Bartaman Patrika
বিশেষ নিবন্ধ
 

সার্ভিল্যান্স যুগের প্রথম পরীক্ষাগার উইঘুর সমাজ
মৃণালকান্তি দাস

চীনের সংবাদ মানেই তো যেন সাফল্যের খবর। সমুদ্রের উপর ৩৪ মাইল লম্বা ব্রিজ,  অতিকায় যাত্রী পরিবহণ বিমান তৈরি,  প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নয়া উদ্ভাবন, চাঁদের অপর পিঠে অবতরণ...। মিহিরগুল তুরসুনের  ‘গল্প’  সেই তালিকায় খুঁজেও পাবেন না। ১৪১ কোটি জনসংখ্যার চীনে মিহিরগুল মাত্র সোয়া কোটি উইঘুরের প্রতিনিধি। চীনে তো নয়ই,  চীনের বন্ধুদেশগুলোর সংবাদমাধ্যমও তাঁদের সংবাদ এড়িয়ে চলে। চীন ছেড়ে মিহিরগুলকে আশ্রয় নিতে হয়েছে সুদূর আমেরিকায়। ভার্জিনিয়াতে। তবুও তিনি চীনের এক প্রবল প্রতীকী প্রতিদ্বন্দ্বী।
উইঘুর প্রদেশেই জন্ম মিহিরগুল তুরসুনের। প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ করে মিশরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি পড়তে যান তিনি। সেখানেই প্রেম,  বিয়ে। তিনটি সন্তানের জন্মও। ২০১৫ সালে নিজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চীনে ফেরেন। সঙ্গে ছিল সন্তানরা। এরপরই বদলে যায় তাঁর জীবন। বাচ্চাদের থেকে আলাদা করে তাঁকে বন্দিশিবিরে নিয়ে যায় চীন সরকার। বিভিন্ন দফায় তিন বার তাঁকে আটক করা হয়। চালানো হয় নারকীয় অত্যাচার। মাকে না পেয়ে অযত্নে মারা যায় তাঁর ছোট সন্তান। বাকি দুই সন্তানও এখনও দুরারোগ্য অসুখের শিকার। ওয়াশিংটনে চীনের উইঘুর প্রদেশের মুসলিমদের উপর চীন সরকারের এই বর্বরতার কাহিনী শোনাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন মিহিরগুল তুরসুন।
আমেরিকার ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে বসে ভয়ঙ্কর দিনগুলির কথা শুনিয়েছিলেন মিহিরগুল। বন্দিদশায় তাঁকে বিভিন্ন অজানা ওযুধ খেতে বাধ্য করা হতো। এই ওষুধ খেয়ে অনেক সময়ই জ্ঞান হারিয়ে ফেলতেন তিনি। যে কক্ষে তাঁকে রাখা হয়েছিল,  সেখানে তিন মাসের মধ্যে ন’জন মহিলা মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সেখানে ক্যামেরার সামনে তাঁকে মলমূত্র ত্যাগ করতে হতো। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির স্তুতিতে গান করতে বাধ্য করা হতো যখন তখন। তাঁর কথায়, ‘একদিন আমাকে ন্যাড়া করে হেলমেটের মতো কিছু একটা পরিয়ে একটা চেয়ারে বসানো হয়। ইলেকট্রিক শক দেওয়ার সময় ভীষণ ভাবে কাঁপছিলাম আমি। যন্ত্রণা ছড়িয়ে পড়ছিল আমার শিরা আর ধমনীতে। তার পর আর কিছু মনে নেই। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। শুধু মনে আছে,  আমি উইঘুর বলে ওরা আমাকে গালি দিচ্ছিল।’ গোটা চীন জুড়ে  ‘এক শিক্ষা,  এক সংস্কৃতি’  চালু করতে বেজিং সরকারের পরীক্ষা নিরীক্ষার শিকার উইঘুর মুসলিমরা,  এমনটাই অভিযোগ। বাঁচতে অনেকেই পালাচ্ছেন এশিয়া,  ইউরোপ,  আমেরিকায়। চীন সরকারের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার এই অঞ্চলের কাজাখ মুসলিমসহ আরও কিছু প্রাচীন জনজাতি। জানাচ্ছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি।
