যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতাদর্শগত পার্থক্য থাকবে, জনতা-জনার্দন তাঁদের পছন্দমতো প্রার্থীকে বেছে নেবেন, এটাই গণতন্ত্র। ভোটের ফলাফলও সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে সেই ভোটদানের উপরই। এর সঙ্গে পারস্পরিক আক্রোশ এবং তার জেরে সংঘর্ষের ঘটনা কখনওই কাম্য নয়। ভোটযুদ্ধে জয়ী হয়ে দেশ বা কোনও একটি রাজ্যে প্রশাসনিক ক্ষমতায় আসীন হওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা অন্তত এইটুকু সংযম এবং সহানুভূতি দেখাবেন, এটা আশা করাই যায়। কিন্তু আক্রোশ যখন সংঘর্ষের চেহারা নেয়, মানুষ যখন হিংসাশ্রয়ী হয়ে ওঠে, তখনই তার বলি হতে হয় সাধারণ মানুষকে। অশান্ত পরিবেশ সুস্থ মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে ওঠে। এটাই অনেক সময় সাধারণ ভোটদাতাদের মনে আতঙ্কের চোরাস্রোত বয়ে নিয়ে আসে। কী হয়, কী হয়, এই আতঙ্কেই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যবসা-বাণিজ্য, পড়াশোনা এবং দৈনন্দিন কাজকর্ম। শিশু এবং অল্পবয়সিরাও এর কুপ্রভাবমুক্ত হতে পারে না।
রবিবার কলকাতার মতো শহরে যে ভোট হয়ে গেল, তাকে কিন্তু অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। কারণ, দু-একটি ছোটখাট অশান্তি ছাড়া গোটা ভোটপর্বটাই মিটেছে শান্তিতে। সকালে পোস্তা এলাকার রবীন্দ্র সরণীতে একটি বোমা পড়াই বলার মতো ঘটনা। বাকি গোটা দিনটাই কড়া হাতে পরিস্থিতি সামলেছেন কলকাতা পুলিস এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। কিন্তু এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ এবং আশঙ্কায় ভরা দিন অবলীলায় কাটিয়ে দিয়েও কলকাতা পুলিস নিশ্চিন্ত হতে পারছে না। তাদের মাথায় ঘুরছে, ফল বেরলে কী হবে। ভোটের ফলাফল বেরনোর পর সবকিছু শান্তিপূর্ণ রাখাটাই তাদের কাছে এখন মস্তবড় চ্যালেঞ্জ। ভোটের আগে বা ভোটের দিন যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, প্রায় একই ব্যবস্থা তাদের রাখতে হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় টহল দেওয়ার জন্য রাখতে হচ্ছে রেডিও ফ্লাইং এবং হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড। থাকছে ক্যুইক রেসপন্স টিম। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে থানাগুলিতে রাখতে হচ্ছে মোটরবাইকের টিম। এমনকী ভোটের দিন যেভাবে উত্তেজনাপ্রবণ বা স্পর্শকাতর বুথের তালিকা তৈরি করা হয়, এক্ষেত্রেও ভোট পরবর্তী হিংসার আশঙ্কায় উত্তেজনাপ্রবণ এলাকার তালিকা তৈরি করে রাখা হচ্ছে, যাতে চটজলদি ব্যবস্থা নেওয়া যায় বা ওই এলাকাগুলির উপর আগে থেকেই কড়া নজরদারি চালানো যায়।
প্রশ্ন হল, গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্রে এতকিছু করার কি আদৌ দরকার আছে? ফলাফল যাই হোক না কেন, সেটা মেনে নেওয়ার মতো মানসিক স্থিতি কেন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীদের থাকবে না। একই পাড়ায় পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থক থাকেন। কেন শুধুমাত্র ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে ঝাণ্ডার রং তাঁদের মধ্যে বিভেদের প্রাচীর তুলে দিয়ে একে অন্যের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক করে তুলবে। এসব বন্ধ হওয়া উচিত। সাধারণ মানুষ তো বটেই, নেতানেত্রী এবং রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকদেরও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অনুধাবন করা দরকার।