা অবশ্যই করব। আর যা করার কথা নয়, তা অবশ্যই আমার করা উচিত নয়। আসলে আমাদের কারও লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম করা উচিত নয়। আমি মনে করি, এটা প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
ধনকার যাই বলুন না কেন, শাসকপক্ষ অবশ্য তাঁর কাজকর্মের পিছনে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছে। তাই এ নিয়ে তাঁকে সরাসরি আক্রমণ করতেও পিছপা হচ্ছে না তারা। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নাম না করে বলেছেন যে রাজ্যপাল তাঁর এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করছেন এ রাজ্যে। এমনকী, এ ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের সরকারকেও বিষয়টির দিকে নজর দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য সরাসরি রাজ্যপালকে বিজেপির মুখপাত্র আখ্যা দিয়েছেন। আইনজীবী ধনকার যেভাবে তাঁর সীমা লঙ্ঘন করে কথাবার্তা বলছেন বা রাজ্যে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন, তাতে তাঁর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য স্পষ্ট বলেই মনে করছেন চন্দ্রিমারা।
এই পরিস্থিতিতে ধনকার অবশ্য প্রত্যাশিতভাবে পাশে পেয়েছেন রাজ্য বিজেপিকে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এদিন বলেন, তৃণমূল রাজ্যপালকে খাঁচায় আটকে রাখতে চাইছে। রাজ্যপাল রাজ্য সফরে বেরলে অনেক অপ্রিয় সত্য সামনে এসে পড়বে। তাই শাসক দল তাঁকে রাজভবনের ঘেরাটোপে আটকাতে চাইছে। দেশের মধ্যে একমাত্র এই রাজ্য সরকার একজন রাজ্যপালকে হেলিকপ্টার না দেওয়ার মতো অসৌজন্য দেখানোর কাজ করেছে। খেলা, মেলা, উৎসবের পিছনে শত শত কোটি টাকার হরির লুট চলছে রাজ্যে। অথচ খরচের দোহাই দিয়ে রাজ্যপালকে কপ্টার দিচ্ছে না সরকার। মুখ্যমন্ত্রী কপ্টার থেকে বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি গুনে ফেললেন। উনি যদি হাওয়া খেতে কপ্টার চড়তে পারেন, তাহলে রাজ্যপালের না খাওয়ার কী আছে? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এদিন বলেন, রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে এই ধরনের তরজা আমি আগে কখনও দেখিনি। উভয়পক্ষের মধ্যে কে সংবিধানের মধ্যে আছেন, আর কে এক্তিয়ার ছাড়িয়ে বাইরে চলে যাচ্ছেন, তা মানুষই বিচার করবে। কিন্তু যেভাবে মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্য করা হচ্ছে বা প্রতিক্রিয়া-পাল্টা প্রতিক্রিয়ার বহর চলছে, তা সুস্থ গণতন্ত্রের পক্ষে মোটেও যুক্তিগ্রাহ্য নয়।