‘কমিউনিস্ট’ চীনের নেতারা নিশ্চিত ভোলেননি মার্কসের সেই উক্তি। মার্কস ধর্মকে বলেছিলেন  ‘নিপীড়িতের দীর্ঘশ্বাস—হৃদয়হীন বিশ্বের হৃদয়’। কিন্তু আধুনিক  ‘সমাজতন্ত্রী’রা ধর্মপ্রশ্ন মোকাবিলায় খেই হারিয়ে ফেলেছেন। চীন তা পুনঃপ্রমাণ করছে। মিলছে ধর্মীয় স্বাধীনতার সঙ্কট নিয়ে ভয়ঙ্কর খবর। রাবিয়া কাদির ও উইঘুর সমাজ তার বড় দৃষ্টান্ত। ভারতের বামপন্থীরা কি খোঁজ রাখেন, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে কী চলছে? এবছরের গোড়াতেই চীন জানিয়ে ছিল,  আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তারা ‘ইসলামের চীনাকরণ’ (চিনিসাইজ অব ইসলাম) সম্পন্ন করতে পারবে। কিন্তু এটা করতে গিয়ে মুসলিম-সংখ্যাধিক্য জিনজিয়াংয়ে মসজিদ থেকে রেস্টুরেন্ট—সর্বত্র নজরদারি বাড়িয়েছে। প্যালেস্তাইনের গাজা উপত্যকার পর পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহৎ উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত হয়েছে জিনজিয়াং। পঁচিশ লক্ষের বেশি নিরীহ উইঘুর মুসলিমদের বন্দি করা হয়েছে কারাগারে। বেজিংয়ের ভাষায় সেগুলো কারাগার নয়, ‘প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’। উইঘুররা  ‘পশ্চাৎপদ’,  সেই কারণেই তারা  ‘বিপজ্জনক’। এজন্য  ‘প্রশিক্ষণ’  দিয়ে চীন তাদেরকে  ‘উন্নত’  করছে মাত্র।  ‘উন্নয়ন’-এর কাছে মাথা নোয়াতে শেখানোই এসব শিবিরের পাঠ্যসূচি। বিশেষ করে  ‘কমিউনিস্ট পার্টি’র প্রতি ভালোবাসা শেখাতে। ভুয়ো অজুহাতে উইঘুর যুবকদের গ্রেপ্তার করে পুরে দেওয়া হচ্ছে বন্দিশিবিরে। পাশাপাশি বাছাই করা হচ্ছে উইঘুর শিল্পী,  লেখক, অধ্যাপকদের। অদৃশ্য হয়ে গিয়েছেন শিক্ষাবিদ মহম্মদ সালিহ হাজিম,  অর্থনীতিবিদ ইলহাম তোকতি,  নৃতাত্ত্বিক রাহাইল দাউদ,  পপশিল্পী আবদুর রহিম হায়াত,  ফুটবল খেলোয়াড় এরফান হিজিমদের মতো অনেকেই। লক্ষ্য একটাই,  উইঘুরদের মুসলিম জাতিসত্তাকে ভুলিয়ে দিতে হবে। বদলাতে হবে সংস্কৃতি আর ধর্মবিশ্বাস।
