বিদ্যার্থীদের কোনও বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় ভালো ফল করবে। বিবাহ প্রার্থীদের এখন ভালো সময়। ভাই ও বোনদের ... বিশদ
নাকাশিপাড়ার তেঁতুলবেড়িয়া গ্রামে ২০০৯ সালের ৭ জুন খুন হয় ১৩ বছরের এক বালিকা। পুলিস রিপোর্ট অনুযায়ী, ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ এক আত্মীয় তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। সেই ব্যক্তি পাশেই থাকেন। পরের দিন অর্থাৎ ৮ জুন ওই বালিকার মৃতদেহ মেলে কাছেই এক পাট খেতে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে পুলিস। চলে মামলা। ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ নিম্ন আদালত নাসির মল্লিক, দাদু শেখ, আতাবি মল্লিক ও মারিয়া বিবিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেয়। অনাদায়ে আরও দু’বছর সশ্রম কারাদণ্ডের কথাও বলা হয় সেই রায়ে। নিম্ন আদালতের রায়কে এরপর হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করে তারা।
মৃতদেহের গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো ছিল। তবে পোশাক অবিন্যস্ত ছিল না। এই প্রেক্ষাপটে দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এবং এফআরইআর-এর বক্তব্য পরস্পরবিরোধী। ঘটনার দিনক্ষণও সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। কেন ঘটনার প্রায় ৪৪ দিন পর এফআইআর-এর কপি আদালতে গেল, তার যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা নেই। ওই বালিকার বাবা ও মায়ের বয়ানেও সামঞ্জস্য নেই। তার কোনও ব্যাখ্যা পুলিস দেয়নি। ফলে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কেন মৃতার মা ও ভাই এই ঘটনার প্রায় ৮০ দিন পর ফৌজদারি আইন অনুযায়ী তাঁদের বয়ান নথিভুক্ত করেছিলেন, তার ব্যাখ্যাও পুলিস দিতে পারেনি। কেন তাঁরা এতদিন তথ্য গোপন করেছিলেন, তা অজানা। এমনকী যে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সেই বয়ান নথিভুক্ত হয়, তাঁকে দিয়ে তা প্রমাণসিদ্ধ করানো হয়নি। যা অভিযোগের প্রমাণ সম্পর্কে একরাশ সন্দেহ তৈরি করেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন থাকলেও তার যৌনাঙ্গে কোনও আঘাত বা কাটাছেঁড়ার দাগ নেই। মৃত্যু হয়েছিল ৭ জুন ভোর চারটে থেকে বিকেল চারটের মধ্যে। অথচ, পুলিসের রিপোর্ট বলছে, ওইদিন সন্ধ্যা সাতটার পর তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। যা তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সরকারপক্ষ অবশ্য সাজার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে দাবি করলেও ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, সেই রায় সন্দেহাতীত, আইনানুগ ও যুক্তিসম্মত নয়। তাই তা খারিজ করা হল।