বিদ্যার্থীদের কোনও বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় ভালো ফল করবে। বিবাহ প্রার্থীদের এখন ভালো সময়। ভাই ও বোনদের ... বিশদ
হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদের এরাগাড্ডায়। এক সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বছর চৌত্রিশের ওই যুবক। মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে বাবার উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান তিনি। যাতে কাঠগড়ায় তোলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। ভিডিওতে ওই যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তিন ঘণ্টা ধরে অক্সিজেন দেওয়ার আর্জি জানালেও, শোনা হচ্ছে না। আমার হৃদপিণ্ড থেমে যাচ্ছে। আমি আর পারছি না। বিদায় বাবা। বিদায় সবাইকে...।’
অত্যন্ত মর্মস্পর্শী এই ভিডিও পাঠানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই যুবকটির মৃত্যু হয়। আর তার পরই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা ঘিরে শুরু হয়েছে তোলপাড়। নেট দুনিয়ায় ঝড় উঠেছে নিন্দার। প্রশ্ন উঠেছে ওই যুবক যেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন, হায়দরাবাদের সেই গভর্নমেন্ট চেস্ট হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকা নিয়েও। যদিও রোগীর ভেন্টিলেটর খুলে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতাল সুপার মেহবুব খান। তাঁর দাবি, ‘ওই রোগী ভেন্টিলেটর সাপোর্টে ছিল। কিন্তু তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে, অক্সিজেন সরবরাহ যে হচ্ছে, তা তিনি বুঝতে পারেননি।’ আচমকা হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়াতেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার।
গত শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটলেও তা সামনে আসে রবিবার। হায়দরাবাদ সংলগ্ন জওহরনগরের বাসিন্দা ওই যুবকের বাবা জানান, ‘২৪ জুন ছেলের জ্বর আসে। একের পর এক হাসপাতালে ঘুরতে থাকি। কোথাও ভর্তি নিতে রাজি হয়নি। অন্তত দশটা হাসপাতাল ঘোরার পর শেষমেশ চেস্ট হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারি ছেলেকে। কিন্তু সেখানে যে ছেলেকে এভাবে কষ্ট পেয়ে চলে যেতে হবে, তা ভাবতেই পারিনি।’ তিনি বলেন, ‘ছেলেটা মৃত্যুর আগে একটু সাহায্য চেয়েছিল। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। ওর ভিডিওটা দেখার পর কষ্টে আমার বুক ভেঙে গিয়েছে। আমার ছেলের সঙ্গে যা হয়েছে, তা যেন আর কারও সঙ্গে না হয়।’ পুত্রশোকে কাতর বৃদ্ধের প্রশ্ন,‘‘অক্সিজেন পাওয়া থেকে আমার ছেলেকে কেন বঞ্চিত করা হয়েছিল?’
যুবকের মৃত্যুর পরদিন হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ফোন আসে তাঁর বাবার কাছে। সেখানেই ওই যুবকের সোয়াব পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দেওয়া হয়েছিল। ওই হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত তাঁর ছেলে।
ওই খবর শোনার পরই অন্য একটি চিন্তা গ্রাস করেছে পরিবারটিকে। মৃতের বাবা বলেছেন, ‘আমরা দেরিতে ছেলের করোনা রিপোর্ট পেয়েছি। পরিবারের সবাই ওর সংস্পর্শে এসেছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ আমাদের পরীক্ষা করার জন্য আসেনি। আমার ছেলের দু’টি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। কী করব বুঝে উঠতে পারছি না।’