সন্তানের সাফল্যে গর্ব বোধ। আর্থিক অগ্রগতি হবে। কর্মে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ঘাড়, মাথায় যন্ত্রণা বৃদ্ধিতে বিব্রত ... বিশদ
উপত্যকার কুলগাঁও জেলার বাসিন্দা পেশায় কৃষক মনজুর আহমেদ। ছেলে শাকির মনজুর কাজ করতেন সেনা বাহিনীতে। গত বছর ঈদে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। ২ আগস্ট বাড়ি থেকে সেনা ক্যাম্পে ফেরার সময় সোপিয়ানে তাঁকে অপহরণ করে জঙ্গিরা। সেদিনই তাঁর পোড়া গাড়ি উদ্ধার করে পুলিস। দিন কয়েক পরে তাঁর রক্তাক্ত জামাকাপড় মেলে একটি আপেলের বাগান থেকে। পাওয়া যায়নি দেহ। স্থানীয় পুলিস দাবি করে, শাকির হয়তো যোগ দিয়েছে জঙ্গি শিবিরে। আত্মগোপন করেছে পাকিস্তানে। অসহায় বাবা বুঝতে পারেন ছেলেকে মেরে ফেলেছে জঙ্গিরা। কারণ সে জঙ্গিদের সাহায্য করেনি। কাউকে বোঝাতে পারেননি তাঁর ছেলে দেশের জন্যই শহিদ হয়েছেন। কেউ মানেনি সে কথা। না পড়শিরা, না প্রশাসন। নিখোঁজ শাকিরের নামে সেঁটে যায় জঙ্গি তকমা। ছেলে দেশের জন্য রক্ত দিয়েছে। আর প্রতিদানে মিলেছে শুধুই উপহাস। চোখের জল মোছোর উপায় ছিল একটাই, দেহ খুঁজতে হবে। তবেই হবে কলঙ্ক-মুক্তি। পরিবার পাবে প্রশাসনিক সাহায্য, পেনশন। এক বছর ধরে হন্যে হয়ে ‘মৃত’ ছেলের দেহ খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন প্রৌঢ়। সকাল হলেই কোদাল-বেলচা হাতে বেরিয়ে পড়তেন বছর ৫৬-র মনজুর আহমেদ ওয়াগাই। মাটি খুঁড়ে দেখতেন ছেলের দেহ পোঁতা রয়েছে কি না। বারবার শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। অবশেষে বুধবার উদ্ধার হয় শাকিরের দেহ। মনজুর নিশ্চিত করেন দেহটি তাঁর ছেলের। মেডিক্যাল পরীক্ষাতেও প্রমাণিত হয় মনজুরই সত্য। তারপর এদিন কয়েক শো মানুষের উপস্থিতিতে গ্রামেই যথাযথ মর্যাদায় কবর দেওয়া হয় শহিদ শাকিরকে। সেনার পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। শাকিরের বাবা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ অবশেষে দেহটি পাওয়া গেল। একটা কলঙ্ক বয়ে বেড়াচ্ছিলাম। আমি যতবার পুলিসের কাছে গিয়ে ছেলের ব্যাপারে জানতে চেয়েছি, ওরা জানিয়েছে, ছেলে হয়তো পাকিস্তানে আছে কিংবা জঙ্গি শিবিরে নাম লিখিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছেলেকে হারিয়েছি এটা দুঃখের, কিন্তু কলঙ্কমুক্তি ঘটল।’