আত্মবিশ্বাস এত বৃদ্ধি পাবে যে, কোনও কাজই কঠিন মনে হবে না। সঞ্চয় বেশ ভালো হবে। ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রী এদিন দীঘার শিল্পপতিদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, জীবনকে উপভোগ করুন। নিজের স্টাইলকে উপভোগ করুন। নিজের ব্যবসাকে উপভোগ করুন। দীঘাকে আন্তর্জাতিক সমুদ্র সৈকত হিসেবে দাবি করে বলেন, পর্যটন শিল্পে দীঘা এখন বিনিয়োগের আন্তর্জাতিক কেন্দ্র। আট বছর আগের দীঘার সঙ্গে আজকের দীঘার অনেক তফাত। মন্দারমণি পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ তৈরি হচ্ছে। ওই পথে দু’টি ব্রিজের কাজ বাকি আছে। আগামী মার্চ-এপ্রিল মাস নাগাদ ওই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। তার ফলে সমুদ্রের ধার বরাবর দীঘা থেকে মান্দারমণি পর্যন্ত যাওয়া যাবে। তিনি বলেন, গত সাত-আট বছরে দীঘা, তাজপুর, উদয়পুর এবং মান্দারমণি এলাকায় পর্যটনে বিরাট উন্নতি হয়েছে। ১৭৫টি হোটেল গড়ে উঠেছে। গত আট বছরে পর্যটন শিল্পে এরাজ্যে ৩৯হাজার ৮০০টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। রাজ্যে পর্যটন শিল্পে ১৩লক্ষ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।
তাজপুর বন্দরে সাইট অফিসের উদ্বোধন করে এদিন বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে বিনিয়োগের প্রস্তাব চাওয়া হয়। তাজপুর বন্দর সম্পূর্ণ হলে এই এলাকার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির আমূল বদল হবে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রস্তাবিত তাজপুর বন্দর নিয়ে চুপচাপ থাকায় রাজ্য কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়াই তাজপুর বন্দর তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল। সেই মতো এদিন সাইট অফিসের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। খোলা মঞ্চ থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র সরাসরি শিল্পপতিদের কাছ থেকে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এদিন ২০টি দেশের প্রতিনিধি সহ একঝাঁক শিল্পোদ্যোগী বাণিজ্য সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন। অতিথিদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। জেলাশাসক পার্থ ঘোষ এবং পুলিস সুপার ভি সোলেমান নেসাকুমার সহ জেলা প্রশাসনের প্রায় সব অফিসার জায়গার অভাবে দাঁড়িয়েছিলেন। দীঘায় কনভেনশন সেন্টারে বাণিজ্য সম্মেলন থেকে দীঘা, হলদিয়া এবং তাজপুরকে ঘিরে বিনিয়োগের প্রস্তাব প্রত্যাশা করেছিলেন জেলাবাসী। ইতিমধ্যে বিভিন্ন গোষ্ঠী দীঘায় বিলাসবহুল হোটেল নির্মাণ করছে। কোনও কোনও গোষ্ঠীর নির্মাণের কাজ শেষ। এরকম কয়েকজন শিল্পপতি এদিন উঠে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেন।
এদিন অ্যামাজন অনলাইন সংস্থার প্রতিনিধিকে দীঘায় হোটেল বুকিং ব্যবসায় নামার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। এজন্য দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান তথা কাঁথির সংসদ সদস্য শিশির অধিকারীর সঙ্গে মউ চুক্তি স্বাক্ষর করার প্রস্তাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। গোটা বিশ্বব্যাপী অ্যামাজন ব্যবসা করে। দীঘায় হোটেল বুকিংয়ের ক্ষেত্রে অ্যামাজন এগিয়ে এলে ভালো সাড়া পাওয়া যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বিনিয়োগের সবচেয়ে আদর্শ জায়গা হল বাংলা। আমাদের এখানে ল্যান্ড ব্যাঙ্ক আছে। পাওয়ার ব্যাঙ্ক আছে। দক্ষ কর্মী আছে। বিনিয়োগের যাবতীয় অফিসিয়াল কাজকর্ম সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেমে সম্পন্ন করতে তৈরি করা হয়েছে সিনার্জি। সবরকম সহযোগিতা নিয়ে আমরা প্রস্তুত। আপনারা বিনিয়োগ করুন। বাংলা থেকে আতিথেয়তা পাবেন। বাংলা হল সংস্কৃতির রাজধানী। এখানে মেধার অভাব নেই। পৃথিবীর যেকোনও প্রান্তে বাংলার মেধাবী যুবক যুবতীরা কর্মরত আছেন।
দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে দীঘার অনেক বদল হয়েছে। দীঘাকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলার কাজে তিনিই আসল রূপকার। আমরা চাই, দীঘায় আরও বিনিয়োগ আসুক। আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক দীঘায় বেড়াতে আসুক। দীঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে দীঘায় গত সাত-আট বছরে অনেক উন্নতি হয়েছে। আমরা স্থানীয়া প্রত্যেকেই দীঘায় উন্নয়নের পক্ষে। মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীদের দীঘা এবং তাজপুরে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন, তাতে আমরা সকলেই খুশি।