অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
প্রসঙ্গত, শুক্রবার মালদহে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির জেলাশাসক ও পুলিস সুপারদের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মালদহ কালেক্টরেটের কনফারেন্স হলে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। বৈঠকে মালদহ ছাড়াও এরাজ্যের কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ির জেলাশাসক ও পুলিস সুপারদের বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। জেলা স্তরের ওই দুই শীর্ষ আধিকারিকের পরিবর্তে অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং অতিরিক্ত পুলিস সুপার পদমর্যাদার আধিকারিকরা বৈঠকে যোগ দিতে পারেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ, নোয়াগাঁও, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারি, লালমণিরহাট এবং কুড়িগ্রাম জেলার প্রশাসন ও পুলিসের আধিকারিকরা বৈঠকে যোগ দেবেন। এদেশের তরফে মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকবেন। বৈঠকে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বাংলাদেশের বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও উপস্থিত থাকবেন।
বৃহস্পতিবার মালদহের জেলাশাসক বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকার নানা বিষয়ের সমস্যা নিয়ে দু’দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা হবে। দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করে এমন দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে তথ্য আদানপ্রদান করা হবে। পাচার ও অনুপ্রবেশের বিষয়টি বিএসএফ তুলতে পারে।
মালদহের পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, অনেক সময় এরাজ্যের সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলিতে দুষ্কর্ম করার পর অপরাধীরা কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে যায়। ফলে তারা আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে পুলিসের তাড়া খেয়েও অনেকে এদেশে ঢুকে পড়ে। তাদের সম্পর্কে আমরা ডেটাবেস তৈরি করব।
উল্লেখ্য, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ সীমান্ত। ওই আন্তর্জাতিক সীমান্তের একটা বড় অংশ এরাজ্যের সঙ্গে রয়েছে। ওই দীর্ঘ সীমান্তের সর্বত্র কাঁটাতারের বেড়া নেই। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে জালনোট, মাদক ও গোরু পাচার হয়ে থাকে। উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে অবাধে পাচার হয়। পাচার নিয়ে বিএসএফ ও বিজিবির টানাপোড়েনও চলে। কয়েকদিন আগে মুর্শিদাবাদের সীমান্তে বিজিবির গুলিতে এক বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সীমান্তে উত্তেজনা ছড়ায়। ওইসময় দুই বাহিনীর কর্তারা নিজেদের মধ্য কথা বলে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করেন।
এদিকে, পাচার চক্রে জড়িতদের নিয়ে দুই দেশেরই সীমানা ঘেঁসা জেলার পুলিস কর্তাদের ঘুম উড়ে যায়। এদেশ থেকে বাংলাদেশে গোরু পাচার হয়। অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে জাল নোট ভারতে পাঠানো হয়। পাচারকারীদের সঙ্গে মাঝেমধ্যেই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলি বিনিময় হয়। বিএসএফের গুলিতে পাচারে যুক্তদের মৃত্যুও হয়। অনেকে পুলিসের হাতে ধরা পড়ে। তা সত্ত্বেও পাচার থামতে চায় না। কারণ পাচারে প্রচুর কাঁচা টাকা রোজগার হয়। মাফিয়ারাও পাচারে টাকা খাটায়। গোরু ও জাল নোটের পাশাপাশি মাদক পাচারও রমরমিয়ে চলে। সম্প্রতি মালদহ জেলা পুলিস বেশ কয়েক লক্ষ টাকার ইয়াবা ট্যাবলেট আটক করে। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া যুবকদের মধ্যে একজন বাংলাদেশের বাসিন্দা ছিল। তথ্য না থাকায় অনেক সময় দুষ্কৃতীরা পুলিসের চোখে ধুলো দিয়ে পালায়। তাদের রুখতেই দুই দেশের মধ্যে যাতায়াতকারী দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে এবার ডেটাবেস তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।