মনোবিজ্ঞানী শোশানা জুবোফের ‘দ্য এজ অব সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজম’ চলতি বছর প্রকাশিত সেরা বইগুলির একটি তো বটেই। পুঁজিতান্ত্রিক সঞ্চয়নের ‘নজরদারির নবযাত্রা’কে খুঁজে পাবেন এই বইয়ে। ‘নজরদারির নবযাত্রা’-র অর্থ কী? যেমন ধরুন—ফেসবুক,  ট্যুইটার,  গুগল,  উইচ্যাটের ব্যবহার কারীরা আদতে মোটেই এসব কোম্পানির ক্রেতা-ভোক্তা নেই। কাঁচামাল মাত্র। এসব ব্যবহারকারী তাঁদের পছন্দ অপছন্দ,  অভ্যাস ‘তথ্য’  জুগিয়ে যাচ্ছেন অন্যকে। ফেসবুক,  ট্যুইটার,  গুগল,  উইচ্যাটের কাছে ব্যবহারকারীদের সব তথ্যই ‘ডেটা’ মাত্র। সরাসরি বা গোপনে যা চলে যাচ্ছে শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের হাতে। কর্পোরেটদের হাতেও। কাজে লাগছে সেসব কখনও ব্যবসায়ের প্রসারে। কখনও নজরদারির প্রয়োজনে। এভাবে নাগরিকরা অজান্তেই বেদখল হয়ে যাচ্ছে। সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজমের শক্তির জায়গা এটাই।
পুঁজিতন্ত্রের আগের অধ্যায়ে দখল-বেদখল হতো প্রাকৃতিক সম্পদ। আজকের অর্থনীতি আগ্রহী  ‘মানবপ্রকৃতি’  নিয়ে। খোদ মানুষকে নিয়েই। এতদিন পুঁজি ও তার পেশিশক্তি দখল করত বিভিন্ন অঞ্চলকে। এখন উপনিবেশ হচ্ছে মানবশরীর ও মনের। সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজমে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদের পাশাপাশি খুন হচ্ছে বিশেষভাবে মানুষের সার্বভৌমত্ব। এর বড় নজির অবশ্যই চীন। বিশেষ করে চীনের জিনজিয়াং। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ভূ-রাজনীতিতে জিনজিয়াং-এর গুরুত্ব এবং চীনের  ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’  প্রকল্পের অর্থনৈতিক মহাযজ্ঞকে নির্বিঘ্নে চালানোর বিষয়টিও। ধর্মীয় ও জাতিগত পরিচয়ের জন্য নির্যাতন চালানো মুখ্য কারণ নয়—এটা একটা উপলক্ষ মাত্র। উইঘুররা সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজমের বড় এক নিরীক্ষার শিকার। তবে উইঘুরদের নিয়ে চীনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা,  নিপীড়ন এক ভবিষ্যত বিশ্বেরও ইঙ্গিত দিচ্ছে। যেখানে ৯৯ শতাংশ নাগরিকের নিয়তি উইঘুরদের মতোই হবে। যেখানে  ‘৯৯ শতাংশ’  হবেন একইসঙ্গে কাঁচামাল,  ভোক্তা ও ভিলেন।
চীনের প্রশাসন চাইছে, উইঘুরদের পুরো জীবনাচারকে ‘চৈনিক হেজিমনিতে রূপান্তর’ এবং কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে গড়ে তুলতে। যাকে তারা নাম দিয়েছে বৃত্তিমূলক কারিগরি প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা। ফাঁস হওয়া একটি গোপন নথি থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালে জিনজিয়াং কমিউনিস্ট পার্টির ডেপুটি সেক্রেটারি ঝু হাইলুন নয় পৃষ্ঠার একটি নির্দেশপত্র বন্দিশালাগুলোতে পাঠান। যেখানে বলা হয়েছে, কাউকে পালানোর সুযোগ দেওয়া যাবে না। কেউ আচরণবিধি অমান্য করলে তাকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। তাকে অনুতপ্ত হতে বাধ্য করতে হবে। উইঘুরদের নিজস্ব ভাষার বদলে ম্যান্ডারিন ভাষা শিক্ষা এবং এই সংস্কৃতি শিক্ষা ও