সুদেব দাস, রানাঘাট: বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে দেওয়াল দখল করা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন ভোট ঘোষণার পর শুক্রবার রাজ্যের শাসকদলের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো নদীয়া জেলার ১৭টি কেন্দ্রে জোরকদমে তৃণমূল প্রার্থীদের নাম লিখছেন কর্মীরা। জেলা সভাপতি মহুয়া মৈত্র আগেই কর্মীদের প্রার্থী ঘোষণার সাতদিনের মধ্যে জেলাজুড়ে দেওয়াল লিখনের কাজ শেষ করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন। সেই নির্দেশমতোই আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে দেওয়াল লিখনের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন কর্মী-সমর্থকরা। বর্তমানে তাঁরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে দিন-রাত এক করে দেওয়াল লিখনের কাজে ব্যস্ত। কর্মীদের সঙ্গে প্রার্থীরাও দেওয়াল লিখনের কাজে হাত মেলাচ্ছেন। শাসকদলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর জেলার চাপড়া বিধানসভা ছাড়া কোথাও সেভাবে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়নি। ভোটকে সামনে রেখে জেলা সভাপতি করিমপুর থেকে হরিণঘাটা পর্যন্ত প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় বুথভিত্তিক কর্মিসভা করছেন। সাংগঠনিক ভিত্তি ও সংগঠন মজবুত করতে তিনি বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন। প্রতিটি কর্মিসভাতেই কর্মীদের উদ্দেশে মহুয়া বলেছেন, এই নির্বাচন আমাকে এমপি করার নির্বাচন নয়। প্রার্থী যেই হোক না কেন প্রত্যেক কর্মীকে মনে রাখতে হবে-এই নির্বাচন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করার। পাশাপাশি কর্মিসভা থেকেই প্রার্থী ঘোষণার পর সাতদিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন জেলা সভাপতি। তিনি বলেন, দেওয়াল লিখন সাতদিনের বেশি সময় দেওয়া যাবে না। নির্বাচনের যাবতীয় কাজ করতে হবে নিয়ম মেনে। তাঁর বার্তা মেনেই রানাঘাট দক্ষিণ, শান্তিপুর, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব, রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম প্রভৃতি এলাকায় দলের কর্মীরা এখন দেওয়াল লিখনের কাজে জোর দিয়েছেন। তাছাড়া ইতিমধ্যেই বাড়ি বাড়ি ভোট প্রচার শুরু করেছেন রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী বর্ণালী দে। মাঝেমধ্যেই তাঁকে আবার দেওয়াল লিখনের কাজেও শামিল হতে দেখা যাচ্ছে। বর্ণালী বলেন, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা জীবন দিয়ে হলেও রক্ষা করব। আমাদের সবারই লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখা। তাই দলের জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে দলীয় প্রচার ও দেওয়াল লিখন শুরু হয়েছে। শনিবার রাত প্রায় ১০টাতেও রানাঘাটে রথতলা সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় জোড়াফুল শিবিরের কর্মীদের রং-তুলি হাতে প্রার্থীর নাম লিখতে দেখা গিয়েছে। একই চিত্র দেখা গিয়েছে শহরের বিশ্বাসপাড়া, দক্ষিণপাড়া এলাকাতেও। কর্মীরা বলেন, নিঃসন্দেহে এবারের বিধানসভা নির্বাচন অনেকটাই তাৎপর্যপূর্ণ। আগে থেকেই আমরা দেওয়াল দখল করেছি। প্রার্থীর নাম ফাঁকা রেখে দলীয় প্রতীক চিহ্ন এঁকেছিলাম। প্রার্থী ঘোষণা হতেই এবার সেই শূন্যস্থান পূরণ করছি।
শান্তিপুর শহরেও তৃণমূলের প্রার্থী অজয় দের নামে জোরকদমে দেওয়াল লেখার কাজ চলছে। তৃণমূল কর্মী পলসন ঘোষ বলেন, আমাদের প্রার্থী ১৯৯১সাল থেকে ছ’বার ভোটে জয়ী হয়েছেন। তাই তিনিও আমাদের ভোট বৈতরণী পার হওয়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে আটটি টিম বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে কাজ করছি।