যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
এ কেমন ভোট বলুন তো? প্রচারে রোটি-কাপড়া-মকান নেই। নেতাদের ভাষণ মানেই বিভাজনের ডঙ্কা। কোথাও অনুপ্রবেশকারী, শরণার্থীর বিভেদ, কোথাও সরাসরি হিন্দুত্বের হুঙ্কার। কে কত বড় হিন্দু, তার যেন প্রতিযোগিতা চলছে। নির্বাচনের মূল ফোকাসটাই যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে, ‘গরব সে কহো হাম হিন্দু হ্যায়’। পাশাপাশি, মাঝে মাঝে বিভ্রম হতে হয়েছে—এটা ভোট প্রচার, না কুৎসার ফোয়ারা। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রধান এবং বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ভোট চাইছেন প্রায় দু’দশক আগের সন্ত্রাসবাদী হামলায় নিহত এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে কদর্যভাষায় কুৎসিতভাবে আক্রমণ করে। শুধু তাই নয়, তিনি নিজের জন্য ভোট চেয়েছেন, ৩০ বছর বা ৬০ বছর আগের সরকার কতটা ব্যর্থ ছিল, তা তুলে ধরে। সেই ব্যর্থতার বিচার-বিশ্লেষণ মূল্যায়ন তো ইতিহাসের গবেষকরা করবেন। অথচ, এই ভোটে প্রধান এবং একমাত্র বিবেচ্য হতে পারত গত পাঁচ বছর ধরে কেন্দ্রের সরকার কী করেছে। কতটা সাফল্য পেয়েছে। ব্যর্থতা দূর করতে আগামী দিনের পরিকল্পনা কী। এই ভোটে ২০১৪ সালে ঝুরি ঝুরি প্রতিশ্রুতির আবহে যে ঝড় তোলা হয়েছিল সেই প্রতিশ্রুতি কতটা পালিত হয়েছে তার খতিয়ান পেশ করার কথা। কেন দেশে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে জওয়ান ও সাধারণ মানুষের মৃত্যু বেড়েছে? কেন মানুষের আয় বাড়ছে না? কেন কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে? কেন কোটি কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন? দিনের পর দিন কেন জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে? কেন ভোট ঘোষণার আগে পর্যন্ত জ্বালানি তেলের দাম ছিল আকাশ-ছোঁয়া? কেন বেকাররা চাকরি পাচ্ছেন না? এবার তো সেই জবাব দেওয়ার পালা ছিল। এর জন্যই তো প্রতি পাঁচ বছর অন্তর লোকসভা ভোট হয়। যে ভোটে মানুষ কেন্দ্রের সরকারকে প্রশ্ন করেন, বিরোধীরা প্রশ্ন করেন। জবাব দেন দেশের প্রধান। তিনি প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কোথায় কী! উল্টে তিনি আত্মরক্ষার জন্য মুখ লুকিয়েছেন অতীতের সরকারের ব্যর্থতার আড়ালে। জওহরলাল নেহরু, রাজীব গান্ধীদের গাল দিয়ে ভোট প্রচারের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার প্রয়াস। একই কারণে নির্বাচনের মূল ইস্যু থেকে সরে তিনি কখনও রাম মন্দির, কখনও পাক-বিরোধী উগ্র জাতীয়তাবাদ, কখনও এনআরসি, নাগরিকত্ব বিল, গোহত্যা ইত্যাদির মাধ্যমে বিভাজন ও ধর্মীয় মেরুকরণে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন। প্রশ্ন করার সাহস কারও নেই। কারণ, তিনি সর্বশক্তিমান। অতএব, প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক, সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন থেকে আমরা কী পেলাম?