চর্চায় বেশি জোর দাও। মানসিকভাবে ও মতাদর্শগত দিক থেকে পুরোপুরি বদলাতে তাদের অনুপ্রাণিত কর। গোটা তল্লাটে ভিডিও নজরদারি চালাও। এখানেই শেষ নয়! প্রযুক্তির উদ্ভাবনে চীন এখন অদম্য এক ড্রাগন। জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকিতে গেলেও তা টের পাওয়া যায়। উইঘুরদের সবার হাতে স্মার্টফোন। বুকে পরিচয়পত্র। শখ কিংবা প্রয়োজনে নয়,  এসব ব্যবহারে তারা বাধ্য। স্মার্টফোনে রাখতে হচ্ছে সরকার নির্ধারিত বিশেষ ‘অ্যাপ’ও,  যা তাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখছে। ফোন বন্ধ মানেই সন্দেহের তালিকায় পড়ে যাওয়া। জিনজিয়াংয়ে মসজিদ,  রেস্তরাঁ,  বাস টার্মিনাল—সর্বত্র মুখাবয়ব শনাক্ত করার চেকপোস্ট আছে। মুখের ছবি আর পরিচয়পত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্যান হচ্ছে। কাউকে সন্দেহ হওয়া মাত্র পুলিসকে সতর্ক করবে প্রযুক্তি। পরের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। স্মার্টফোন পকেটে রেখে দেওয়াও অন্যায়। পুলিস চাওয়ামাত্র তা দেখাতে হয়। দরকার মনে করলে তারা সেটা তাৎক্ষণিক নেড়েচেড়ে দেখে। স্মার্টফোন আর বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্র ছাড়াও চীন উইঘুরদের ডিএনএ,  আঙুলের ছাপ নিচ্ছে। ভয়েস রেকর্ড করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রত্যেকের নড়াচড়ার  ‘ম্যাপিং’ও চলছে। ২৫ লাখ উইঘুর ইতিমধ্যে নজরদারি প্রযুক্তির আওতায়। সর্বত্র তাদের  ‘চেকপয়েন্ট’-এর ভিতর দিয়েই এদিক-সেদিক যেতে হয়। এই নজরদারি চালানোর অভিযোগে ইতিমধ্যে চীনের ২৮টি সংস্থার উপর কার্যত কালো তালিকাভুক্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ওয়াশিংটনের অনুমোদন ছাড়া ওই সংস্থাগুলি আমেরিকার কাছ থেকে পণ্য,  পরিষেবা বা প্রযুক্তি কিনতে পারবে না। কিন্তু তাতেও নিজেদের অবস্থান থেকে সরেনি বেজিং। আসলে লাখ লাখ উইঘুরের মানবিক সত্তা মুছে তাদের স্রেফ নজরদারির  ‘ডেটা’য় পরিণত করার চেষ্টা, কার্যত এই জীবন্ত দুনিয়াটাকে মেশিনে পুরে জিডিপি বাড়ানোর সর্বনাশা আয়োজন মাত্র।
সম্প্রতি ফাঁস হয়ে গিয়েছে সরকারি নথি ‘চায়না কেবলস’। ৪০০ পৃষ্ঠার ওই নথি থেকে দিন কয়েক আগে জানা গিয়েছিল,  চীনা প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের নির্দেশেই জিনজিয়াং প্রদেশের প্রায় ১০ লক্ষ উইঘুর ও অন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে আটক করে রাখা হয়েছে। ওয়াশিংটনের আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের একটি সংগঠন জানিয়েছে,  কীভাবে একটি মোবাইলের একটি শেয়ারিং অ্যাপ দিয়ে ২০১৬ থেকে লাগাতার নজরদারি চালানো হচ্ছে উইঘুরদের উপর। ওই