বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
উল্লেখ্য, মালদহের শিক্ষা বিস্তারের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রয়েছে মালদহ মডেল মাদ্রাসার। জেলার প্রবীণ শিক্ষানুরাগীদের অনেকেরই ধারণা, মালদহের জেলা সদর ইংলিশবাজারে ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মাদ্রাসাই জেলার প্রথম সারির মাদ্রাসাগুলির মধ্যে সব চেয়ে বেশি পুরানো। জেলার শিক্ষা বিস্তার ও সংস্কৃতি চেতনা গঠনের ক্ষেত্রে মালদহ মডেল মাদ্রাসার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে বলে খোলা মনে স্বীকার করেছেন প্রায় সকলেই। শতবর্ষ উদযাপনের প্রাক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এই মাদ্রাসা ধর্মীয় উদারতার বার্তা দিয়ে যে ফের একবার নজির গড়ল, তাও মানছেন সকলেই।
মালদহ মডেল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক তৌসিফ বিশ্বাস বলেন, শিক্ষা ও চেতনা বিস্তারের পাশাপাশি সম্প্রীতি ও ধর্মীয় মিলনের দিক দিয়েও বরাবরই সামনের সারিতে থেকেছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শতবর্ষ উদযাপনের মুহূর্তেও আমরা এই ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে চাই। তাই আমাদের শতবর্ষ পালনের অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিদের সঙ্গে মঞ্চে থাকবেন রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম নরেন্দ্রপুরের সম্পাদক স্বামী সর্বলোকানন্দ মহারাজ। তাঁর হাত দিয়েই আমরা শতবার্ষিকী স্মারক গ্রন্থের উদ্বোধন করে এই মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চাই।
শুধু স্বামী সর্বলোকানন্দ মহারাজই নন, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রহ্মচারী তুরীয়চৈতন্য মহারাজও এই শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন মালদহ মডেল মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক।
অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে মাদ্রাসার শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীদের উপস্থিতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। রামকৃষ্ণ মিশনের এক প্রবীণ সন্ন্যাসী বলেন, রামকৃষ্ণদেব, সারদাদেবী ও স্বামী বিবেকানন্দ সব সময়ই ধর্মীয় সহিষ্ণুতার বার্তা দিয়ে এসেছেন। রামকৃষ্ণদেব বলেছিলেন, ‘যত মত তত পথ’। আজকের দিনে এই বার্তা মানুষ যত গ্রহণ করে ততই দেশের ও দশের মঙ্গল।
মালদহ মডেল মাদ্রাসার এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকেও আসছেন প্রাক্তনীরা। তাঁরা সকলেই প্রতিবেশী বাংলাদেশের সম্মানীয় নাগরিক। মডেল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মহম্মদ জিল্লুর রহমান, সোনালি ব্যাঙ্কের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক মানোয়ার আলি সহ অন্তত সাতজন প্রাক্তনী বাংলাদেশ থেকে মডেল মাদ্রাসার শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মালদহে এসে পৌঁছচ্ছেন ১০ জানুয়ারি।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের দুই রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রাব্বানি ও জাকির হোসেন ছাড়াও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহম্মদ আলি, রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনিল ভুঁইমালি, রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের নির্দেশক আবিদ হোসেন, প্রাক্তন বিচারপতি মহম্মদ আব্দুল গণি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের দিকপালরা মালদহ মডেল মাদ্রাসার শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
১১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।