কর্মপ্রার্থীরা বেশ কিছু সুযোগের সংবাদে আনন্দিত হবেন। বিদ্যার্থীরা পরিশ্রমের সুফল নিশ্চয় পাবে। ভুল সিদ্ধান্ত থেকে ... বিশদ
ফিটনেস ফ্যানাটিক ধোনি এবং জনস্বার্থ মামলা
রোজমার্গ। প্লট নম্বর ১০। হরমু রেসিডেন্সিয়াল কলোনি। ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ঝাড়খণ্ড রাজ্য বিজেপি অফিসের উল্টোদিকের বাড়িতেই থাকেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। হরমু নদীর ধারে এই বাড়িটি পরিকল্পনামাফিক তৈরি করান তিনি। ফিটনেস ধরে রাখার জন্য রয়েছে ৫০ মিটারের সুইমিং পুল। যার জল শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। চারতলা বাড়িটির একতলায় আছে ছোট লন। মাল্টিজিম। পুরো বাড়িটি পিরামিড ধাঁচের। যত উপরে উঠবেন ততই জায়গা কমবে। ছাদে ইন্ডোর ক্রিকেট সেন্টার। গোটা বাড়িতেই তেরঙার ছোঁয়া। দশ বছর আগে লকডাউন ও কোয়ারেন্টাইন শব্দগুলি ভারতীয়দের অভিধানে ছিল না। কিন্তু ধোনি জানতেন, অফ টাইমে নিজেকে ফিট রাখার প্রয়োজনীয়তা কতখানি। কিন্তু এই সুইমিং পুল করার সময়ে যথেষ্ট সমস্যা পোহাতে হয় তাঁর পরিবারকে। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে ধোনি তখন টি-২০ বিশ্বকাপ খেলতে ব্যস্ত। নিজের জমিতে দশ ফুট গর্ত খোঁড়ার জন্য কলোনির বাসিন্দারা জনস্বার্থ মামলা করেন। স্বাভাবিকভাবেই মাহির অনুপস্থিতিতে ওই মামলায় দিশাহারা হয়ে পড়েন তাঁর বাবা পান সিং। এই সময়ে তাঁর পাশে দাঁড়ান বেয়াই এসকে গুপ্তা। যিনি রাঁচির বিখ্যাত ব্যবসায়ী। এসকে পাঠক, ডিএন ঝার মতো দুঁদে আইপিএস অফিসারদের করা জনস্বার্থ মামলা সামাল দিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গতে ছিলেন ধোনির ভগ্নীপতি গৌতম।
এমএসডি ও মাওবাদী
মাওবাদীরা তখন বিভিন্ন ইস্যুতে বনধ ডাকত। সেরকমই এক দিনে জামশেদপুরে ধোনির বন্ধু সত্যপ্রকাশের জন্মদিন ছিল। অনেকেই ওই পার্টিতে যেতে তাঁকে বারণ করেছিলেন। কিন্তু ধোনির জেদকে থামানো যায়নি। রাঁচির পুলিস সুপারের কাছ থেকে বুলেট প্রুফ জিপ চেয়ে গৌতমকে নিয়ে ধোনি সকালে চলে গেলেন জামশেদপুর। ফিরলেন রাতে। এই ঘটনায় স্থানীয় মাওবাদী নেতারা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। রাতু রোডে পুলিস হেড কোয়ার্টাসে ধোনিকে ডেকে তাঁর সঙ্গে চারজন নিরাপত্তারক্ষী দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। প্রথমে নিরাপত্তারক্ষী নিতে চাননি মাহি। গৌতম-জয়ন্তীরা বোঝানোর পর ধোনি রাজি হন। এটা ২০০৮ সালের ঘটনা। নিরাপত্তার স্বার্থেই এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসেনি।
দেওড়ি মায়ের ভক্ত
অধিকাংশ সফল মানুষই কোনও না কোনও দেবদেবীর ভক্ত হন। ব্যতিক্রম নন ধোনিও। রাঁচি- জামশেদপুর রোডের উপর অবস্থিত দেওড়ি মায়ের প্রচণ্ড ভক্ত তিনি। জাতীয় শিবির কিংবা সরাসরি ম্যাচ ভেন্যুতে যাওয়ার আগের দিন মাহিকে অবশ্যই দেখা যাবে এই মন্দিরে। এখানে দেবী দুর্গার মূর্তি আছে। তবে তিনি দশভুজা নন। তাঁর ১৬টি হাত। এই প্রতিমার ছবি সঙ্গেও রাখেন এমএসডি।
খাসি ক্রিকেট ও মাহি
১৯৮৮। স্কুল ক্রিকেটে সাফল্য ধোনির নাম এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সকলেই জানেন, ক্রিকেট খেলার আগে মাহি স্কুল দলের হয়ে গোলকিপিং করতেন। একদিন ক্রিকেট টিমের নিয়মিত কিপার না আসায় গেমস টিচার কেশব ব্যানার্জি তাঁকে উইকেটকিপারের দায়িত্ব দেন। বাকিটা ইতিহাস। এলাকায় কম্যান্ডো নামের একটি দলের হয়ে খেলতেন তিনি। ঝাড়খণ্ডে এই কোলিয়ারি ক্রিকেট ‘খাসি ক্রিকেট’ হিসেবে পরিচিত। চ্যাম্পিয়ন দলকে কোনও ট্রফি বা কাপের পরিবর্তে দেওয়া হয় রেওয়াজি খাসি। রাতে পাড়ায় ফিরে সেই খাসি কেটে পালন করা হত উৎসব। কোলিয়ারি ক্রিকেটে সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কার ছিল না। পরিবর্তে ছক্কা মারার জন্য দেওয়া হত হাজার টাকা। প্রতিটি হাফ-সেঞ্চুরির জন্য বরাদ্দ থাকত পাঁচশো টাকা। ওই নগদ অর্থ সংগ্রহ করে ব্র্যান্ডেড শার্ট কিংবা দামী পারফিউম কিনতেন এমএসডি। তাঁর হার্ড হিটার হয়ে ওঠার নেপথ্যে ওই নগদ পুরস্কার। খাসি ক্রিকেটে খেলতে যাওয়ার আগে অর্থ সংগ্রহের নিদির্ষ্ট টার্গেট নিয়ে বের হতেন ধোনি।