চীনা অ্যাপ ‘জ্যাপিয়া’ ব্যবহার করে শুধু ধর্মীয় বাণী ইত্যাদি শেয়ার করার জন্যও বহু উইঘুরকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি সাংবাদিকদের। সংখ্যালঘু উইঘুরদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ বরাবরই উড়িয়ে দিয়েছে বেজিং। কিন্তু ফাঁস হয়ে যাওয়া নথি বলছে, চীনের উত্তর-পশ্চিমে উইঘুরদের স্বশাসিত জিনজিয়াং প্রদেশে জিনপিং তাঁর একাধিক সফরে এসে বলেছেন, ‘সন্ত্রাস,  বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে এ বার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। কাউকে ছাড় নয়।’ এরজন্য হাতিয়ার ‘সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজম’!
বিশ্বে সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজমের বড় হাতিয়ার হল মুখচ্ছবি শনাক্ত করার প্রযুক্তি। বায়োমেট্রিক বিদ্যা দিয়ে মুখের মানচিত্র শনাক্ত করে এই প্রযুক্তি। বিমানবন্দর থেকে শপিং সেন্টার,  সর্বত্র এটা বসানো হচ্ছে। ২০১৭-এর হিসাবে,  আড়াই কোটি ভিডিও সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা বসে আছে দুনিয়াব্যাপী। এর অন্তত ২০ ভাগ রাষ্ট্রীয় নেটওয়ার্কভুক্ত। শুধু চীনই এই রকম চার কোটি ক্যামেরা বসানোর তোড়জোর শুরু করেছে। চীনের শেনজেনে এখনই প্রতি হাজার মানুষের বিপরীতে ১৫৯টি ক্যামেরা বসে আছে। সাংহাইয়ে হাজারে ১১৩। গোটা দুনিয়ার অজান্তেই মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার চিরতরে মৃত্যু ঘটতে চলেছে। অনেকেই বলছেন, এসব আয়োজন বিশ্বকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বধ্যভূমি বানানোর তারিকা ছাড়া কিছু নয়। ইতিমধ্যে কর্তৃত্ববাদী শাসকরা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পেটোয়া বাহিনী ব্যবহার করতে ফেসিয়াল টেকনোলজির বড় ক্রেতা হয়ে উঠছে। এফবিআইয়ের হাতে নানা উপায়ে ৪১ কোটি মানুষের মুখাবয়বের ‘ডেটা’ চলে গিয়েছে বলে আমেরিকায় একাধিক খবর বেরিয়েছে। এ রকম ‘ডেটা’ আস্তে আস্তে বিশ্বের সব গোয়েন্দা সংস্থা থেকে জঙ্গি সংগঠন,  সবার কাছেই চলে যাবে কোটি কোটি মানুষের অজান্তে। ভয়টা সেখানেই।
কর্পোরেটরাও এই প্রযুক্তির প্রধান এক ভোক্তা। একজন প্রতিবাদী শ্রমিককে বরখাস্ত করার পাশাপাশি তাঁর মুখের মানচিত্র যদি সব মালিকের কাছে নিমেষে পৌঁছে দেওয়া হয়,  তাহলে তিনি হয়তো আর কোনও দিনই কোথাও কাজ পাবেন না। সম্প্রতি হংকংয়ে বিক্ষোভকারীদের মুখোশ পরতে যে নিষেধ করা হচ্ছে,  তা-ও মুখাবয়ব শনাক্তকারী প্রযুক্তি ব্যবহার করে চীনের নজরদারির জন্যই। আসলে, সার্ভিল্যান্স যুগের প্রধান সংস্কৃতিই হল, ‘সব মেনে নাও’। আর এই সার্ভিল্যান্স যুগের প্রথম পরীক্ষাগার উইঘুর সমাজ।
 
