বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
রাজ্য সরকারের সুকন্যা প্রকল্পের মাধ্যমে জেলা পুলিসের পক্ষ থেকে এই প্রথম দক্ষিণ দিনাজপুরের কলেজ ছাত্রীদের আত্মরক্ষামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে বুনিয়াদপুর কলেজে। মার্শাল আর্ট, তাইকোন্ডোর মতো আত্মরক্ষামূলক কৌশল শিখে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারবেন কলেজ ছাত্রীরা। জেলায় পর পর নৃশংস ঘটনা ঘটেছে যুবতী ও কিশোরীদের উপর। যে কোনওরকম পরিস্থিতিতে মহিলারা যাতে নিজেদের রক্ষা করতে পারেন, সেজন্য জেলা পুলিসের এই উদ্যোগ।
বুনিয়াদপুর কলেজে কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের সুরক্ষার কথা ভেবে এবার থেকে বাধ্যতামূলকভাবে আত্মরক্ষামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। ইতিমধ্যেই জেলায় প্রথম সুকন্যা ক্লাব খুলেছে ওই কলেজের ছাত্রীরা। আগামী দিনে তারাই নতুন ছাত্রীদের আত্মরক্ষামূলক প্রশিক্ষণের জন্য আগ্রহী করে তুলবে। এদিন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুলিস সুপার দেবর্ষি দত্ত বুনিয়াদপুর কলেজে গিয়ে মহিলাদের আত্মরক্ষামূলক প্রশিক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝান ও তাঁরা যাতে কোনও প্রলোভনে পা না দেয়, সে বিষয়ে ছাত্রীদের পরামর্শ দেন।
দেবর্ষি দত্ত বলেন, আজকাল মেয়েদের অনেক বেশি সজাগ থাকতে হবে। মোবাইলের পেছনে সময় নষ্ট না করে স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া ভীষণ দরকার। কলেজের মেয়েরা, যারা মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ নিচ্ছ, তারা যেমন আত্মরক্ষার কৌশল জানতে পারবে, তেমন ভাবে শরীরচর্চার মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্যের উন্নতিও করতে পারবে। যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মনকে সজাগ রাখতে হবে। যেসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে, সেগুলির মধ্যে বেশিরভাগই ঘটছে পরিচিত ব্যক্তিদের দ্বারাই। তাই সাবধান হতে হবে। অপরিচিত ব্যক্তিদের ফোন রিসিভ করা বা সোশ্যাল সাইটে বন্ধুত্ব করা থেকে দূরে সরে আসতে হবে। কোথাও আটকে পড়লে অপরিচিত কারও সাহায্য না নিয়ে বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। প্রয়োজনে প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে হবে। আগামী দিনে জেলাজুড়ে সুকন্যা প্রকল্পের মাধ্যমে কলেজ ছাত্রীদেরও মার্শাল আর্ট শেখানো হবে।
বুনিয়াদপুর মহাবিদ্যালয়ের এনসিসি বিভাগের ইনচার্জ তনিমা দত্ত বলেন, আমরাই জেলার ভেতর প্রথম মেয়েদের মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি জেলা পুলিসের সহযোগিতায়। আমরা কলেজে সুকন্যা ক্লাব খুলেছি। প্রাথমিকভাবে মেয়েদের আট দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছে জেলা পুলিস। এই প্রশিক্ষণ যাতে বন্ধ না হয় সেজন্য আমরা সারা বছর ধরে প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাব বলে ঠিক করেছি।
বুনিয়াদপুর কলেজের ছাত্রী দেবপ্রিয়া বর্মন বলে, আমি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমি মনে করি, আত্মরক্ষার কৌশল জানা মেয়েদের জন্য ভীষণ দরকার। যেকোনও সময় বিপদ হতে পারে। সেজন্য কলেজের তরফে প্রশিক্ষণের কথা শুনে আগ্রহী হয়ে ভর্তি হয়েছি। আমাদের কলেজে পুলিস সুপার এসে মেয়েদের কি করা উচিত ও কি করা উচিত না সে বিষয়ে সচেতন করেছেন। জেলায় যে সব ঘটনা ঘটে চলেছে, সেদিকে তাকিয়ে সব মেয়েদের আত্মরক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকা ভীষণ দরকার।
পরপর মহিলাদের উপর হামলার ঘটনা ঘটায় নড়েচড়ে বসেছে গোটা জেলা। বাসিন্দারা যখন নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তখনই এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করল পুলিস।