পারিবারিক মঙ্গল অনুষ্ঠান ও পুজোপাঠে আনন্দলাভ। বন্ধু বিবাদের যোগ আছে। বিদ্যাচর্চায় উন্নতি। ... বিশদ
গত সাত-আট বছরে দীঘা পর্যটন কেন্দ্রের ভোল বদলে গিয়েছে। নতুনরূপে সেজে উঠেছে সৈকত-সুন্দরী। জেলা প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী, প্রতিবছর দীঘায় আগত পর্যটক সংখ্যা বাড়ছে। যেমন ২০১৩-’১৪ সালে দীঘায় ২৭ লক্ষ পর্যটক এসেছিলেন। ২০১৪-’১৫ সালে পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে হয় ২৯ লক্ষ। ২০১৫-’১৬ সালে দীঘায় বেড়াতে আসেন ৩৫লক্ষ পর্যটক। ২০১৬-’১৭ সালে দীঘা ঘুরে গিয়েছেন ৩৮লক্ষ পর্যটক। ২০১৭-’১৮ সালে দীঘা সফর করেছেন ৪১লক্ষ পর্যটক। সবশেষে ২০১৮-১৯ সালে দীঘায় ট্যুরিস্টের সংখ্যা ছিল ৪৮লক্ষ। পর্যটন দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী প্রতি বছর দীঘায় পর্যটক সংখ্যা বাড়ছে। আগে শনিবার ও রবিবার দীঘায় ভিড় হতো। সপ্তাহের অন্যান্য দিন সেভাবে ভিড় দেখা যেত না। এখন ছবিটা বদলে গিয়েছে। গোটা সপ্তাহজুড়ে দীঘা ভিড়ে গমগম করে। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় আসার পর দীঘা পর্যটন কেন্দ্রকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে প্রচুর কাজ করেছে। একেবারে খোলনলচে বদলে গিয়েছে দীঘার। বাঙালির স্বল্প বাজেটের বেড়ানোর অন্যতম গন্তব্যস্থল এখন দীঘা।
গত সাত-আট বছরে দীঘা ও সংলগ্ন এলাকায় ১৭৫টি হোটেল গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে নেওটিয়া গোষ্ঠীর ফাইভ স্টার, হায়াত গোষ্ঠীর ফোর স্টার হোটেলও আছে। দীঘার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়েছে তাজপুর, উদয়পুর এবং মান্দারমণি এলাকাও। দীঘা থেকে মান্দারমণি হয়ে কাঁথির শৌলা পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। এই মুহূর্তে তিনটি জায়গায় ব্রিজের কাজ বাকি আছে। ওই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হলে দীঘার উন্নয়নে নতুন পালক সংযোজন হবে। তাছাড়া পুরীর আদলে দীঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরীতে বেড়াতে গিয়ে সমুদ্র দর্শন এবং জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দেওয়া-দু’টো কাজই সেরে নেন পর্যটকরা। একইভাবে দীঘায় পর্যটকরা বেড়াতে এসে সমুদ্রস্নান এবং সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস প্রত্যক্ষ করার পাশাপাশি জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দিতে পারবেন। গত ২১ আগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কাজের শিলান্যাসও করে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার অফিসে রাজ্য পর্যটন দপ্তরের সচিব সহ অন্যান্য শীর্ষ অফিসাররা দীঘা, তাজপুর, শঙ্করপুর এবং মান্দারমণি এলাকার হোটেল মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দীঘা সহ সংলগ্ন এলাকায় পর্যটন উন্নয়নে আরও কী ধরনের কাজকর্ম করা যায়, তা নিয়ে পরামর্শ চান। এনিয়ে হোটেল মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বেশকিছু প্রস্তাব রাখেন। তার মধ্যে মোহনা এবং শঙ্করপুরের মাঝে ন্যায়কালী মন্দিরকে ঘিরে ট্যুরিস্ট হাব, গোয়ার আদলে ‘প্রাইভেট বিচ’ তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। ঘেরা জায়গার মধ্যে যাতে স্নান করার ব্যবস্থা থাকে সেজন্যই প্রাইভেট বিচের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
দীঘার পাশাপাশি বাণিজ্য সম্মেলন থেকে তাজপুর বন্দর গড়ে তোলার জন্য বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। তাজপুর বন্দর চালু হওয়ার পর আগামী দিনে গোটা এলাকার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বদলে যাবে। তাতে বিপুল কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আনুষঙ্গিক শিল্প গড়ে উঠবে। প্রচুর মানুষের জীবিকার সংস্থান হবে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তাজপুর বন্দর সম্পূর্ণ হওয়ার পর গোটা এলাকার অর্থনীতি বদলে যাবে।