অণুচক্রিকা বিভ্রাট
শুভময় মৈত্র

সরকারি হাসপাতালে ভিড় বেশি, বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় সুবিধে হয়তো কম। তবে নিম্নবিত্ত মানুষের তা ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই। অন্যদিকে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে রাজ্যে এখনও অত্যন্ত মেধাবী চিকিৎসকেরা সরকারি হাসপাতালে কাজ করেন। 
বিশদ

আর ঘৃণা নিতে পারছে না বাঙালি
হারাধন চৌধুরী

 এটাই বোধহয় আমার শোনা প্রথম কোনও ছড়া। আজও ভুলতে পারিনি। শ্রবণ। দর্শন। স্পর্শ। প্রথম অনেক জিনিসই ভোলা যায় না। জীবনের উপান্তে পৌঁছেও সেসব অনুভবে জেগে থাকে অনেকের। কোনোটা বয়ে বেড়ায় সুখানুভূতি, কোনোটা বেদনা। এই ছড়াটি আমার জীবনে তেমনই একটি। যখন প্রথম শুনেছি তখন নিতান্তই শিশু। বিশদ

05th  December, 2019
আগামী ভোটেও বিজেপির গলার কাঁটা এনআরসি
বিশ্বনাথ চক্রবর্তী

রাজ্যের তিন বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির বিপর্যয় বিশ্লেষণ করতে গিয়ে যখন ওই প্রার্থীদের পরাজয়ের ব্যাপারে সকলেই একবাক্যে এনআরসি ইস্যুকেই মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তখনও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এনআরসিতে অটল। তিন বিধানসভা কেন্দ্রের বিপর্যয়ের পর আবারও অমিত শাহ এনআরসি কার্যকর করবার হুংকার ছেড়েছেন।  
বিশদ

03rd  December, 2019
সিঁদুরে মেঘ ঝাড়খণ্ডেও
শান্তনু দত্তগুপ্ত

ভারতের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে একটা কথা বেশ প্রচলিত... এদেশের ভোটাররা সাধারণত পছন্দের প্রার্থীকে নয়, অপছন্দের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে থাকেন। ২০১৪ সালে যখন নরেন্দ্র মোদিকে নির্বাচনী মুখ করে বিজেপি আসরে নামল, সেটা একটা বড়সড় চমক ছিল। 
বিশদ

03rd  December, 2019
আচ্ছে দিন আনবে তুমি এমন শক্তিমান!
সন্দীপন বিশ্বাস

আমাদের সঙ্গে কলেজে পড়ত ঘন্টেশ্বর বর্ধন। ওর ঠাকুর্দারা ছিলেন জমিদার। আমরা শুনেছিলাম ওদের মাঠভরা শস্য, প্রচুর জমিজমা, পুকুরভরা মাছ, গোয়ালভরা গোরু, ধানভরা গোলা সবই ছিল। দেউড়িতে ঘণ্টা বাজত। ছিল দ্বাররক্ষী। কিন্তু এখন সে সবের নামগন্ধ নেই। ভাঙাচোরা বাড়ি আর একটা তালপুকুর ওদের জমিদারির সাক্ষ্য বহন করত। 
বিশদ

02nd  December, 2019
বিজেপির অহঙ্কারের পতন
হিমাংশু সিংহ

সবকিছুর একটা সীমা আছে। সেই সীমা অতিক্রম করলে অহঙ্কার আর দম্ভের পতন অনিবার্য। সভ্যতার ইতিহাস বারবার এই শিক্ষাই দিয়ে এসেছে। আজও দিচ্ছে। তবু ক্ষমতার চূড়ায় বসে অধিকাংশ শাসক ও তার সাঙ্গপাঙ্গ এই আপ্তবাক্যটা প্রায়শই ভুলে যায়।  বিশদ

01st  December, 2019
উপনির্বাচনের ফল ও বঙ্গ রাজনীতির অভিমুখ
তন্ময় মল্লিক

জনতা জনার্দন। ফের প্রমাণ হয়ে গেল। মাত্র মাস ছয়েক আগে লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসন দখল করে গেরুয়া শিবির মনে করেছিল, গোটা রাজ্যটাকেই তারা দখল করে নিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিদায় শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই বঙ্গেই তিন বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে একেবারে উল্টো হওয়া বইয়ে দিল মানুষ।
বিশদ

30th  November, 2019
ওভার কনফিডেন্স
সমৃদ্ধ দত্ত

নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের সব থেকে প্রিয় হবি হল পরিবর্তন। তাঁরা স্থিতাবস্থায় বিশ্বাস করেন না। তাঁরা বদলের বন্দনাকারী। পরিবর্তন কি খারাপ জিনিস? মোটেই নয়। বরং পরিবর্তনই তো সভ্যতার স্থাণু হয়ে না থেকে এগিয়ে চলার প্রতীক।   বিশদ

