উচ্চতর বিদ্যায় আগ্রহ বাড়বে। মনোমতো বিষয় নিয়ে পঠন-পাঠন হবে। ব্যবসা স্থান শুভ। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
সামনে বিধানসভা ভোট। তার আগে লোকসভা ভোটের ফলাফল ধরে বিধানসভাভিত্তিক কর্মী সম্মেলনের মধ্য দিয়ে পর্যালোচনায় নেমেছেন অনুব্রতবাবু। এদিন ছিল দ্বিতীয় কর্মী সম্মেলন। সম্মেলন শুরুর আগে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। যার জেরে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন অনুব্রতবাবু। দেরিয়াপুর পঞ্চায়েতের প্রধান মিঠু বিত্তারকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। একইভাবে মাঠপলশা পঞ্চায়েযেতের উপপ্রধান মহম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে দলীয় তদন্ত করার নির্দেশ দেন। দোষ প্রমাণিত হলে তিনদিনের মধ্যে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। জানা গিয়েছে, এদের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে এই পঞ্চায়েতের দুই সদস্যকে যেন কোনও কাজ না দেওয়া হয়। ওই দু’টি এলাকা দেখবেন প্রধান বলেও তিনি নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে, সাঁইথিয়ার বনগ্রামের অঞ্চল সভাপতি মহম্মদ কুবিরের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করার নির্দেশ দেন জেলা সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে দলবিরোধী ও একাধিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তাঁর ছেলে ফেসবুকে লোকসভা ভোটের সময় বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডলকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান বলে অভিযোগ।
এদিকে অঞ্চল ও বুথস্তরের নেতাদের হারের কারণ সম্পর্কে জানতে চান অনুব্রতবাবু। সেখানে কেউ বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি, কেউবা মানুষ যে সরে যাচ্ছেন তা বুঝতে পারেননি বলে জানান। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, মহম্মদবাজার ব্লকের আদিবাসী অধ্যুষিত চরিচা অঞ্চলের সভাপতি মহম্মদ সরিফ হারের কারণ হিসেবে এলাকায় মাওবাদীদের দাপাদাপির তত্ত্ব খাড়া করেন। তিনি বলেন, এলাকার কয়েকজন ঝাড়খণ্ড থেকে মাওবাদী এনে এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তার মধ্যে কালসুনি, তুলসীবোনা, ফুলবাগান এলাকায় ওদের প্রভাব বেশি। রাতেরবেলায় বোলেরো গাড়ি নিয়ে দাপাদাপির পাশাপাশি তৃণমূলের লোকজনদের টার্গেট করছে। কিছুদিন আগে বুলন হেমব্রম নামে আমাদের এক কর্মীকে গুলিও করে। যদিও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছিল। আমরা গুলির খোল সহ পুলিসকে জানাই। যা শুনে অনুব্রতবাবু বলেন, এতদিন কেন বলনি। ব্লক সভাপতিও বলেননি। তিনি অঞ্চল সভাপতিকে বকুনি দিয়ে বলেন, সাতটি বুথে হেরে এখন মাওবাদীর নামে দোষ দিচ্ছ। মানুষের কাছে যাও না। সমস্যা দেখ না। কত ভোটে হেরে রয়েছ সেটাও জানো না। জানা গিয়েছে, এই অঞ্চল থেকে ১০২৪ টি ভোটে পিছিয়ে পড়েছে শাসকদল। অনুব্রতবাবু এই অঞ্চল ছাড়াও এই ব্লকের দেরিয়াপুর, ভূতুড়া অঞ্চলে ফাইভ ম্যান কমিটি গড়ার নির্দেশ দেন। এদিন অনেকেই যুব সভাপতি ও বেশ কিছু প্রধানের বিরুদ্ধে অনুব্রতবাবুর সামনেই ক্ষোভ উগরে দেন।
সভায় সাঁইথিয়া পুরসভার কাউন্সিলার শান্তনু রায় বিজেপি ছেড়ে অনুব্রত মণ্ডলের হাত ধরে তৃণমূলে ফিরে আসেন। শান্তনুর দাবি, প্রথম থেকেই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এমনকী কংগ্রেস বোর্ড ভাঙার কারিগরও তিনি। ভুল বোঝাবুঝির ফলে বছর দু’য়েক আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু, বর্তমানে ওই দলে থেকে কোনও কাজ করতে পারছিলেন না। তাই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থেই তাঁর তৃণমূলে ফিরে আসা।
অনুব্রতবাবু বলেন, শান্তনু নিজের ভুল বুঝতে পেরে ফিরে এসেছেন। যুব সভাপতি ও প্রধানের বিরুদ্ধে কর্মীদের ক্ষোভের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানকার নেতা দেবাশিস সাহাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হবে। তাঁর দাবি, গতবারের চেয়েও এবার আরও বেশি ভোটে বিধানসভায় জয়ী হবেন নীলাবতী সাহা।