শারীরিক কারণে কর্মে বাধা দেখা দেবে। সন্তানরা আপনার কথা মেনে না চলায় মন ভারাক্রান্ত হবে। ... বিশদ
শহরের ৩নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাজেন্দ্রবাবুকে ‘রাজুদা’ বলেই বেশি চেনেন নলহাটির মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত। কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতির শুরু। ২০০৯ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। বাম জমানায় মূলত নেতৃত্বের গুণেই বিভিন্ন দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেন। তাঁকে এবার নলহাটিতে তৃণমূলের প্রার্থী করা কার্যত মাস্টার স্ট্রোক বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে এসম্পর্কে বিজেপির জেলা সহ সভাপতি শুভাশিস চৌধুরী বলেন, ভূমিপুত্রই হোক আর বাংলার মেয়েই হোক নলহাটির মানুষ এবার আসল পরিবর্তন চাইছেন। এই কেন্দ্রের মানুষ বিজেপি প্রার্থীকেই জয়ী করবেন।
১৯৫১ থেকে ১৯৭২সাল পর্যন্ত ভূমিপুত্রকে বিধায়ক হিসাবে পেয়েছেন নলহাটিবাসী। ১৯৯৭সালে মুরারইয়ের সোহারা গ্রামের বাসিন্দা ফরওয়ার্ড ব্লকের ভবানী প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এই কেন্দ্রের বিধায়ক হন। ১৯৮২সালে ওই দলেরই বিধায়ক হন দুবরাজপুরের বাসিন্দা সাত্ত্বিক কুমার রায়। পরপর তিনবার তিনিই বিধায়ক ছিলেন। ১৯৯৬সালে কলকাতার খিদিরপুরের বাসিন্দা কলিমুদ্দিন শামস ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে নলহাটির বিধায়ক হন। ২০০৬সালে বিধায়ক হন ভবানীবাবুর ছেলে দীপক চট্টোপাধ্যায়। ২০১১সালে সবুজ ঝড়ে ধুলিসাৎ হয় বামদুর্গ। কংগ্রেসের প্রতীকে জিতে বিধায়ক হন তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অভিজিৎ। এরপর প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি হওয়ায় বাবার আসন জঙ্গিপুরে চলে যান অভিজিৎ। ফলে ২০১৩ সালে উপনির্বাচনে এই কেন্দ্রে ফের বিধায়ক হন ফরওয়ার্ড ব্লকের দীপক চট্টোপাধ্যায়। ২০১৬সালের ভোটে এই কেন্দ্রে দীপকবাবুকে ১০হাজারেও বেশি ভোটে হারিয়ে তৃণমূলের প্রতীকে জয়ী হন কলিমুদ্দিন পুত্র মইনুদ্দিন শামস।
গত প্রায় ৪৪ বছর ধরে এই কেন্দ্রে একের পর এক বহিরাগত বিধায়ক হয়েছেন। ফলে এখানে ভূমিপুত্র প্রার্থীর দাবি তোলেন এলাকাবাসী সহ তৃণমূল কর্মীরা। শেষ পর্যন্ত টিকিট না পেয়ে ফেসবুক লাইভ করে তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন মইনুদ্দিন। এমনকী, তিনি এই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চ্যালেঞ্জও করেন। এসম্পর্কে দুবরাজপুরে এক জনসভা শেষে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ওঁর যা ইচ্ছে করুক। কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না।
রবিবার রাজেন্দ্রবাবুর জয়ের কামনায় আনার সাহেবের মাজারে চাদর চড়ালেন এলাকাবাসী। মনুজা বিবি, সংযুক্তা প্রামাণিক, সঞ্জু ফুলমালিরা বলেন, জন্ম থেকে দেখে আসছি এই কেন্দ্রের বিধায়ক বহিরাগত। অন্য বিধানসভার তুলনায় উন্নয়নের নিরিখে অনেকটাই পিছিয়ে নলহাটি। ভূমিপুত্র প্রার্থী হওয়ার উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে শিক্ষিত মহলেও। নলহাটি মাধ্যমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক আনোয়ারুল আলম বলেন, এলাকার লোক প্রার্থী হওয়ায় আমরা খুব খুশি হয়েছি। রাজুবাবু খুব ভালো মিশুকে মানুষ। সব মানুষই তাঁর কাছে সমান।
এদিন রাজেন্দ্রবাবু বলেন, মানুষ যে আমাকে এত ভালবাসেন প্রার্থী না হলে তা বুঝতেই পারতাম না। প্রতিটি মানুষের এই আবেগ ভোটবাক্সে প্রতিফলিত হবে।