29th  November, 2019
উপনির্বাচনী ফল: বঙ্গজুড়ে পারদ চড়ছে কৌতূহলের
মেরুনীল দাশগুপ্ত

আজ রাজ্যের তিন বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনী ফল বেরচ্ছে। কথায় বলে, ফলেই পরিচয়। ফলেন পরিচীয়তে। আজ সেই ফলের জন্য উদ্‌গ্রীব বাংলা, বাংলার রাজনৈতিকমহল। নানান জনের নানা প্রত্যাশা চতুর্দিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অবশ্য সেজন্য আসমুদ্রহিমাচল বাংলা টানটান উত্তেজনায় কাঁপছে বললে হয়তো অত্যুক্তি হবে। বিশদ

28th  November, 2019
পাওয়ারের শক্তিপরীক্ষা
শান্তনু দত্তগুপ্ত

এখন সত্যিই জানতে ইচ্ছে হচ্ছে, বালাসাহেব থ্যাকারে বেঁচে থাকলে কী করতেন! আগের রাতে শুনে ঘুমাতে গেলেন, শিবসেনার জোট সরকার হচ্ছে এবং ছেলে উদ্ধব সেখানে মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু পরদিন সাতসকালে ঘুম ভেঙে দেখলেন, দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়ে ফেলেছেন।
বিশদ

26th  November, 2019
মহারাষ্ট্রে টানটান সিরিয়ালের নায়ক কে
সন্দীপন বিশ্বাস

কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের অবসান হয়েছে। যুধিষ্টিরের অভিষেক পর্বও হয়ে গিয়েছে। রাজনীতি, রাজধর্ম নিয়ে শিক্ষা নিতে তিনি গেলেন শরশয্যায় শায়িত ভীষ্মের কাছে। ভীষ্ম তাঁকে সেদিন যে উপদেশ দিয়েছিলেন তা আদর্শ রাজধর্ম এবং রাজনীতি বলেই বিবেচিত হয়। কিন্তু আজকের যুগের স্বার্থসর্বস্ব রাজনীতি দেখলে মনে হয় এই রাজনীতি যেমন নীতির রাজা নয়, তেমনই রাজার নীতিও নয়। 
বিশদ

25th  November, 2019
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে প্রতি মুহূর্তে সংঘাতে জড়িয়ে পড়া কি রাজভবনের দায়বদ্ধতা?
হিমাংশু সিংহ

 ভেবেছিলাম লিখব শুধু পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচিত সরকার ও রাজভবনের বিগত দু’মাসের অবাক করা ভূমিকা নিয়ে। কিন্তু শনিবার ভোর হতে না হতেই সুদূর মহারাষ্ট্রের রাজভবনের ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ স্পষ্ট করে প্রমাণ করল, আজকের রাজ্যপালরা কেন্দ্রের শাসক দলের হাতের পুতুল ছাড়া আর কিছুই নন। বিশদ

24th  November, 2019
একনজরে
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা। স্থান সল্টলেক স্টেডিয়াম। যুবভারতীর বাঁ দিকে পাশাপাশি দু’টি প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড। এটিকে’র প্র্যাকটিসের জন্য প্রথম মাঠটির ফ্লাড লাইট জ্বলে ...

বিএনএ, মালদহ: রোগীকে পরীক্ষার নাম করে তার শ্লীলতাহানির অভিযোগে অভিযুক্ত চিকিৎসকের খোঁজ মিলল না বৃহস্পতিবারেও। ইংলিশবাজার শহরে তার চেম্বারটিও বন্ধ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এব্যাপারে মালদহ মহিলা থানা একটি মামলা দায়ের করেছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।  ...

