বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
কোচ আলেজান্দ্রোর এটি দ্বিতীয় আই লিগ। কোনও অঘটন না ঘটলে এবারও এই দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বিন্দুমাত্র আশা নেই। রক্ষণ-আক্রমণে কোনও ভারসাম্য নেই। বুধবারের পর প্রশ্ন উঠতেই পারে, কোন ক্রীড়া বিজ্ঞানের যুক্তিতে আলেজান্দ্রো এই বিদেশিদের পছন্দ করলেন? না হলে প্রতিপক্ষ বক্সে দাঁড়িয়ে ব্যাকপাস করেন ইস্ট বেঙ্গলের স্প্যানিশ স্ট্রাইকার মার্কোস এসপাডা! বিরাট চেহারার এই ফুটবলারের আক্রমণে কোনও ছোবল নেই। কোলাডোকে গোটা ম্যাচে খুঁজে পাওয়া যায়নি। লাল-হলুদ আক্রমণের দুর্বলতা বহু আলোচনায় এখন ক্লিশে হয়ে গিয়েছে। সেই দলের তীব্রতা বাড়াতে দুই স্টপার আক্রমণে উঠে আসবেই, সেটাই তো স্বাভাবিক। বুধবার গোকুলামের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে বিপক্ষ বক্সে হেড করতে উঠে এলেন ইস্ট বেঙ্গলের দুই স্টপার মার্তি ক্রেসপি ও আসির আখতার। সেই ফাঁকা জায়গা কাজে লাগালেন গোকুলামের জোড়া ফলা হেনরি কিসেকা ও মার্কাস জোসেফ। ইস্ট বেঙ্গল রক্ষণের কঙ্কালসার চেহারা প্রকট করে দিলেন তাঁরা।
২০ মিনিটে গোকুলামের প্রথম গোল ঠিক চারটি টাচে। শেষ দু’টি টাচে সেবাস্টিয়ানের পাস থেকে হেনরি কিসেকা বক্সের ডানদিকে দাঁড়িয়ে যখন বলটা ধরলেন, তখন তাঁর সামনে ইস্ট বেঙ্গলের লেফট ব্যাক অভিষেক আম্বেকর। প্রথমে ইনসাইড ডজ করে অভিষেককে মাটি ধরিয়ে দেন হেনরি। তারপর তাঁর বাঁপায়ের শট গোলরক্ষক রালতের হাতে লেগে দ্বিতীয় পোস্ট দিয়ে জালে জড়িয়ে যায় (১-০)। তবে লাল-হলুদের গোলরক্ষক রালতে ১৪ মিনিটের মাথায় দু’বার অনবদ্য সেভ করে দলকে বাঁচান। প্রথমে নিখুঁত আউটিংয়ে তিনি ব্লক করেন হেনরিকে। ফিরতি বলে মার্কাসের শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেভ করতে দেখা যায় রালতেকে। ইস্ট বেঙ্গলের আপফ্রন্টে কিছুটা নজর কাড়ছেন হুয়ান মেরা। এই উইং হাফ ৮ মিনিটে জাস্টিন জর্জের থেকে বল কেড়ে নিয়ে প্রায় ২২ গজ থেকে দূর থেকে বাঁপায়ের শট নেন। যা ইস্ট বেঙ্গলের প্রাক্তন গোলরক্ষক উবেদের হাতে লেগে পোস্টে ধাক্কা খায়।
এদিন ম্যাচে মেরুন-সাদা জার্সিতে খেলা গোকুলামের প্রথম একাদশে তিন বিদেশি ছিলেন। উল্টোদিকে লাল-হলুদ পাঁচ বিদেশি নিয়ে শুরু করে। তাতেও আলেজান্দ্রোর দল আধিপত্য নিয়ে খেলতে পারেনি। চ্যাম্পিয়নের লক্ষ্যে থাকা দল ঘরের মাঠে এমন পরিকল্পনাহীন ফুটবল খেলতে পারে, তা এই ইস্ট বেঙ্গলকে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। তবে ২৭ মিনিটে সমতা ফেরায় আলেজান্দ্রোর দল। লালরিনডিকা রালতের ফ্রি-কিক থেকে আসিরের হেড পোস্টে লেগে ফিরে এলে সেই বল গোলে ঠেলেন কাসিম আইদারা (১-১)। বিরতির ঠিক আগে ইস্ট বেঙ্গল শিবিরের হৃদকম্পন বাড়িয়ে দেন স্টপার মার্তি ক্রেসপি। বক্সে মার্কাস জোসেফের একটি নিরীহ পুশ ধরে ঠান্ডা মাথায় রিসিভ করে ক্লিয়ারের উদ্দেশ্য ছিল ক্রেসপির। কিন্তু তাঁর শট সরাসরি জালে জড়ায় (২-১)। গ্যালারিতে কয়েকজন সমর্থক তখন আলোচনা করছিলেন, ‘এই বিদেশি স্টপার ডার্বিতে ইস্ট বেঙ্গল রক্ষণকে নেতৃত্ব দেবেন, ভাবতেই ভয় লাগছে!’
৬৫ মিনিটে গোকুলামের স্টপার আন্দ্রে ডেনিসের উঁচু পাস ফ্লাইট মিস করেন আসির আখতার। সেই বল ধরে হেনরি বাঁদিকে পাস বাড়ান মার্কাসকে। বক্সে ঢুকে মার্কাসের শট প্রথমে সেভ করেন রালতে। ফিরতি বল গোলে ঠেলেন ত্রিনিদাদ-টোবাগোর ফুটবলার জোসেফ (৩-১)। এই অর্ধে ইস্ট বেঙ্গলের কোনও বলার মতো আক্রমণ নেই। লাল-হলুদ মাঝমাঠে ব্লকিং না থাকায় অবাধে বিচরণ করলেন গোকুলামের ফুটবলার।
ইস্ট বেঙ্গল: রালতে, কমলপ্রীত সিং, আসির আখতার, মার্তি ক্রেসপি,অভিষেক আম্বেকর, কাসিম আইদারা, লালরিনডিকা রালতে (টংডোম্বা সিং ৮১মি:), পিন্টু মাহাতা (রোনাল্ডো অলিভিয়েরা ৬৭ মি:), হুয়ান মেরা, হাইমে স্যান্টোস কোলাডো, মার্কোস এসপাডা।