শারীরিক কারণে কর্মে বাধা দেখা দেবে। সন্তানরা আপনার কথা মেনে না চলায় মন ভারাক্রান্ত হবে। ... বিশদ
বারবার বিতর্কের সামনের সারিতে আসা বিশু পারিয়াল ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দুর্গাপুরের ‘জায়েন্ট কিলার’ ছিলেন। তিনি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে পরাজিত করেছিলেন। এবার সেই অপূর্ব মুখোপাধ্যায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি। আর তিনি তৃণমূলের প্রার্থী। দু’জনে একই ছাতার তলায়। প্রার্থী হওয়ার পর দু’জনের একান্ত আলাপচারিতাও হয়েছে। তাই এই আসনে জয়ের আশা দেখছে শাসক শিবির। যদিও বিরোধীদের দাবি, রেকর্ড মার্জিনে পরাজিত হবেন বিশুবাবু। অপরাজেয় তকমা তাঁকে খোয়াতে হবে। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘড়ুই বলেন, এবার রেকর্ড মার্জিনে পরাজিত হয়ে বিশ্বনাথ পারিয়ালকে রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিতে হবে।
খেলা হোক বা রাজনীতি, জয়ই শেষ কথা। আর জয় যদি মাপকাঠি হয়ে থাকে তাহলে তাতে ১০০ শতাংশ উত্তীর্ণ বিশুবাবু। ছাত্র, শ্রমিক ও পুরসভার গণ্ডি টপকে বিধানসভাতেও তিনি জয়লাভ করেছেন। ১৯৮৬ সালে বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী কলেজের ছাত্র নির্বাচনে তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়। পরে দুর্গাপুর পুরসভার কাউন্সিলার নির্বাচিত হন তিনি। ২০০২ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি টানা কাউন্সিলার নির্বাচিত হন। শত চাপের মধ্যে থেকেও তিনি জয়ের রাস্তা দেখে নিয়েছিলেন। এর পাশাপাশি রয়েছে তাঁর শ্রমিক আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাস। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্ব তিনি কড়া হাতে সামলেছেন। বর্তমানে তিনি জেলার আইএনটিটিইউসি সভাপতি।
তবে তাঁর রাজনীতির পথ সোজা ছিল না। নানা ওঠাপড়া মধ্য দিয়েই গিয়েছে। তিনি দলের অভ্যন্তরের নানা বিতর্কেও বারবার জড়িয়েছেন। দল পরিবর্তনের ইতিহাস রয়েছে তাঁর। ২০১৬ সালে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে তিনি কংগ্রেসের টিকিটে বামেদের সমর্থনে নির্বাচন লড়েন। প্রতিপক্ষ ছিলেন অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। সেই সময় তিনি দুর্গাপুরের মেয়রও ছিলেন। এহেন হেভিওয়েট প্রার্থীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেছিলেন বিশ্বনাথবাবু। কংগ্রেসের টিকিটে বামেদের সমর্থনে জয় পেলেও দুর্গাপুরবাসী জানেন, তাঁর নিজস্ব ভোট ব্যাঙ্ক এর পিছনে বড় অবদান রেখেছিল। যদিও তৃণমূল থেকে তিনি খুব বেশি দিন দূরে থাকেননি। তিনি ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন। তবে তৃণমূলে থেকেও স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল নেতার সঙ্গে তাঁর বিবাদ দুর্গাপুরের সর্বজনবিদিত। নানা ইস্যুতে তিনি লড়াই করেছেন। এমনকী স্থানীয়দের কাজ দেওয়ার দাবিতে একাধিকবার বড় আন্দোলনও করেছেন। তা দলের অনেক বড় নেতার পছন্দ না হলেও তিনি তা পরোয়া করেননি। এবারও তাঁর টিকিট পাওয়া নিয়ে সংশয় ছিল। অবশেষে সেই ‘লড়াকু বিশুর’ হাতেই দলের প্রতীক তুলে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই পুরনো মেজাজে দুর্গাপুরের ঘরের ছেলে বিশু। তাঁর পাশে থাকার বার্তা এসেছে জেলা সভাপতির কাছ থেকেও। একদিকে তৃণমূলের শক্তি, অন্যদিকে বিশ্বনাথ পারিয়ালের জনসংযোগ। এই দুইয়ের জোরে তিনি তাঁর অপরাজেয় তকমা টিকিয়ে রাখতে পারেন কি না, সেই দিকেই নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের।
বিশ্বনাথবাবু বলেন, আমি কোনওদিন নির্বাচনে পরাজিত হইনি। মুখ্যমন্ত্রী আমার উপর আস্থা রেখেছেন। জেলা সভাপতি নির্দেশ মেনে নির্বাচনী যুদ্ধে নেমে পড়েছি। এবারও জিতব।