সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
ইলামবাজার থানার বিলাতি পঞ্চায়েতের জগদলপুর গ্রামে শনিবার বুথ কমিটির নির্বাচন ছিল। গ্রামের তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কার হাতে ক্ষমতাভার থাকবে তা নির্ণয় করার জন্যই ইলামবাজার ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে বাকি ব্লক নেতৃত্ব গ্রামে পৌঁছয়। কিন্তু মীমাংসা না হওয়ায় ব্লক নেতৃত্ব ফিরে যায়। তারপরই বুথ কমিটির সভাপতি মানোয়ার শেখ ও কোর কমিটির সদস্য নাজির শেখের অনুগামীদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ইলামবাজার থানার পুলিস গ্রামে চলে এলে তখনকার মতো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু রবিবার বিকেলের পর থেকে সেই অশান্তি চরম আকার নেয়। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গ্রামে ব্যাপক বোমাবাজি হয়, পাশাপাশি দুই দলের অনুগামীদের বাড়িতেই ভাঙচুর, লুটপাট ও মারধরের ঘটনা ঘটে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ইলামবাজার থানার পুলিস বোমাবাজির খবর পেয়ে গ্রামে আসার পর তাদের সামনেও বোমা ফাটানো হয়। এমনকী গুলিও চালানো হয় বলেও দাবি করেন গ্রামবাসীরা। ঘটনায় দুই গোষ্ঠীর কয়েকজন জখমও হয়েছে। তাঁদের ইলামবাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গ্রামে বিরাট পুলিস বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সোমবার সকালে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও এলাকা এখনও থমথমে রয়েছে। এদিন সকালেও গ্রামে প্রবেশের মূল রাস্তায় ও গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় পুলিসকে টহল দিতে দেখা যায়। কিন্তু গত দু’দিনের ঘটনার আতঙ্কে গ্রামের রাস্তায় লোকজনও ছিল কম। রবিবার রাতে গ্রামে যে, ব্যাপকহারে বোমাবাজি হয়েছে তা রাস্তা ও বাড়ির দেওয়ালগুলিতে তাকালেই বোঝা যাচ্ছে। এদিন সকালেও গ্রাম থেকে তাজা বোমা উদ্ধার হওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গুলির খোলও পাওয়া যায়। এই ঘটনার জেরে আতঙ্কিত হয়ে গ্রামের পড়ুয়ারা এদিন স্কুলে যায়নি। এমনকী দু’দিন ধরে এলাকা উত্তপ্ত থাকায় জগদ্দলপুরে স্কুলের শিক্ষকরাও আতঙ্কে স্কুলে আসেননি বলে জানিয়েছে পড়ুয়ারা। যদিও গ্রামে অশান্তি ও বোমাবাজির ঘটনার পিছনে তৃণমূল জড়িত নয় বলেই জানিয়েছেন ইলামবাজার ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। এই ঘটনাকে সম্পূর্ণ গ্রাম্য বিবাদ বলে আখ্যা দিয়েছেন তারা। তবে গ্রামের সকলেই যে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত সেই বিষয়টি স্বীকার করছে দলেরই একপক্ষ।
জগদ্দলপুর গ্রামের কোর কমিটির সদস্য নাজির শেখের অনুগামী তথা গ্রামের বাসিন্দা নুরসিনা বিবি বলেন, ওইদিন বুথ কমিটি গঠনের মিটিং ছিল। কিন্তু সেই মিটিং অশান্তির জেরে ভেস্তে যায়। তারপর বুথ সভাপতির অনুগামীরা গ্রামে বোমাবাজি করে। বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। আমার বাড়িতে ভাঙচুর করে টাকা ও গয়না লুট করে নিয়ে চলে যায়।
গ্রামের বুথ সভাপতি মানোয়ার শেখ বলেন, বুথ কমিটি গঠনের মিটিং চলাকালীন নাজির শেখের কয়েকজন অনুগামী আমাদের উপর চড়াও হয়ে বাঁশ, লাঠি নিয়ে মারধর শুরু করে। পরে রবিবার বিকেলের পর থেকে আমার ও আমাদের লোকজনদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি ও গুলি চালাতে থাকে। গ্রামের মানুষ সবাই প্রায় একদিকে থাকার ফলে তারা বাইরে থেকে দুষ্কৃতী এনে গ্রামে অশান্তি করে। সবকিছুই হয় ইলামবাজার থানার পুলিস উপস্থিত থাকাকালীন।
ইলামবাজার ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, জগদ্দলপুরের ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগাযোগ নেই। এটি একেবারেই গ্রাম্য বিবাদ। গ্রামে যারা অশান্তি করেছে, তারা সকলেই দুষ্কৃতী। আমরা পুলিস প্রশাসনের কাছে দাবি করছি এই সমস্ত দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। পাশাপাশি তাদের যেন কড়া শাস্তি হয় সেই বিষয়টিও আমরা পুলিসকে জানিয়েছি।