আত্মবিশ্বাস এত বৃদ্ধি পাবে যে, কোনও কাজই কঠিন মনে হবে না। সঞ্চয় বেশ ভালো হবে। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেশন দোকানে ভর্তুকিতে পেঁয়াজ বিক্রির কথা ঘোষণা করেছেন। সেই ঘোষণা শুনে জেলার মানুষ খুশি হলেও এখনও রেশন দোকানে পেঁয়াজ বিক্রির কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। তাতেই বাসিন্দারা হতাশ হয়েছেন। বাসিন্দাদের দাবি, খোলা বাজারে পেঁয়াজের অগ্নিমূল্যের জন্য কেনাই যাচ্ছে না। যদি রেশন দোকানে সরকারি ভর্তুকিতে পাওয়া যায় তাহলে কিছুটা স্বস্তি হবে।
খাদ্য সরবারহ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ১৯টি ব্লকে ৯৬৮টি রেশন দোকান রয়েছে। সেখান থেকে উপভোক্তারা প্রতি সপ্তাহে রেশন সামগ্রী পান। তাতে চাল, গম, চিনি পাওয়া যায়। এর সঙ্গে যদি উপভোক্তারা পেঁয়াজ পান তাহলে সেই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু, কবে থেকে রেশন দোকানে পেঁয়াজ মিলবে তা নিয়ে ক্রেতারা সংশয়ে রয়েছেন।
এব্যাপারে বীরভূমের জেলা খাদ্য নিয়ামক তরুণকুমার মণ্ডল বলেন, পেঁয়াজ বিক্রির ব্যাপারে আমাদের কাছে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। নির্দেশ এলে বিষয়টি দেখা হবে।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজ্যজুড়ে পেঁয়াজ অগ্নিমূল্য হয়ে রয়েছে। ফলে, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছে। জেলায় সিউড়ি, বোলপুর, আহমদপুর, রামপুরহাট, তারাপীঠ প্রভৃতি জায়গায় কৃষি বিপণন দপ্তরের সুফল বাংলা বিপণি রয়েছে। সেখান থেকে রাজ্য সরকারের তরফে ভর্তুকিতে ৫৯টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। তাতে সংশ্লিষ্ট ওই এলাকার ক্রেতাদের সুবিধা হয়েছে। তাঁরা সকাল সকাল সুফল বাংলা স্টলের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কিনছেন। কিন্তু, সেইসব জায়গায় জনপ্রতি এক কেজি করে পেঁয়াজ দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হচ্ছে না। ক্রেতাদের অভিযোগ, ৫০০গ্রাম করে পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে। তার সঙ্গে আবার অন্যান্য সামগ্রীও কিনতে হচ্ছে। তবে ৫০০গ্রাম করে হলেও বাজারের তুলনায় দামে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে।
শহরাঞ্চলে থাকা সুফল বাংলা স্টলগুলি থেকে পেঁয়াজ মিললেও গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দাদের নাজেহাল অবস্থা। চলতি মরশুমে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম খোলা বাজারে ১২০-১৫০টাকা পর্যন্ত চলছে। তার জেরে নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষ কার্যত পেঁয়াজ কেনাই ছেড়ে দিয়েছেন। বাজারেও মন্দা অবস্থা।
বীরভূমের সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর, নলহাটি প্রভৃতি শহরে সুফল বাংলা স্টল নেই। এমনকী, অন্যান্য ব্লক সদরগুলিতেও নেই। তার ফলে ওইসব এলাকার ক্রেতারা কার্যত বিপাকে পড়েছেন। সেখানেও পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া। চাষিদের হাতেও পেঁয়াজ নেই। তাই ক্রেতারা এখন রেশন দোকানে সরকারি ভর্তুকিতে পেঁয়াজ কেনার আশায় রয়েছেন। কিন্তু, কবে থেকে তা শুরু হবে তা নিয়ে প্রশাসনের তরফে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
দুবরাজপুর পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান পীযূষ পাণ্ডে বলেন, এখানে সুফল বাংলার স্টল নেই। তবে, দুবরাজপুরের বাজারে বুধবার পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। এদিন ৯০টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছি।
রাজনগরের ভবানীপুরের বাসিন্দা মনোজ সাধু বলেন, এখানে পেঁয়াজ সহ সমস্ত আনাজেরই দাম চড়া। ফলে, আমাদের মতো মানুষকে বাধ্য হয়েই কিনতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণামতো রেশন দোকানে ভর্তুকিতে পেঁয়াজ দেওয়া হবে শুনেছি। কিন্তু, এখনও আমাদের এলাকায় কোনও রেশন দোকানেই তা আসেনি। অন্যদিকে, সাঁইথিয়ার বাসিন্দা তুহিন ভট্টাচার্য বলেন, গত সপ্তাহে বাবা রেশন দোকানে গিয়েছিলেন। কিন্তু, পেঁয়াজ পাওয়া যায়নি। ৫৯ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ পাওয়া গেলে মানুষের সুবিধাই হবে।
সাঁইথিয়ার বনগ্রামের চাষি মদনমোহন দাস বলেন, স্থানীয় দোকানে ১০০টাকা কেজি দরে তিনদিন আগে পেঁয়াজ কিনেছি। যেটুকু চাষ করেছিলাম তা শেষ হয়ে গিয়েছে। রেশন দোকানে পেঁয়াজ দেওয়ার কথা কলকাতায় হচ্ছে বলে জানতে পারছি। কিন্তু, আমাদের এখানে তা হচ্ছে না।