বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
সে বছর কলকাতার মাঠে তুমুল উত্তেজনা। কারণ, মহামেডান স্পোর্টিং নিয়ে এসেছিল ‘কালো চিতা’ চিমা ওকেরিকে। পাশাপাশি অস্তমিত মজিদ বাসকারও তখন সাদা-কালো ব্রিগেডে। মোহনবাগানের সম্বল প্রশান্ত ব্যানার্জি। এর সঙ্গে বাড়তি পাওনা দুই প্রধানের কোচের পদে দু’জন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। ইস্ট বেঙ্গলে পিকে এবং মোহন বাগানে অমল দত্ত। পাড়ার এক সিনিয়র ইস্ট বেঙ্গল সমর্থকের সঙ্গে কলকাতা লিগ দেখতে সল্টলেক স্টেডিয়ামে যাই। চার নম্বর গেটের গ্যালারিতে ছিলাম। এখনও সেই ম্যাচ আমার কাছে স্বপ্নের মতো। গোটা স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। জামশিদের গোলে ইস্ট বেঙ্গল লিড নেয়। বিপক্ষের প্রশান্ত ব্যানার্জি আটকাতে কোচ পিকে ব্যানার্জি ব্যবহার করেছিলেন অনবদ্য স্ন্যাচার সুনির্মল চক্রবর্তীকে। তাঁর জন্যই সেদিন প্রশান্ত ব্যানার্জি তেমন কিছু করতে পারেননি। বিরতির পর গোল শোধ করে মোহন বাগান। শীর্ণকায় কৃষ্ণবর্ণ কৃষ্ণগোপাল চৌধুরি মাঝমাঠ থেকে বল ধরে ব্যক্তিগত মুন্সিয়ানায় গোল পেয়েছিলেন। তারপর মোহন বাগান কোচ অমল দত্ত রক্ষণ আঁটসাঁট করে দেন। যার নেতৃত্বে ছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য। ওদের গোলরক্ষক তনুময় বসুও দু’টি দুরন্ত সেভ করায় ইস্ট বেঙ্গল জিততে পারেনি। খেলার মান আহামরি না হলেও জীবনে মাঠে বসে দেখা প্রথম ডার্বির মজাই আলাদা। সল্টলেক স্টেডিয়ামে খেলা দেখার পর আমরা হেঁটে উল্টোডাঙায় এসে কিছু খেয়ে রিহার্সালে যেতাম।
এখন আর মাঠে যাওয়া হয় না। মুঠোফোনেই ডার্বির আনন্দ নিই। তবে তা’ও সবসময় হয়ে ওঠে না। গত মরশুমে ইস্ট বেঙ্গলের জবি জাস্টিনের খেলা ভালো লেগেছিল। চোখ টানত বাগানের সনি নর্ডির স্কিলও। এ বছর ক্লাব কী করবে জানি না। অতীতে অনেক বেশি টুর্নামেন্ট খেলত কলকাতার দুই প্রধান। এখন সেসব উঠে গিয়েছে। ফুটবলের আঞ্চলিকতাকে মেরে ফেলা হচ্ছে। ক্রিকেট খেলে হাতে গোনা কয়েকটি দেশ। কিন্তু সেই খেলার পিছনে কোটি কোটি টাকা উড়ছে। দুয়োরানি হয়ে পড়ছে ফুটবল। অথচ ফুটবলের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে তৃতীয় বিশ্বের প্রকৃত উন্মাদনা। এই খেলা জড়িয়ে আছে প্রাণের সঙ্গে। কিন্তু ভারত ফুটবলের ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। একটা সময়ে দেশের প্রায় সবকটি রাজ্য থেকেই ফুটবলার উঠে আসত। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। আসলে আমরা নিজেরাই নিজেদের কবর খুঁড়ে চলেছি। কবে হুঁশ ফিরবে সেটাই দেখার।
অনুলিখন: সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়