 নয়াদিল্লি, ৫ ডিসেম্বর (পিটিআই): আইনজীবীদের আদালত অবমাননার হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর করজোড়ে ক্ষমা চাইলেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র। মঙ্গলবার বিচারপতি মিশ্রর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে এক জমি অধিগ্রহণ মামলার শুনানি চলছিল। ...

 সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ভাইঝির উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠল খুড়তুতো জেঠার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দুপুরে শ্যামপুর থানার খাড়ুবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মরশাল গ্রামে। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

 ১৯০১ - মার্কিন চলচ্চিত্র প্রযোজক, নির্দেশক ও কাহিনীকার ওয়াল্ট ডিজনির জন্ম,
১৯২৪: গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার জন্ম
১৯৩৫ - কলকাতায় মেট্রো সিনেমা হল প্রতিষ্ঠা হয়।
১৯৫০: বিপ্লবী, দার্শনিক ও আধ্যাত্মসাধক ঋষি অরবিন্দের প্রয়াণ
১৯৫১: শিল্পী ও লেখক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু
১৯৯৯: মিস ওয়ার্ল্ড হলেন যুক্তামুখী

05th  December, 2019


ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৬৯.৯২ টাকা ৭৩.০৯ টাকা
পাউন্ড ৯১.৬২ টাকা ৯৬.০৫ টাকা
ইউরো ৭৭.৪২ টাকা ৮১.১৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৩৮,৭২৫ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩৬,৭৪০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩৭,২৯০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৪৪,২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৪৪,৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৬, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, দশমী অহোরাত্র। উত্তরভাদ্রপদ ৪২/৬ রাত্রি ১০/৫৭। সূ উ ৬/৬/৫৩, অ ৪/৪৭/৫৩, অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৮ মধ্যে পুনঃ ৭/৩২ গতে ৯/৪০ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৮ গতে ২/৩৯ মধ্যে পুনঃ ৩/২৩ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৫/৪১ গতে ৯/১৪ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৪ গতে ৩/২৭ মধ্যে পুনঃ ৪/২০ গতে উদয়াবধি, বারবেলা ৮/৪৭ গতে ১১/২৭ মধ্যে, কালরাত্রি ৮/৭ গতে ৯/৪৭ মধ্যে।
১৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৬, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯, শুক্রবার, দশমী ৫৮/২৮/৪৯ শেষরাত্রি ৫/৩১/৫০। উত্তরভাদ্রপদ ৪১/৪৫/৪১ রাত্রি ১০/৫০/৩৪, সূ উ ৬/৮/১৮, অ ৪/৪৮/২৩, অমৃতযোগ দিবা ৭/২ মধ্যে ও ৭/৪৪ গতে ৯/৫০ মধ্যে ও ১১/৫৭ গতে ২/৫১ মধ্যে ও ৩/২৭ গতে ৪/৪৮ মধ্যে এবং রাত্রি ৫/৪৫ গতে ৯/২১ মধ্যে ও ১২/৩ গতে ৩/৩৮ মধ্যে ও ৪/৩২ গতে ৬/৯ মধ্যে, কালবেলা ১০/৮/২০ গতে ১১/২৮/২১ মধ্যে, কালরাত্রি ৮/৮/২২ গতে ৯/৪৮/২১ মধ্যে।
৮ রবিয়স সানি

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল
মেষ: সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। বৃষ: সাংসারিক সমস্যার সমাধান সূত্র ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে
১৮২৩: জার্মান দার্শনিক ম্যাক্সমুলারের জন্ম১৮৫৩: ঐতিহাসিক ও শিক্ষাবিদ হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ...বিশদ

07:03:20 PM

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সিরিজের প্রথম টি-২০ জিতল ভারত

10:31:05 PM

 প্রথম টি২০: ভারত ১৭৭/২ (১৬ ওভার)

10:13:22 PM

প্রথম টি২০: ভারত ৮৯/১ (১০ ওভার) 

09:34:38 PM

প্রথম টি২০: ভারতকে ২০৮ রানের টার্গেট দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ 

08:34:59 PM