শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, গত কয়েকদিনে ট্রেন, বাস, ট্রাকে করে ভিনরাজ্য থেকে কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরেছেন। অনেকের করোনা পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। অনেকের এখন করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত শনিবার করোনার যে রিপোর্ট এসেছে, তাতে ৮০ শতাংশই পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। সকলের রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় জেলাবাসীর কাছে এটা অত্যন্ত ভালো খবর।
মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই লকডাউনের মধ্যেই জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের আসা শুরু হয়। প্রথমদিকে বাস ভাড়া করে তাঁরা নিজেরাই বাড়ি ফেরা শুরু করেন। পরে, বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু হতে জেলার বিভিন্ন ব্লকের কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিক ট্রেনে বাড়ি ফিরেছেন। মুম্বই, দিল্লি এবং গুজরাত থেকে যেসব পরিযায়ী শ্রমিক এই জেলায় ফিরেছেন, তাঁদের সকলের করোনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় চলতি মাসেই জেলায় অধিকাংশ গ্রামীণ হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহকেন্দ্র চালু হয়েছে। জেলায় এখন মোট ১৬টি নমুনা সংগ্রহকেন্দ্র রয়েছে। ভিনরাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সংশ্লিষ্ট ব্লকেই করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন ব্লক হাসপাতাল মিলিয়ে কয়েকশো করে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে জেলায় মুম্বই এবং দিল্লি থেকে ফেরা চার জন পরিযায়ী শ্রমিকসহ ছ’জন করোনা আক্রান্ত হন। তার আগে সদর ব্লকেও একজন পরিযায়ী শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হন। স্বাভাবিকভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। জেলার বহু গ্রামে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। অনেক জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিকদের গ্রাম থেকে দূরে ক্লাবে বা স্কুলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোথাও আবার ফাঁকা মাঠে ত্রিপল খাটিয়ে রাখা হচ্ছে।
সদর ব্লকের মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেড়াপাল গ্রামে বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছেন। বিকাশ আদক নামে তাঁদেরই একজন বলেন, আমাদের সকলের নমুনা নেওয়া হয়েছিল। সকলেরই করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। আমাদের সঙ্গে ঘাটালের অনেক পরিযায়ী শ্রমিক এসেছিলেন। তাঁদের সকলেরও রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তাই, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে ১৮ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহকেন্দ্র থেকে নেওয়া ১১৫৯ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিক ছাড়াও করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা লোকজনও রয়েছেন। তবে, বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের সকলের রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে।
অন্যদিকে, জেলায় মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ক্ষীরপাই, চন্দ্রকোণা টাউন এবং মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগর এলাকার একাংশ কন্টেইনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত ছিল। এছাড়াও গত সপ্তাহে জেলায় দাসপুর-১ ব্লকে কামালডিহি এবং কেশপুর ব্লকের ঝেটা জামবনী, চাথলা এবং রাউতা গ্রামে করোনা ধরা পড়ায় এই এলাকাগুলি কন্টেইনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। চন্দ্রকোণা রোডের একটি এলাকাকেও কন্টেইনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে সোমবার থেকে মেদিনীপুর, ক্ষীরপাই এবং চন্দ্রকোণা টাউনের কন্টেইনমেন্ট জোন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে, এলাকার বাসিন্দারা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন।